অবসর জীবন কাটালেও শরীরচর্চায় যেন ভাঁটা না পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
রাতভর পার্টি, মদ্যপান, হুল্লোর করে সকালে জিমে যেতে অনীহা দেখা দেয় অনেকের। বেশির ভাগ মানুষেরই ধারণা একটু বৃষ্টি, প্রচণ্ড গরম কিংবা শীতকালে কম্বলের ওম ছেড়ে প্রতি দিন জিমে যেতে গড়িমসি করেন তাঁরাই। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা তেমনটা বলছে না। গবেষকরা বলছেন, প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে শরীরচর্চা না করা এবং অসুস্থ হয়ে পড়ার পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার পর পরই শরীরে নানা রকম রোগের উপদ্রব দেখা যায়।
অনেকেই মনে করেন, দীর্ঘ কর্মজীবনে থেকে অবসর নেওয়ার পর হয়তো নিয়মের বদল ঘটায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন অনেকে। তাই শারীরিক ভাবে নানা রকম জটিলতা আসতেই পারে। অনেকে মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েন। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, এ সময়ে টিভি দেখা, বই পড়ায় সময় ব্যয় করেন। শরীরচর্চা করা বা শরীরিক ভাবে সক্রিয় থাকার তাড়না অনেকটাই কমে যায়। ফলে ডায়াবিটিস, হার্টের রোগ, ক্যানসারের মতো রোগ জাঁকিয়ে বসতেই পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এর থেকে রেহাই মিলতে সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শরীরচর্চা করা জরুরি। একই মত ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’-এর।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষকের তত্ত্বাবধানে ‘ইউরোপীয়ান প্রসপেক্টিভ ইনভেসটিগেশন ইনটু ক্যানসার’ নামক সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব প্রায় দেড় হাজার অংশগ্রহণকারী। শরীরচর্চার পাশাপাশি, এই বিজ্ঞানীরা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর রেখেছিলেন। ছ’বছর অন্তর তাঁদের সকলের শারীরিক অবস্থা আলাদা করে পরীক্ষা করেন তাঁরা। শরীরচর্চা করেন এমন মানুষদের সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক ভাবে সক্রিয়দের মধ্যে তফাত ছিল জীবনযাত্রার মান। প্রতি দিন অন্তত পক্ষে ৩০ মিনিট শরীরচর্চার জন্য ব্যয় করেন যাঁরা, তাঁদের জীবনযাত্রার মান অনেকটাই উন্নত। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাসও তেমন দীর্ঘ নয়।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পাবলিক হেল্থ এবং প্রাইমারি কেয়ার’ বিভাগের গবেষক এবং চিকিৎসক ধরনি ইয়েরাকলভা বলেন, “বয়স অনুযায়ী নিজেকে সক্রিয় রাখতে পারলে এবং অপ্রয়োজনে বসে, শুয়ে সময় কাটানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারবেন বলেই আশা করা যায়।”