বই পড়লে কমবে মনের চাপ। ছবি: সংগৃহীত।
এই দুরন্ত গতিতে ধাবমান সভ্যতার সঙ্গে তাল রেখে ছুটতে গিয়ে বেড়ে চলেছে আমাদের উদ্বেগ। সম্পর্কের অস্থিরতা, কর্মক্ষেত্রে চাপ, একাকিত্বের উৎকণ্ঠা সব মিলিয়ে মানসিক সমস্যা আজকাল ঊর্ধ্বমুখী।
কিন্তু, এই অশান্তি – উদ্বেগকে বাগে আনতে মনোবিদরা সাহায্য নিচ্ছেন বই পড়ার অভ্যাসের, মনস্তত্বের ভাষায় যার নাম, “বিব্লিওথেরাপি”।
এই অস্থির সময়ে মনকে শান্ত করতে পারে বই। মানুষ নিজের আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা বই বেছে নিতে পারেন— বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, যে কোনও বিষয়ের বই পড়া যেতে পারে।
“আমার কাছে যাঁরা উদ্বেগের সমস্যা নিয়ে আসেন, আমি তাঁদের রীতিমতো ‘রিডিং থেরাপি’ পরামর্শ দিই। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিছুক্ষণ টানা বই পড়লে, ধ্যান অথবা যোগাভ্যাসের মতো ফল পাওয়া যায়,” বললেন মনোবিদ ও গবেষক মৌসুমি ময়রা।
"বিব্লিওথেরাপি" নিয়ে চলছে গবেষণা। ছবি: সংগৃহীত
কী ভাবে শুরু করবেন বই পড়ার অভ্যাস?
১) প্রথমদিকে মনোসংযোগ করতে একটু অসুবিধে হবে। দিনে এক পাতা পড়া দিয়ে শুরু করা যেতে পারে, কিন্তু প্রতিদিন নিয়ম করে পড়া জরুরি।
২) আগ্রহের বিষয় নির্বাচন করতে হবে, এমন বই পড়তে হবে, যার বিষয় সম্মন্ধে স্বাভাবিক আগ্রহ আছে।
৩) প্রতিদিন কতক্ষণ বই পড়া উচিত তা নির্ভর করে আপনার ব্যক্তিগত অভ্যাস এবং পড়ার গতির উপর। তবে, সাধারণত প্রতিদিন ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা বই পড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
৪) প্রতিদিন বই পড়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে, সেই সময়সূচী মেনে চলার চেষ্টা করা প্রয়োজন। প্রথমে প্রতিদিন ১৫ মিনিট বই পড়ার লক্ষ নির্ধারণ করে ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো যেতে পারে।
৫) একটি কোলাহলমুক্ত জায়গা খুঁজে বের করুন, যেখানে মনোযোগ দিয়ে বই পড়া সম্ভব।
৬) সবসময় একটি বই সঙ্গে রাখা যেতে পারে। অফিসে অল্পক্ষণ অবসর সময় পেলে, অথবা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন, বই পড়া যেতে পারে।
৭) বই পড়ার সময়ে স্মার্টফোনটি হাতের কাছে না রাখাই ভাল।
পড়ার অভ্যাস উপভোগ করতে শুরু করলে, নিয়মিত বই পড়ার জন্য সময় বের করা সহজ হবে।
মনে রাখবেন, নিয়মিত বই পড়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ধৈর্য্য। প্রতিদিন অল্প সময় করে পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।