শীতের মরসুমে সকালে উঠে খেয়ে নিন এক কাপ। তরতাজা লাগবে শরীর। ছবি: ফ্রিপিক।
এখনও জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েনি। তবে বাতাসে হিমেল পরশ। সেই সঙ্গে হাঁচি-কাশির দাপট। কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো শেষ হওয়ার পর থেকে জমিয়ে শীত পড়ার আগের সময়ে ঠান্ডা-গরমের তারতম্যে জ্বর, খুকখুকে কাশি, সর্দি লেগেই থাকে।
তা ছাড়া সকালে উঠলে হালকা ঠান্ডায় গরম কিছু পানীয় খেতে মন চায়। তবে চা-কফি নয়, ঘুম থেকে উঠে তিন উপকরণের মিশেলে বানিয়ে নিতে পারেন বিশেষ পানীয়। নিয়মিত তাতে চুমুক দিলেই সমাধান হবে হরেক শারীরিক সমস্যার।
কী সেই উপকরণ?
আদা, তুলসী এবং গুড়। ঘরোয়া এই টোটকা কিন্তু মরসুম বদলের দিনে হরেক রোগ ঠেকাতে পারে। মশলা হিসাবে ব্যবহৃত আদায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল উপাদান। প্রদাহ কমানোর গুণও রয়েছে এতে। ঠিক সে কারণেই, গলা খুসখুস হোক বা খুকখুকে কাশি, মুখে সামান্য আদা রাখলেই কিন্তু আরাম বোধ হয়। ২০২০ সালে ‘নিউট্রিয়েন্টস’ নামে জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, সাধারণ রোগব্যাধিতে আদা ভেষজ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। গুড়েরও নানা রকম গুণ রয়েছে। আর তুলসীর অবদান আয়ুর্বেদশাস্ত্রে অনস্বীকার্য।
হজমে সহায়ক: শীতের মরসুমে মাঝেমধ্যে হাবিজাবি, গুরুপাক খাওয়া হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে হজমে সাহায্য করতে পারে আদা এবং তুলসী। আদা হজমে সহায়ক উৎসেচকের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কায়রোর হিন্ডই নামে জার্নালে প্রকাশিত ২০১৭ সালের একটি গবেষণা বলছে, রক্তে শর্করা, রক্তচাপের মাত্রা স্বাভাবিক করতে সহায়ক তুলসী। এ ছাড়া গুড়ও হজমে সাহায্য করে।
আর কী উপকারিতা?
আদা খেলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে শীতের মরসুমে গা গরম থাকে। তুলসী শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল করতে সাহায্য করে। তুলসীপাতা মুখগহ্বরের জীবাণু তাড়াতে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টেও ভরপুর। আর সর্দিকাশি হলে মধু দিয়ে তুলসীপাতার রস খাওয়ার চল আজকের নয়। এ সব মা-ঠাকুরমাদের টোটকা। আর তার উপকারও মেলে হাতেনাতে। গুড়ে থাকা শর্করা শরীরে দ্রুত শক্তি জোগায়। পাশাপাশি এই উপকরণে তৈরি পানীয় শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ দূর করতেও সহায়ক।
কী ভাবে বানাবেন পানীয়টি?
উষ্ণ জলের মধ্যে থেঁতো করা আদা বা রস দিন। তার মধ্যে কয়েকটি তুলসীপাতাও থেঁতো করে দিন। দিয়ে দিন গুড়। আবার জলে এই উপকরণগুলি দিয়ে আঁচ কমিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ ফুটিয়ে ছেঁকেও খেতে পারেন। সকালে উঠে নিয়মিত এক কাপ ঈষদুষ্ণ পানীয়ে চুমুক দিলে শীতেও শরীর একদম ঝরঝরে থাকবে।