ঋতুস্রাবের ব্যথা বশে থাকবে কী করলে? ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি মাসেই এক সমস্যা। ঋতুস্রাব চলাকালীন পেটে অসহ্য যন্ত্রণা। বাড়িতে থাকলে সারা ক্ষণ পেটে গরম জলের সেঁক দিতে হয়। বাইরে বেরোতে গেলে ব্যথা কমানোর ওষুধ না খেলে চলে না। কখনও কখনও ব্যথার তীব্রতা এমন বেড়ে যায় যে, দিনে তিনটে ওষুধও খেয়ে ফেলেন। ওষুধের উপর এই নির্ভরশীলতা পরবর্তীতে বড়সড় কোনও বিপদ ডেকে আনতে পারে জানেন। কিন্তু এই কষ্টকে ঠেকিয়ে রাখতে আর কোনও উপায়ও থাকে না। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, ঋতুস্রাবের সময়ে জরায়ুর পেশির ক্রমাগত সঙ্কোচন-প্রসারণের ফলে পেটে ব্যথা হওয়া স্বাভবিক। তবে এই যন্ত্রণার তীব্রতা সকলের ক্ষেত্রে এক রকম হয় না। ঋতুস্রাবের ব্যথা হওয়ার পিছনে নানাবিধ কারণ থাকে। নির্দিষ্ট ওই দিনগুলোতে ব্যথা কমানোর ওষুধ খেয়ে নেওয়াই কিন্তু সুরাহা নয়। ঋতুচক্র স্বাভাবিক এবং ঋতুস্রাব চলাকালীন কষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখতে, মাসের ওই নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক দিন আগে থেকেই কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে কী কী করবেন?
১) প্রত্যেক মাসে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত জল খেলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয় না। ফলে পেশিতে টান ধরার সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে জলের বদলে কৃত্রিম চিনি দেওয়া, বোতলবন্দি ফলের রস কিংবা ‘এনার্জি ড্রিঙ্ক’ খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
২) এই সময়ে শরীর একটু আড়ষ্ট থাকে। কিন্তু ঋতুস্রাব স্বাভাবিক রাখতে সারা ক্ষণ শুয়ে-বসে থাকলে চলবে না। যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চার মধ্যে থাকেন, খুব অসুবিধে না হলে তাঁরা হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। অল্পবিস্তর হাঁটাহাটিও করা যেতে পারে।
৩) ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার দিন কয়েক আগে থেকেই অনেকের মনমেজাজ বিগড়ে থাকে। কারও আবার অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে। কিন্তু, এই অভ্যাস ঠিক নয়। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই সময়ে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার পাতে রাখতে হবে।
প্রত্যেক মাসে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
৪) এই সময়ে ঠান্ডা জলে স্নান নৈব নৈব চ! গায়ে ঠান্ডা জল ঠেকালে যন্ত্রণা দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। তবে ঋতুস্রাব চলাকালীন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও জরুরি। তাই গরম জলে স্নান করা যেতেই পারে।
৫) মানসিক চাপ বাড়তে পারে, এমন কাজ এই সময়ে না করাই ভাল। একান্তই যদি না পারেন, সে ক্ষেত্রে ধ্যান, প্রাণায়ামের শরণাপন্ন হতেই পারেন।