হাঁটার সময় কোন নিয়ম মানলে দ্রুত ওজন ঝরবে? ছবি: সংগৃহীত।
নিয়ম মেনে কড়া ডায়েট হোক বা জোরদার শরীরচর্চা— সময়ের অভাব আর নানা রকম কর্মব্যস্ততা এগুলির প্রতি ঝুঁকতে বাধা দেয় বেশির ভাগ মানুষকেই। সকলেই ভাবেন, তার চেয়ে হাঁটা ভাল। সহজ পদ্ধতি, প্রতি দিনের রোজনামচায় হাঁটার সময় বার করাও সহজ। জিম বা ফিটনেস সেন্টারে ছোটারও প্রয়োজন পড়ে না। আধ ঘণ্টা সময় বার করে নিলেই হল। তাই শরীরচর্চার সব উপায়ের মধ্যে হাঁটাকে আপন করে নেন অনেকেই।
হাঁটবেন তো বুঝলাম। কিন্তু কী ভাবে হাঁটবেন? মানে, ঠিক কী কী নিয়ম মেনে হাঁটলে তবেই শরীরচর্চার সমান উপকার পাবেন, ক্যালোরি ঝরবে, জানেন? অফিস, কেনাকাটা, বাজার-দোকান এই সময়গুলিতে গাড়িঘোড়ায় না উঠে একটু হাঁটলেই কি উপকার মিলবে? না কি ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরকে খাটিয়ে না হাঁটলে কোনও উপকারই নেই?
চিকিৎসকদের মতে, খুচরো হাঁটায় শরীরের অঙ্গপ্রতঙ্গ সচল থাকবে। তবে এতে খুব একটা মেদ ঝরে না। মেদ ঝরাতে গেলে কিছু নিয়ম মেনে হাঁটলেই মিলবে উপকার। নিয়মের সঙ্গে জেনে রাখা দরকার হাঁটার সময়ও। সপ্তাহে হাঁটতে হবে অন্তত ২৫০ মিনিট। প্রতি দিন গড় হিসেবে কম করে ৩৫ মিনিটের একটু বেশি। এটুকু হাঁটা শরীরের শুধু মেদ ঝরাবে তা-ই নয়, এই দীর্ঘ ক্ষণ হাঁটা হার্টের অসুখ ভাল করে। কোলেস্টেরল কমায়। কিন্তু শুধু সময় মানলেই হবে না। হাঁটাহাঁটির অভ্যাস না থাকলে প্রথম দিকে এক সেকেন্ডে একটা স্টেপ, এই অঙ্কেই হাঁটতে হবে। তার পর হাঁটার অভ্যাস হলে সেকেন্ডে দুটো স্টেপের হিসেবে হাঁটতে হবে। কী ভাবে বাড়বে হাঁটার গতি?
১. সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটলে চলবে না। সবার আগে হাঁটার ভঙ্গিতে বদল আনা জরুরি। কাঁধ সোজা করে হাঁটুন। এতে হাঁটার সময় ফুসফুস প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পাবে, শ্বাস নিতেও সুবিধা হবে। ফলে গতিও বাড়বে।
২. হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে আপনার হাত যেন সোজা না থাকে, সে দিকে নজর রাখুন। হাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাত দোলালে তবেই গতি বাড়বে। দৌড়ানোর সময় ‘রানারদের’ গতি কিন্তু এই কারণেই বেশি হয়। তা ছাড়া হাত নাড়াচাড়া করলে হাতের ব্যায়ামও করা হবে।
হাঁটার সময় কী ধরনের জুতো পরছেন, তার দিকে খেয়াল রাখুন। ছবি: শাটারস্টক।
৩. ছোট ছোট পা ফেলুন। হাঁটার সময় যত বড় পা ফেলবেন ততই বেশি সময় লাগবে। গতি তবেই বাড়বে, যখন আপনি ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে চলবেন। এতে ক্লান্তিও কম আসবে, অনেক ক্ষণ হাঁটাও যাবে। হাঁটার আগে ওয়ার্ম আপ করতে ভুললে চলবে না। এতে পেশির জোর বাড়বে আর গতিও বাড়বে।
৪. হাঁটার সময় কী ধরনের জুতো পরছেন, তার দিকে খেয়াল রাখুন। পায়ের আরাম হয়, এমন জুতো পরুন। অনেকটা রাস্তা হাঁটা যায়, এমন স্পোর্টস শু বা পাম্প শু পরতে পারলেও ভাল।
৫. দল বেঁধে হাঁটতে বেরোবেন না একই কারণে। অনেকেই এই সময় গল্পগাছা করতে করতে হাঁটেন। কথা না বললেও দলছুট হয়ে যাওয়ায় অনেকে হাঁটা শ্লথ করে ফেলেন। এই অভ্যাসগুলি কিন্তু মেদ কমানোর পথে বাধা হতে পারে। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতেও হাঁটবেন না। এতে হাঁটার গতি শ্লথ হয় ও হাঁপিয়ে গিয়ে বেশি দূর হাঁটা যায় না।
৬. হাঁটার সময় হাতে কিছু রাখবেন না। ফলে বলা বাহুল্য, বাজার যেতে-আসতে হাঁটা বা অফিস-ফেরতা হাঁটায় কোনও উপকার নেই। হাঁটার জন্য তুলনায় মসৃণ রাস্তা বা মসৃণ মাঠ বেছে নেওয়া ভাল। রাস্তা হলে ফাঁকা রাস্তা, যেখানে যান চলাচল তেমন হয় না, এমন রাস্তা হাঁটার পক্ষে দরকারি।