শরীরচর্চা নিয়ে কোন ভুল ধারণা বেশির ভাগ মানুষের থাকে?
জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর কসরত নিয়মিত ভাবেই করেন। ট্রেডমিলে দৌড়, সাইক্লিং, ওয়েট ট্রেনিং কিছুতেই খামতি নেই। যত বেশি ঘাম ঝরছে, ততই যেন মানসিক শান্তি। যাক! মেদ ঝরছে তা হলে! আমরা ভেবেই নিই ঘাম ঝরছে মানেই মেদ ঝরছে। অথচ ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাম ঝরা মানে মোটেও মেদ ঝরা নয়। কী হয় তা হলে?
শরীর ঘামে নিজেকে ঠান্ডা রাখার জন্য। শরীরচর্চার সময় বেশি ঘামছেন মানে আপনার শরীর গরম হয়ে উঠেছে, এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসার জন্য ঘাম বেরোচ্ছে। যাঁরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন ও সঠিক ডায়েট মেনে চলেন তাঁরা বেশি ঘামেন। এই ঘাম ঝরাকেই মেদ ঝরা ভেবে নেওয়া কিন্তু একেবারেই ভুল। কারণ, শরীরে সঞ্চিত ফ্যাটই ক্যালোরি ঝরানোর শক্তি জোগায়। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ঘাম ঝরা ও ক্যালোরি ঝরার প্রক্রিয়াই চলতে থাকে। যার ফলে ওজন কমে। ফ্যাট ঝরে না।
‘ফ্যাট লস’ কাকে বলে?
আমাদের শরীরে তিন ধরনের ফ্যাট থাকে। সাবকুটেনাস, যা ত্বকের নীচে থাকে, ভিসারাল, যা শরীরের ক্যাভিটিতে থাকে ও ইন্ট্রামাসকুলার, যা কম পরিমাণে আমাদের পেশিতে থাকে। মনে রাখতে হবে এই তিন ধরনের ফ্যাটের প্রতি যদি আমরা নজর না দিই, তা হলে তা শরীরে চেপে বসতে পারে। সবচেয়ে বেশি ফ্যাট ঝরানো সম্ভব ডায়েটের মাধ্যমে। শরীর মূলত কার্বহাইড্রেট ভেঙে থেকে রোজের কারকর্ম চালানোর জন্য শক্তি সংগ্রহ করে। তাই কার্বহাইড্রেটের মাত্রা কমিয়ে দিলে শরীর ফ্যাট থেকেই প্রয়োজনীয় শক্তি সংগ্রহ করে। আর তাতেই ধরে মেদ।
প্রতীকী ছবি
কেন ঘাম ঝরা মানেই মেদ ঝরা নয়?
অতিরিক্ত শরীরচর্চা করলে ঘাম ঝরে তবে তার মানেই মেদ ঝরা নয়। শরীর ফ্যাটে সঞ্চিত শক্তির সাহায্যে ক্যালোরি বার্ন হয়। কিন্তু তার পরেই যখন আমরা খাবার খাই, সেই ঘাটতি মিটে যায়। প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করলে মেদ ঝরাতে পারে। তাই যোগাভ্যাস বা পিলাটেস ব্যায়ামে ঘাম ঝরে না বলে তা মেদ ঝরাতে কার্যকর নয় এই ধারণা ভুল। এই ধরনের এক্সাসাইজ শরীরের ফিটনেস বাড়াতে সাহায্য করে। তাই জিমে গিয়ে বেশি ক্ষণ ওয়ার্কআউট করলে বা দৌড়লেই বেশি ফ্যাট ঝরাতে পারবেন এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। ডায়েট সঠিক রাখলে তবেই মেদ ঝরবে।