প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহিত
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতার জন্য ডেল্টা প্রজাতিকেই দায়ী মনে করছেন অনেকেই। তবে এই প্রজাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বের ৯৬টি দেশে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু জানিয়েছে ভবিষ্যতে ডেল্টাই সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতি হয়ে দাঁড়াবে।
কোনও রকম কো-মর্বি়ডিটি থাকলে করোনার প্রভাব গুরুতর হতে পারে তা আমরা গত বছর থেকেই শুনে আসছি। কিন্তু ডেল্টা প্রজাতির সংক্রমণ থেকে কাদের ভয় বেশি? এই সংক্রমণে কাদের পরিস্থিতি বেশি গুরুতর হয়ে যেতে পারে?
জুন মাসে এই প্রজাতি নিয়ে এক দীর্ঘ গবেষণা চালায় স্কটল্যান্ডের এক দল গবেষক। তাঁরা দেখেছেন আলফা প্রজাতির তুলনায় ডেল্টার সংক্রমণ হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি অনেক বেশি বাড়িয়ে দিচ্ছে। ল্যানসেট প্রত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণা অনুযায়ী যাঁদের কোনও রকম কোমর্বিডিটি রয়েছে, বা যাঁদের বয়স বেশি, তাঁদের ডেল্টা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাকিদের তুলনায় বেশি। ‘পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড’ জানিয়েছে, যে কমবয়সিদের টিকাকরণ হয়নি, তাঁদেরও যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে।
ওয়াল্ড হেল্থ অর্গ্যানাইজেশন বা হু’এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘এনসিডি’ বা যে রোগগুলি সংক্রামক নয়, সেগুলির একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে কোনওটা কোনও মানুষের আগে থেকেই হয়ে থাকলে, তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারেন। যেমন—
১। ক্যানসার
২। হাঁপানি বা অন্য কোনও শ্বাসযন্ত্রের দীর্ঘকালীন রোগ
৩। হৃদযন্ত্রের রোগ (হাইপার টেনশন, যাঁদের একবার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে বা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে)
৪। ডায়াবেটিস
প্রতীকী ছবি।
এই ধরনের রোগ সাধারণত আমাদের জীবনধারার উপরেও নির্ভর করে। যেমন অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং শরীরচর্চা না করা ওবেসিটির মতো রোগ ডেকে আনতে পারে। সেখান থেকেই শুরু হয় ডায়াবেসিটি বা হৃদরোগের মতো সমস্যা।
যাঁরা অত্যাধিক ধূমপান করেন, তাঁদের ফুসফুস কমজোরি হওয়ার সম্ভবনা বেশি। তাই কোভিডের প্রভাবও চট করে সঙ্কটজনক হয়ে যেতে পারে। এমনিতেই বিড়ি বা সিগারেট খাওয়ার সময়ে বারবার মুখে হাত যায়, তাই সংক্রমণের সম্ভবনাও অনেক বেশি।
হাঁপানি বা উচ্চ রক্তচাপের মতো কোনও রোগ থাকলেই কি চিন্তার কারণ? কিছুটা চিন্তার হলেও ভয় পাবেন না। সচেতন থাকলে আপনি সুস্থ থাকবেন। কী করণীয়, জেনে নিন।
১। নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধগুলি মাস দুয়েকের জন্য বাড়িতে কিনে রাখুন।
২। নিয়ম করে ওষুধ খান। ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখুন।
৩। যাঁদের জ্বর-সর্দি-কাশি হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
৪। বারবার সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুতে থাকুন।
৫। স্বাস্থ্যকর খাবার এবং বেশি করে জল খান। ফল-শাক-সব্জি খাবারে রাখুন।
৬। মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন।
৭। রোজ নিয়ম করে শরীরচর্চা করুন।
৮। ধূমপান ছেড়ে দিন। মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।