সারা দিন ক্যালোরি মেপে খাওয়ার অভ্যাস আদতে ভাল নয়। ছবি: সংগৃহীত।
খাবার খাওয়ার পর আঁচানো হল কি না হল, অমনি ফোন হাতে বসে পড়লেন। সমাজমাধ্যম নয়, ফোনে খোলা রয়েছে ক্যালকুলেটর। জটিল অঙ্কের হিসাব চলছে সেখানে। তবে এ যে সে ক্যালকুলেটর নয়। পুষ্টিবিজ্ঞানের ভাষায় এই যন্ত্রগণককে বলা হয় ‘ক্যালোরি ক্যালকুলেটর’।
কথায় কথায় ক্যালোরি মাপার ওই গণক খুলছেন! তার পর কখনও ৪টে ফুচকা, কখনও এক মুঠো চিনেবাদাম, কখনও এক টুকরো ডার্ক চকোলেট, কখনও আবার এক কাপ লাতের ক্যালোরির পরিমাণ হিসাব করে নিচ্ছেন। ক্যালোরি হিসাব করার অভ্যাস এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, পাশে বসে থাকা সহকর্মীও কিছু খেতে গেলে আঁতকে উঠছেন। চিকিৎসকেরা বলছেন, ক্যালোরি মেপে খাবার খাওয়ার অভ্যাস ভাল। তবে তা যদি বদভ্যাসে পরিণত হয়, তা হলে সমূহ বিপদ।
একটা সময় পর্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ কাপ বা বাটি মেপে খাবার খেতেন। কিন্তু এখন এ বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। তাঁরা বুঝতে শিখেছেন, শুধু বাটি মেপে খেলে হবে না। কোন খাবারে কতটা ক্যালোরি আছে, তা-ও জানতে হবে। সারা দিনে কত ক্যালোরি প্রয়োজন আর কতটা খাওয়া হল সেই হিসাবটা বার করে ফেলতে পারলে ওজন ঝরানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়।
দিল্লির সিকে বিড়লা হাসপাতালের পুষ্টিবিদ দীপালি শর্মা বলেন, “সারা দিন কে কী খেলেন, তা থেকে কতটা ক্যালোরি শরীরে পৌঁছল সেই হিসাব রাখাও সহজ হয়। সেই অনুযায়ী ঠিক করা যেতে পারে, কতটা ক্যালোরি পোড়ানো প্রয়োজন। ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এই হিসাব ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।” তবে শরীর অনুযায়ী প্রত্যেকের চাহিদা আলাদা। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া কোনও কিছুই করা উচিত নয়। তাতে শারীরিক এবং মানসিক জটিলতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নিজে নিজে ক্যালোরি মেপে খেতে গিয়ে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ কম পৌঁছয়। ফলে উদ্বেগ, মানসিক চাপ বাড়তে পারে। শুধু তা-ই নয়, বিপাকহারের হেরফেরেও নানা রকম সমস্যা হতে পারে।