গর্ভপাতের পর মহিলারা একাকিত্ব, অবিশ্বাস, রাগ, অপরাধবোধ, দুঃখ, অবসাদ, মনসংযোগের অভাবের মতো নানা রকম সমস্যায় ভোগেন। ছবি: সংগৃহীত
জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতির মধ্যে একটি হল মাতৃত্বের। আনন্দ, পরিপূর্ণতায় এই সময়টি জীবনের সেরা সময় হয়ে ওঠে। তবে এই সুখের অনুভূতির মধ্যেই ঘটতে পারে অঘটন। অজান্তেই হতে পারে গর্ভপাত। গর্ভপাতের পর মহিলারা একাকিত্ব, অবিশ্বাস, রাগ, অপরাধবোধ, দুঃখ, অবসাদ, মনসংযোগের অভাবের মতো নানা রকম সমস্যায় ভোগেন। মানসিক দুর্বলতা ডেকে আনে শারীরিক অসুস্থতাও।
গর্ভপাত নিয়ে নানা প্রকার ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, যা সকলের জানা দরকার।
১) গর্ভপাত সন্তান হারানোর মতো কষ্টদায়ক নয়: যে দিন থেকে বাবা-মায়েরা জানতে পারেন, তাঁদের সন্তান এই পৃথিবীতে আসতে চলেছে, সে দিন থেকেই সন্তানের সঙ্গে তাঁদের মানসিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। গর্ভপাতের পর মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া খুবই স্বাভাবিক। আত্মীয় পরিজনেরা অনেকেই এই বিষয়টি হালকা ভাবে নেন। বিশেষ করে যখন প্রাথমিক পর্যায় গর্ভপাত ঘটে।
২) মানসিক চাপ গর্ভপাতের অন্যতম কারণ: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেকেই অন্ত্যষ্টিক্রিয়া, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান এড়িয়ে যান। ভাবেন এতে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। অনেকের ধারণা কর্মক্ষেত্রে অত্যধিক চাপ, পারিবারিক সমস্যার কারণে সাময়িক মানসিক চাপ হয়, যার ফলে গর্ভপাত হতে পারে। এমনটা ধারণা ঠিক নয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে যে কোনও কারণে যদি আপনি মানসিক অবসাদে ভোগেন, সে ক্ষেত্রে আপনার গর্ভপাত হতে পারে।
প্রতীকী ছবি
৩) অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যৌনসঙ্গমে গর্ভপাত হয়:
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যৌনসঙ্গম করলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে— কোনও গবেষণা এ রকম কোনও তথ্য উঠে আসেনি। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কোন পর্যায় পর্যন্ত যৌনসঙ্গম করা আপনার জন্য নিরাপদ, তা জানতে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে পারেন।
৪) গর্ভনিরোধক ওষুধ খেলে গর্ভপাত হতে পারে: অনেকেই এমন ধারণা রাখেন যে, দীর্ঘদিন ধরে গর্ভনিরোধক ওষুধ খেয়ে থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি। এই ধারণা মোটেই সঠিক নয়। তবে অন্তঃসত্তা অবস্থার প্রাথমিক পর্যায় এই প্রকার ওষুধের কারণে গর্ভপাত হতে পারে।
৫) গর্ভপাতের এক বছরের মধ্যে আবার মা হওয়া যায় না: হু-র নির্দেশিকা অনুযায়ী গর্ভপাত হওয়ার মাস ছয়েক পর চেষ্টা করুন সন্তান ধারণের। তবে বেশি দেরি করবেন না। বেশির ভাগ চিকিত্সকদের মতে, বেশি দেরি করলে সমস্যা আরও জটিল হয়। অনেক চিকিত্সকদের মতে, যে সব মহিলা গর্ভপাতের দু’বছর পর সন্তান ধারণ করেছেন, তাঁদের একটপিক প্রেগন্যান্সি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। অনেক সময়ে আবার কম ওজনের প্রি-ম্যাচিউর শিশু জন্মায়।