ব্রঙ্কিয়োলাইটিস কেন হয়, কী কী লক্ষণ দেখা দেয় শিশুর। ছবি: ফ্রিপিক।
অনেক শিশুরই ঠান্ডা লাগার ধাত থাকে। কিন্তু যদি দেখেন, সর্দিকাশি কমছেই না, তা হলে সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে, জন্মের প্রথম ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে শিশুর যদি ঘন ঘন সর্দিজ্বর, শ্বাসের সমস্যা হতে থাকে, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। ভাইরাসের সংক্রমণে শিশুদের শ্বাসনালি, ফুসফুসে এক রকম সংক্রমণ হয়, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘ব্রঙ্কিয়োলাইটিস’। রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি)-এর সংক্রমণে এই রোগ হতে পারে।
কোন বয়সের শিশুরা বেশি ভোগে? কী কী কারণে এই রোগ হতে পারে?
জন্মের এক মাস পর থেকেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হতে দেখা যায়।
সবচেয়ে বেশি ভোগে ৩ থেকে ৬ মাসের শিশুরা।
৫ বছর বয়স অবধি এই ভাইরাস জ্বালাতন করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি খুব দুর্বল হলে বা জন্মের পরে হার্ট বা ফুসফুসের কোনও ত্রুটি থাকলে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রাণঘাতীও হতে পারে।
সময়ের আগেই জন্মেছে যে শিশু, অর্থাৎ ‘প্রিম্যাচিয়োর বেবি’দের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।
গর্ভাবস্থায় যে মায়েরা অত্যধিক নেশা করেন, ধূমপান করেন, তাঁদের সন্তানদের ব্রঙ্কিয়োলাইটিস বেশি হয়। শিশুর সামনে যদি মা বা বাবা বেশি ধূমপান করেন, তা হলেও সেই শিশুর ব্রঙ্কিয়োলাইটিস হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
পরিবেশের উপরেও নির্ভর করে এই রোগ। বেশি ধুলো-ধোঁয়া, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ হলে শিশু খুব দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে।
রোগের প্রাথমিক লক্ষণ সাধারণ সর্দিকাশির মতো। বাবা-মায়েরা খেয়াল করবেন, শিশুর সর্দিকাশি কমছেই না। ক্রমাগত নাক দিয়ে জল পড়ছে। হলুদ কফ উঠছে। ত্রমশ পেটখারাপ, ডায়েরিয়ার লক্ষণ দেখা দেবে। কিছু খেলেই বমি হয়ে যাবে শিশুর। শ্বাস নেওয়ার সময়ে বুক ধড়ফড় করবে, প্রস্রাব কমে যেতে পারে। হাঁপানির লক্ষণও দেখা দিতে পারে শিশুর।
বাবা-মায়েরা কী করবেন?
ব্রঙ্কিয়োলাইটিসের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা হয়। সব শিশুর লক্ষণ এক রকম না-ও হতে পারে। যদি দেখেন, শিশুর শ্বাসকষ্ট বাড়ছে, তা হলে প্রয়োজন মতো নেবুলাইজ়ার দেওয়া যেতে পারে। হাঁপানির টান উঠলে বা শিশু নাক দিয়ে শ্বাস নিতে না পারলে, তখন অক্সিজেন দিতে হবে। ব্রঙ্কিয়োলাইটিসের লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। বাড়িতে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। হাত ধুয়ে তবেই শিশুর কাছে যান। শিশুর সামনে ধূমপান একেবারেই চলবে না।