হঠাৎ ওজম কমে যাওয়া বিপদের। ছবি: সংগৃহীত।
সুস্থ থাকতে ওজন বশে রাখতে হয়। খুব বেশি ওজন বা স্থূলত্ব অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই জিমে যান, শরীরচর্চা করেন। খাবারও বুঝে খান। আবার, তেমন কোনও কায়িক পরিশ্রম না করলেও অনেকেরই অস্বাভাবিক গতিতে ওজন কমতে থাকে। অনিচ্ছাকৃত এই ওজন হ্রাস কিন্তু শরীরের জন্য ভাল না-ও হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, শরীরচর্চা না করে, স্বাভাবিক খাবার খেয়ে মাস ছয়েকের মধ্যে যদি ৫-৬ কেজি ওজন কমে যায়, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে, শরীরে অভ্যন্তরীণ কোনও সমস্যা রয়েছে।
কী কী কারণে এই ভাবে ওজন কমে যেতে পারে?
১) ডায়াবিটিস:
রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়লে কমতে পারে ওজন। এই কারণে ডায়াবেটিকদের মধ্যে ওজন কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ডায়াবিটিস মানে রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে যাওয়া। ইনসুলিনের অভাবে শরীরে কোষগুলি নিজেদের সচল ও শক্তিশালী রাখতে পেশি ও চর্বির সাহায্য নেয়। এর ফলে শরীরের সামগ্রিক ওজন ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২) হাইপারথাইরয়েডিজ়ম:
পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন না থাকলে যেমন সমস্যা হতে পারে, তেমন থাইরয়েড গ্রন্থি অতিসক্রিয় হয়ে উঠলেও মুশকিল। যদি তেমনটা হয়, তা হলে বিপাকহার অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়ে শরীরের সমস্ত ক্যালোরি খরচ হয়ে যেতে পারে। শারীরিক কসরত না করেও হুড়মুড় করে ওজন কমতে শুরু করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই সমস্যাকেই হাইপারথাইরয়েডিজ়ম বলা হয়।
৩) মানসিক চাপ:
ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বা কাজের প্রবল চাপ থেকে উদ্বেগ ও মানসিক সমস্যা পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্ট্রেস হরমোন বিপাকহারের উপর প্রভাব ফেলে। বিপাকক্রিয়া আবার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বিপাকক্রিয়ার অস্বাভাবিকতায় বাড়তে পারে ওজন।
ওজন কমার সঙ্গে ডিমেনশিয়ার একটি সম্পর্ক রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
৪) ডিমেনশিয়া:
ওজন কমার সঙ্গে ডিমেনশিয়ার একটি সম্পর্ক রয়েছে। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়া মানেই স্মৃতিশক্তি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। দুর্বল স্মৃতিশক্তির প্রভাব পড়ে রোজের খাওয়াদাওয়ার উপরেও। সঠিক সময়ে ও পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়ার কথা সব সময়ে মনে থাকে না। দীর্ঘ দিন ধরে এমন অনিয়ম চললে স্বাভাবিক ভাবে ওজন কমতে শুরু করবে। এ ছাড়াও ডিমেনশিয়ার ওষুধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। সেই ওষুধের প্রভাবে শরীরের ওজন ক্রমশ কমতে থাকে।
৫) ক্যানসার:
অস্বাভাবিক হারে ওজন ঝরে যাওয়া কিন্তু ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস এবং পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হলে ওজনের হেরফের নজরে আসে। ম্যালিগন্যান্ট বা ক্ষতিকর টিউমর শরীরের বিপাকহারকেও কব্জা করে ফেলে। হরমোনের উৎপাদন এবং ক্ষরণেও হেরফের ঘটায়। তাই ক্যানসারে আক্রান্ত হলে ওজন হ্রাস পায়।