মেদ ঝমছে পেটে, এ দিকে শরীরচর্চায় আলস্য, ওজন কমবে কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
এক দিকে মিষ্টি থেকে ভাজাভুজির স্বাদ এড়ানো অসম্ভব, অন্য দিকে শরীরচর্চার নামেই গায়ে জ্বর। আর এই দুয়ের ফলে কি ওজন বাড়ছে? দামোদর শেঠের মতো না হোক, ক্রমশই কি স্ফীত হচ্ছে মধ্যপ্রদেশ?
তা হলে কিন্তু সাবধান। পেটে মেদ জমলে, তা শুধু সৌন্দর্যের পথে বাধা হয় না, অতিরিক্ত ওজন ডেকে আনতে পারে নানা রোগ। কিন্তু ওজন কমবে কী ভাবে? শরীরচর্চার প্রসঙ্গ উঠলেই অনেকের মনে হয়, আজ থাক, কাল হবে। এই কাল কাল করেই সময় গড়িয়ে যায়। কেউ আবার বলবেন, বেসরকারি চাকরির চাপে দম আটকে মরার দশা। ফুরসত কই? তা হলে কি ওজন কমবে না? উপায় লুকিয়ে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায়।
খাওয়াদাওয়া: ব্যায়াম, জিমে যাওয়ার সময় না হলে নজর দিতেই হবে খাওয়ায়। পাতে রাখতে হবে প্রোটিন। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার সবই জরুরি। তবে তার মাপ জানা দরকার। ওজন ঝরাতে গেলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তালিকায় রাখা জরুরি।
ফাইবার: খাদ্যতালিকায় থাকা দরকার ফাইবার। এই উপাদান শুধু হজমে সহায়ক নয়, পেট পরিষ্কারেও এটি সাহায্য করে। ফাইবার-যুক্ত খাবার পেট ভরিয়ে রাখে অনেক ক্ষণ। সকালের খাবারে উপযুক্ত প্রোটিন এবং ফাইবার থাকলে পেট অনেক ক্ষণ ভরা থাকে। আর ভরা পেটে উল্টোপাল্টা খাওয়ার ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।
চিনি, পানীয়: কেক, পেস্ট্রি, কার্বনযুক্ত পানীয় খেতে যতই ভাল লাগুক না কেন, তা কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। কেক খেতে হলে, স্বাস্থ্যকর উপায়ে তৈরি কেক বেছে নিতে পারেন। কার্বনযুক্ত পানীয়ের বদলে লস্যি, লেবুর জল খাওয়া যায়। তবে যে ভাবেই হোক— চা, কফি এবং নিয়মিত পদ থেকে চিনি বাদ দিতেই হবে।
সাদা খাবার: সাদা চিনি, ময়দা জীবন থেকে বাদ দেন স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজন। তালিকায় রয়েছেন শাহরুখ খানের মতো তারকাও। ময়দায় রয়েছে ‘রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট’। এই ধরনের খাবার ওজন বৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করে। ময়দার বদলে গমের আটা, সয়া আটা, মাল্টি গ্রেন আটা বেছে নিতে পারেন। সাদা পাউরুটি সরিয়ে পাতে রাখতে পারেন ব্রাউন ব্রেড, মাল্টিগ্রেন ব্রেড।
খাবারের মাপ: ওজন ঝরাতে হলে শরীরে ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি করা দরকার। বয়স, উচ্চতা অনুযায়ী ওজন কত, কত দিনে কত কেজি কমাতে চান তা বুঝে দৈনন্দিন ক্যালোরির মাপ নির্ধারণ করতে হবে। তবে ক্যালোরি মাপতে গিয়ে অতিরিক্ত প্রোটিন খাবার কার্বোহাইড্রেট বেশি খেলে চলবে না। শরীরের জন্য কোনটা কতটা প্রয়োজন, তা জেনে এবং বুঝে খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে।
ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুমও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। ঘুম ভাল হলে শারীবৃত্তীয় কাজকর্ম ঠিকঠাক হয়। হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। শরীর তরতাজা থাকে। দিনের পর দিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তার প্রভাব পড়তে পারে ওজন এবং স্বাস্থ্যে।
জল খাওয়া: বিপাকক্রিয়ার ফলে শরীরে জমা দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে জল। শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্যও জল প্রয়োজন। তাই পর্যাপ্ত জল খাওয়া দরকার। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষ ২ থেকে ৩ লিটার জল খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত জল খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।