কোন ঘরোয়া দাওয়াইয়ে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব?
পায়ের আঙুলে ব্যথা, গোড়ালিতে ব্যথা কিংবা অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে অসহ্যকর যন্ত্রণা— এই ধরনের শারীরিক অসুস্থতা রোজকার জীবনে লেগেই থাকে। কর্মব্যস্ত জীবন এবং পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস যে সব অসুখকে আরও বড় আকারে ডেকে আনছে তার মধ্যে অন্যতম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। এই রোগের কারণে কেবল শরীরে যন্ত্রণা বাড়ে তা নয়, কিডনির সমস্যা ও অবিসিটির মতো সমস্যাও শরীরে বাসা বাঁধে ইউরিক অ্যাসিডের হাত ধরে।
মূলত হাড় ও কিডনির উপরেই ইউরিক অ্যাসিড বেশি প্রভাব ফেলে। খাওয়াদাওয়ায় একটু হ্রাস টানলেই এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তবে ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকেরই তেমন কোনও ধারণা নেই। সে ক্ষেত্রে এই কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর রাখতেই হবে।
১) শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ কিডনি চায় শরীরে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডকে বার করে দিতে। এ ছাড়াও শরীরে ইউরিক অ্যাসিডে মাত্রা বেড়ে গেলে বেশি প্রস্রাব থেকে বেরতে পারে রক্তও। হতে পারে ইউটিআই বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন।
২) ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়লে প্রস্রাবের সময় অনেকেরই জ্বালা করে। এই জ্বালা এতটা বেশি হয় যে, মানুষটি প্রস্রাব আসলেও অনেক সময় করতে চান না। এর থেকে কিডনিতে পাথরও হতে পারে। শরীরে এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে হলুদ রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। হলুদে থাকা কারমিউমিন নামক বিশেষ যৌগের প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। রোজের ডায়েটে তাই হলুদ রাখলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
প্রতীকী ছবি।
কী ভাবে খেলে উপকার পাবেন বেশি?
পুষ্টিবিদদের মতে, এক টেবিল চামচ নারকেল তেলের মধ্যে হলুদ গুড়ো মিশিয়ে সামান্য গরম করে নিয়ে তাতে অল্প গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে। তার পর সেই মিশ্রণ গরম জলে মিশিয়ে নিয়মিত পান করলেই নাকি জব্দ হবে এই রোগ। শরীরে ব্যথা-বেদনা দূর করতেও এই পানীয় সাহায্য করবে।
ইউরিক অ্যাসিডেরর মাত্রা বাড়লে কেমন ডায়েট মেনে চলবেন?
ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে কফি, কোল্ড ড্রিংকস, মদ খাওয়া চলবে না। করা যাবে না ধূমপানও। পালংশাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়ো, ঢ্যাঁড়স, টমেটোর মতো সব্জি না খাওয়াই ভাল। পাশাপাশি, অতিরিক্ত প্রোটিন যেমন— খাসির মাংস, সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে চলুন। বিভিন্ন রকম ডাল খাওয়াও ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য ভাল নয়। লেবু, মোসাম্বি, কমলালেবুর মতো টকজাতীয় ফল, চেরি, কাজু, মাখানা রোজের ডায়েটে রাখলে এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।