ছবি: প্রতীকী
থাইরয়েডের সমস্যা এখন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের মতোই দেখা যায় ঘরে ঘরে। গলা এবং ঘাড়ের সংযোগস্থলে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নির্গত এই হরমোনটি শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজেই সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। কিছু ক্ষেত্রে থাইরয়েড সন্তানধরাণের পথেও বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। শুধু তা-ই নয়, থাইরয়েড হরমোনটির অতিরিক্ত ক্ষরণ বা কম ক্ষরণের প্রভাব পড়ে ঋতুবন্ধের উপর। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫১ বছরের মধ্যে মহিলাদের ঋতুবন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কারও ৪০-এই ঋতুবন্ধ হয়ে যেতে পারে।
থাইরয়েড গ্রন্থির অতি সক্রিয়তা বা কম সক্রিয়তার কারণে কি কোনও ভাবে ঋতুবন্ধ হয়ে যেতে পারে? চিকিৎসক মানস কুন্ডু আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “সাধারণত থাইরক্সিন হরমোন ক্ষরণের পরিমাণ কমে যাওয়াকে আমরা ‘হাইপোথাইরয়েডিজ়ম’ বলে থাকি। কিন্তু শুধু এই হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলেই ঋতুবন্ধের সময় এগিয়ে আসতে পারে না। এ ক্ষেত্রে দায়ী হল ‘অটো ইমিউন থাইরয়েডাইটিস’। যার ফলে মহিলাদের ‘আর্লি মেনোপজ়’ অর্থাৎ, সময়ের আগেই ঋতুবন্ধ হয়ে যেতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, এ ধরনের থাইরয়েড ডিম্বাশয়ের কোষগুলিকেও নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা সময়ের আগেই বন্ধ হয়ে যায়।”
অটোইমিউন থাইরয়েডাইটিস কী?
থাইরক্সিন হরমোনের মাত্রায় হেরফের হলে সন্তানধারণে সমস্যা দেখা যায়। তবে তার সঙ্গে কিন্তু ঋতুবন্ধের সরাসরি কোনও যোগ নেই। চিকিৎসক জানালেন, “থাইরয়েড শরীরের একটি অংশ হওয়া সত্ত্বেও এই হরমোনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য শরীর কিছু ‘অ্যান্টিবডি’ তৈরি করে। এই ‘অ্যান্টিবডি’ শরীরে বেশ কিছু থাইরয়েড কোষ নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে ‘থাইরক্সিন’ হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। সকলের এই রোগ হয় না। তবে কার এই অটো ইমিউন রোগটি হবে, তা আগে থেকে বলা মুশকিল।”
ছবি: প্রতীকী
৩৫ বছরের পর থেকে মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রাও কমতে থাকে। সুতরাং যদি এই অটোইমিউন রোগটি হয়, তা হলে ঋতুবন্ধ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এই রোগ সঠিক সময়ে ধরা পড়লে বা ঋতুস্রাবের পরিমাণ কিংবা চক্রে কোনও রকম অস্বাভিকতা দেখে সচেতন হলে, পরিস্থিতি কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলেই মত চিকিৎসকের।