হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে অভিনেতা বিকাশ শেঠির মৃত্যু হয়েছে ৮ সেপ্টেম্বর। ছবি : সংগৃহীত।
ঘুমের মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪৮ বছরের অভিনেতা বিকাশ শেঠির। তাঁর স্ত্রী জানিয়েছেন, বিকাশ নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। কিন্তু মৃত্যুর দিন কয়েক আগে হঠাৎই জ্বর, বদহজম, পেটখারাপের মতো অসুস্থতায় ভুগতে শুরু করেছিলেন। ব্যাপারগুলি এতটাই সাধারণ যে, প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শও নিতে চাননি বিকাশ। স্ত্রীর অনুরোধে শেষ পর্যন্ত রাজি হন। কিন্তু চিকিৎসকের যে দিন সকালে আসার কথা, তার আগের রাতেই ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয় বিকাশের। পরে জানা যায়, হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার। অথচ এ ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা বা ‘ব্ল্যাক আউট’ হওয়ার মতো যে সাধারণ উপসর্গগুলি দেখা যায়, তার কোনওটিই তাঁর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি!
বুকে ব্যথা না হলেও কি হার্ট অ্যাটাক হতে পারে?
বিকাশের মৃত্যু প্রশ্ন তুলেছে চল্লিশোর্ধ্ব অনেকের মনেই। তাঁরা অনেকেই জানতে চাইছেন, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ ছাড়াও কি হঠাৎ এমন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে? বা বদহজম, পেটখারাপের মতো তথাকথিত ‘সাধারণ রোগ’ হলেও কি হৃদ্রোগ হতে পারে বলে সতর্ক হতে হবে? একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক সুধীর কুমার বলছেন, ‘‘বুকে ব্যথাই হৃদ্রোগের প্রধান উপসর্গ। কিন্তু ৮-৩৩ শতাংশ হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা না-ও হতে পারে।’’ চিকিৎসক কুমার এ-ও জানাচ্ছেন যে, যখন হৃৎপিণ্ডে রক্তের প্রবাহ হঠাৎ বাধা পায়, তখন গোটা শরীরে একটা চাপ তৈরি হয়। তাতে হজমে সমস্যা হতে পারে। ডায়েরিয়া বা বমিও হতে পারে।
কাদের ক্ষেত্রে এমন হওয়ার আশঙ্কা বেশি?
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, কিছু কিছু রোগীর শরীরে যে হৃদ্রোগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেটা বুঝতেই সময় লেগে যায়। অনেকেই নিয়মিত পরীক্ষা করান না। ফলে যে বিষয়গুলি হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যেমন— কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন সীমা ছাড়াচ্ছে কি না, তা-ও বোঝা যায় না। এ সব ক্ষেত্রে যদি রোগী পুরুষ হন, মধ্যবয়সি হন এবং যদি তাঁর নিয়মিত ধূমপানের অভ্যাস থাকে, তবে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
কী ভাবে এড়াবেন?
নিয়মিত চেক আপে থাকলে হার্ট অ্যাটাকের মতো অসুখ এড়ানো যায়। ইসিজি বা কিছু রক্ত পরীক্ষা থেকে যদি কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের মতো বিষয়গুলিকে নিয়মিত নজরে রাখা যায়, তা হলেও হার্ট অ্যাটাককে দূরে রাখা যেতে পারে।