দুধ কি কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে? ছবি: শাটারস্টক
খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও শরীরচর্চার প্রতি অনীহা— এই সব কারণেই ঘরে ঘরে এখন কোলেস্টেরলের রোগী বাড়ছে। এক বার এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলেই খাওয়াদাওয়ায় এসে যায় হাজার রকমের বিধি-নিষেধ। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুয়ায়ী, কোলেস্টেরলের সমস্যা বাড়লে স্নেহ পদার্থযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল, না হলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই রোজের খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দুধ খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে দুধের কোনও ভূমিকা নেই।
শরীরে খারাপ ও ভাল দুই প্রকারের কোলেস্টেরল থাকে। খারাপ কোলেস্টরলকে বলা হয় ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ (এলডিএল) এবং ভাল কোলেস্টেরলকে বলা হয় ‘হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ (এইচডিএল)। এটি খারাপ কোলেস্টেরলকে শোষণ করে এবং শরীর সুস্থ রাখে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়। তাই শরীরে এইচডিএল-এর সঠিক মাত্রা বজায় রাখা জরুরি। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ওবেসিটি’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে প্রকাশিত যে, দুধ পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে না। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছ যে, দুধ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সমীক্ষা বলছে, যাঁরা নিয়মিত দুধ খান, তাঁদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ হ্রাস পায়। অনেকেই আছেন, যাঁরা ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় দুধ এড়িয়ে চলেন, তবে গবেষণা বলছে পরিমিত মাত্রায় দুধ খেলে ওজন বাড়ে না। তেমনই দুধ দিয়ে তৈরি ঘি খেলেও আপনার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে না, তবে অবশ্য দিনে এক থেকে দু’চামচের বেশি ঘি না খাওয়াই ভাল। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের জন্য ভাল। দুধে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরের ক্ষতি করে না।
সমীক্ষা বলছে, যাঁরা নিয়মিত দুধ খান, তাঁদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৪ শতাংশ হ্রাস পায়। ছবি: সংগৃহীত।
দুধের মতো পুষ্টিগুণ অনেক কম খাবারেই আছে। খুদে থেকে বয়স্ক, সব বয়সের জন্যই দুধ খাওয়া ভীষণ জরুরি। ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ দুধ হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। বার্ধক্য অস্টিয়োপরোসিসের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়াও, দুধে আছে ভরপুর পরিমাণে ফসফরাস, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক এবং আয়োডিন। এই উপাদানগুলি শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।