Aindrila Sharma

ক্যানসার থেকেই কি ঐন্দ্রিলার স্ট্রোক? যোগ রয়েছে কেমোর সঙ্গে? কী বলছেন চিকিৎসক

দু’ বার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী। কেমো চলেছে বহু বার। সেই থেকেই কি স্ট্রোক হল? চিকিৎসকরা কী বললেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০২
Share:

দু’বার ক্যানসার জয়ের পর আবার সঙ্কটজনক অবস্থায় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। ছবি: ফেসবুক।

ভেন্টিলেশনে রয়েছেন টেলি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। মঙ্গলবার সন্ধেবেলা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। দু’বার ক্যানসার জয়ের পর আবার সঙ্কটজনক অবস্থায় অভিনেত্রী।

Advertisement

২০১৫ সালে ঐন্দ্রিলা প্রথম জানতে পারেন, তাঁর অস্থিমজ্জায় কর্কট রোগ বাসা বেঁধেছে। দিল্লিতে শুরু হয় চিকিৎসা। চলে একের পর এক কেমোথেরাপি। ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন অভিনেত্রী। তবে সুস্থতা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ২০২১ সালে আবার অভিনেত্রীর ডান দিকের ফুসফুসে টিউমার ধরা পড়ে। আবার চলে কেমোথেরাপির পালা, ফের নরকযন্ত্রণার মুখোমুখি হন অভিনেত্রী। আবারও মারণরোগের সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হন ঐন্দ্রিলা। বছর গড়াতেই আবার স্ট্রোক! তবে কি ক্যানসারের কারণেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হলেন অভিনেত্রী?

ক্যানসার সার্জন গৌতম মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘যদি কোনও রোগীর ক্যানসার মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যায়, তা হলে তাঁর স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে আদৌ তা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষাসাপেক্ষ। ক্যানসার ছাড়াও তো বিভিন্ন কারণে স্ট্রোক হতে পারে, তাই সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদি প্রমাণিত হয় যে, অভিনেত্রীর ক্যানসার আক্রান্ত কোষগুলি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়েছে, সে ক্ষেত্রে কিন্তু সেই কারণে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। যদি মস্তিষ্কে ক্যানসার ছড়িয়ে গিয়ে স্ট্রোক হয়, তা হলে কিন্তু তা ক্যানসারের শেষ পর্যায়ের লক্ষণ।’’

Advertisement

কিন্তু ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না, তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। অভিনেত্রী এখনও ভেন্টিলেশনেই আছেন। চিকিৎসকরাও এখনও পর্যন্ত কোনও রকম সিদ্ধান্ত জানাননি। গোটা টলিউডই তাঁর আরোগ্যকামনা করছে। সকলের বিশ্বাস ফিনিক্সের মতোই ঐন্দ্রিলা সুস্থ হয়ে ফিরবেন।

চিকিৎসকদের মতে, কেমোর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে বটে, তবে কেমোথেরাপির জন্য স্ট্রোক হয় না। ছবি: ফেসবুক।

কেমোথেরাপির পার্শ্বপতিক্রিয়ায় কী স্ট্রোক হতে পারে?

চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়ের মতে, কেমোথেরাপির জন্য স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে না। কেমোর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে বটে, তবে কেমোথেরাপির জন্য স্ট্রোক হয় না।

মেডিক্যাল হিমাটো অনকোলজিস্ট সুদীপ দাস বললেন, ‘‘কেমো থেকে যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, তাকে মূলত দু’ ভাগে ভাগ করা যায়। কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কেমো নেওয়ার ২৪ ঘণ্টা থেকে ১০ দিনের মাথায় দেখা যায় আবার কিছু উপসর্গ ছ’ মাস থেকে এক বছরের পর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বেশির ভাগ কেমোথেরাপির পর রোগীদের প্রাথমিক পর্যায়, বমি বমি ভাব, খিদে কমে যাওয়া, দুর্বলতা, মাথার চুল উঠে যাওয়া, মুখে ঘা হওয়া, ডায়েরিয়া, রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দেখা যায়। তবে কেমোর ওষুধগুলির মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে তিন মাস, ছ’ মাস বা এক বছর পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা, ঋতুবন্ধের সময় এগিয়ে আসা, পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। তবে সেই সংখ্যা খুবই কম। তবে কেমোথেরাপির পর স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, এ কথা কিন্তু বলা যায় না। ক্যানসার মস্তিষ্কে ছড়িয়ে গেলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে তা হয়েছে কি না, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement