ডিম খেলে কি বুদ্ধি বাড়ে? ছবি: সংগৃহীত।
ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় বার্ধক্যে। তবে ইদানীং অবশ্য কম বয়সেই স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করছে অনেকেরই। তারও অবশ্য কারণ রয়েছে। স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার নেপথ্যে থাকতে পারে অত্যধিক পরিশ্রম, সারা ক্ষণ মস্তিষ্ককে ব্যস্ত রাখা, তেলজাতীয় বা মশলাদার খাবার খাওয়ার মতো কিছু কারণে। তবে কারণ যাই হোক, ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিলে বিষয়টিতে নজর দেওয়া জরুরি।
গবেষণা জানাচ্ছে, ডিম কিন্তু এ ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। ডিম খেতে অনেকেই ভালবাসেন। রোজ রোজ ডিম খাওয়ার হাতছানিও নতুন নয়। শুধু স্বাদ নয়, শরীরেরও যত্ন নেয় ডিম।
ওজন নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে শরীরে প্রয়োজনীয প্রোটিনের অনেকটা জোগান দেওয়া— সবেতেই ডিমের ভূমিকা অপরিহার্য। শুধু প্রোটিনই নয়, ডিমে রয়েছে ভিটামিন ৬, ভিটামিন ১২, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম, থিয়ামিন, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিন ডি-সহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান, যেগুলি রোগ প্রতিরোধ করে।
শরীরের অন্দরে অনেক সমস্যার নিমেষে সমাধান করে ডিম। গবেষণা বলছে, ডিম শুধু শরীরের যত্ন নেয় না, স্মৃতিশক্তিও বাড়ায়। আদৌ কি সত্যি এই তথ্য?
ডিমের প্রোটিনে রয়েছে হাইড্রোলাইসেট নামক উপাদান, যা মস্তিষ্কের যত্ন নেয়। মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষ সচল রাখে এই রাসায়নিক উপাদান। মনোযোগ বাড়ায়, সৃজনশীল হয়ে উঠতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। উদ্বেগ কমায়। ভুলে যাওয়ার সমস্যা যাঁদের রয়েছে, তাঁরা রোজের পাতে অনায়াসে রাখতে পারেন ডিম। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ডিম দারুণ কার্যকর বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
ডিমের সাদা অংশ তো বটেই, ডিমের কুসুমে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের মতো উপকারী উপাদান। এ ছাড়াও কোলিন, লুটেইন, জেক্সানথিনের মতো উপাকারী কিছু উপাদান। যেগুলি মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল সচল রাখে। রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। মস্তিষ্কের প্রতিটি ক্রিয়াকলাপ ঠিক রাখতে ডিমের মতো উপকারী খাবার খুব কমই রয়েছে।
ডিম নিঃসন্দেহে উপকারী। পাশাপাশি ডিমের কিছু বদনামও রয়েছে। অনেক সময় সে কারণে অনেকে ডিম খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করে দেন। চিকিৎসকদের মতে, একটি ডিমের কুসুমে মাত্র ১০০-৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। এটুকু শরীরের জন্য একেবারেই উপকারী নয়। এই পরিমাণ কোলেস্টেরল শরীরে ভাল কোলেস্টেরল তৈরিতেই কাজে লাগে। কুসুমে কোলেস্টেরল থাকলেও, ডিমের সাদা অংশে কোনও কোলেস্টেরল থাকে না। যদিও ডায়াবেটিক ও হৃদ্রোগীদের ডায়েটে অনেকে সময় ডিমের পরিমাণ কাটছাঁট করে থাকেন চিকিৎসকেরা। সে ক্ষেত্রে ডিমের ভিতরের স্যাচুরেটেড ফ্যাট অনেকটা দায়ী। এমনিতে সমস্যা না থাকলেও কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে ডিমের কুসুম না খাওয়াই ভাল বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।