তামাকজাত জিনিস থেকে দাঁতে হলদেটে ছোপ পড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে যত ধরনের টোটকা আছে, সবই দাঁতে ঘষে নেন। কিন্তু নাছোড় হলদেটে ছোপ কিছুতেই উঠতে চায় না। ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে সেই ছোপধরা দাঁত উঁকি দিলেই উল্টো দিকে থাকা মানুষটির মেজাজ চড়ে যায় সপ্তমে। আর সব দোষ গিয়ে পড়ে বেচারা ধোঁয়ার ঘাড়ে। সঙ্গে পান, গুটখা, মদ খাওয়ার মিথ্যে সন্দেহও জুড়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু ধূমপান করলে সত্যিই কি দাঁতে হলদেটে ছোপ পড়তে পারে?
চিকিৎসকেরা বলছেন, সিগারেটের মধ্যে থাকে নিকোটিন। আপাতনিরীহ এই বস্তুটির নিজস্ব কোনও রং নেই। তবে অক্সিজেনের সঙ্গে বর্ণহীন এই নিকোটিন মিশলে তা থেকে দাঁতে হলদেটে, লালচে ছোপ পড়ে। শুধু ধূমপান নয়, তামাকজাত জিনিস চিবোলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসক সাক্ষী হিন্দুজা বলেন, “এনামেল এমন একটি উপাদান, যা সহজে যে কোনও ধরনের দাগ শুষে নেয়। দাগের পরত জমতে থাকলে তা তোলাও দুষ্কর হয়ে ওঠে। অনেকে সিগারেট বা তামাকের বিকল্প হিসাবে নিয়মিত ভেপিং করে থাকেন। দাঁতের ক্ষেত্রে তার প্রভাব এতটুকুও আলাদা নয়।”
হলদেটে ছোপ ফেলা ছাড়াও নিকোটিন থেকে দাঁতে আর কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
১) নিকোটিন মুখগহ্বরে স্যালাইভা বা লালার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। মুখগহ্বরের ভিতর পিএইচের সমতায় হেরফের ঘটিয়ে দিতে পারে। ফলে দাঁতের ক্ষয় সংক্রান্ত সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
২) মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, সংক্রমণজনিত সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে নিকোটিনের জন্য। মুখগহ্বরে কোনও ক্ষত থাকলে তা সারতেও সময় লাগতে পারে।
৩) নিকোটিন বা তামাক ব্যবহারে দাঁতের উপরে থাকা এনামেলের পরত নষ্ট হয়। ফলে স্পর্শকাতরতা বেড়ে যায়। দাঁতের ক্ষয় রোধ করাও মুশকিল হয়ে পড়ে।
৪) দাঁত মেজে বা মাউথওয়াশ ব্যবহারেও মুখের দুর্গন্ধ দূর করা যায় না। মুখগহ্বরের ক্যানসার গুরুতর হারে বৃদ্ধি পাওয়ার নেপথ্যে নিকোটিনের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।