সমাজমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছিল অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডেকেও। ছবি: সংগৃহীত।
বলিউড তাঁর ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল না। টিনসেল টাউনের অলিগলি চিনতেন জন্মসূত্রে। তা সত্ত্বেও রুপোলি পর্দায় কাজ করতে আসার পথটা তাঁর জন্য লাল গালিচায় মোড়া ছিল না। অভিনয় করতে এসে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডেকে।
অভিনেতা চাঙ্কি পাণ্ডের কন্যা অনন্যা। তাই চলচ্চিত্র জগতে কাজ করতে এসে সহজেই স্বজনপোষণ প্রসঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম। অভিনয় দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে। সকলের বক্র দৃষ্টি উপেক্ষা করে সেই নিজের সঙ্গে যুঝে ওঠা খুব সহজ ছিল না। দিনের পর দিন সমাজমাধ্যমে লোকের কটাক্ষ হজম করতে গিয়ে শরীর তো ভেঙেছিল বটেই, মনেও ঝড় উঠেছিল।
শরীরে কিছু হলে যতটা সহজে তা নির্ণয় করা যায়, মনের ক্ষেত্রে বিষয়টা তত ঋজু নয়। এই সমস্যা সামাল দিতে এক সময়ে বিশেষ চিকিৎসার সাহায্য নিতে হয়েছিল অনন্যাকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সে কথা নিজেই জানিয়েছেন অভিনেত্রী। অনন্যা বলেন, “রাগ, দুঃখ, খুশি, কষ্ট— কোনও আবেগই প্রকাশ করতে পারতাম না। কোনও কিছু দেখে বা পড়ে খারাপ লাগলে একেবারে নিশ্চুপ হয়ে যেতাম। একা করে ফেলতাম নিজেকে। নিজেকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে কাটাছেঁড়া হতে দেখলেও সমস্যা হত।” সে সব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে এই থেরাপি। বেশ কিছু দিন চিকিৎসার পর এখন তিনি ছন্দে ফিরতে পেরেছেন বলেও জানিয়েছেন।
অনন্যার টুকরো টুকরো আবেগ, অনুভূতিগুলি একত্র করতে অনেকখানি সাহায্য করেছে এই থেরাপি। সমাজমাধ্যম থেকে নিজেকে না সরিয়েও কটাক্ষ, কটূক্তি, বিরক্তি-ভরা মন্তব্যগুলি কী ভাবে এড়িয়ে যেতে হয়, সে সব শিখতেও সাহায্য করেছে। এখন আর নিয়মিত চিকিৎসারও প্রয়োজন পড়ে না বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে কী কী অভ্যাস করা প্রয়োজন?
১) সারা দিনের ব্যস্ততার মধ্যে থেকে মিনিট দুয়েক সময় বার করেও যদি ‘মাইন্ডফুল মেডিটেশন’ বা ধ্যান করা যায়, তা হলে উপকার মিলবে। মানসিক চাপ কমাতে, মাটিতে পা রেখে চলতে সাহায্য করে এই অভ্যাস।
২) মনের সঙ্গে শরীরেরও যোগ রয়েছে। শারীরিক ভাবে সক্রিয় থাকলে ‘হ্যাপি’ হরমোন বা এনডরফিন ক্ষরণের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে অবসাদ সহজে গ্রাস করতে পারে না।
৩) পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবেও কিন্তু মানসিক চাপ বেড়ে যায়। শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজেই হেরফের দেখা দিতে পারে।
৪) কাছের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে তুলতে হবে। বন্ধু কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গ মনের জড়তা অনেকখানি কাটিয়ে দেয়।
৫) মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। এই অভ্যাস নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে।
৬) কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমেও মনের ভার লাঘব করা যায়। মুখে বলা সম্ভব না হলে লিখেও রাখা যেতে পারে। কিন্তু এই অভ্যাস প্রতি দিন করতে হবে। তাতে ইতিবাচক মনোভাব বৃদ্ধি পাবে।
৭) নেতিবাচক চিন্তাভাবনার ভিড় এড়িয়ে চলতে পারাটাও একটা শিল্প। তা নিজগুণেই রপ্ত করতে হয়। নতুন নতুন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। তাতে মস্তিষ্কের ক্রিয়া সাবলীল হবে, ফলে মনও ভাল থাকবে।