‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ কী? ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি মাসে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে নানা রকম শারীরিক, মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। মূলত হরমোনের হেরফেরে এই ধরনের সমস্যা হয়। ঋতুস্রাব শেষ হয়ে গেলে এই ধরনের উপসর্গ ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। শরীরের পাশাপাশি মনের দিক থেকেও খানিকটা স্বস্তি মেলে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম দেখা যায়।
অনেকেই বলেন, প্রতি মাসে ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ‘প্রিমেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ থেকে যায়। অর্থাৎ ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে যে ধরনের শারীরিক বা মানসিক সমস্যা দেখা দেয়, তা চলতে থাকে ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যা ‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ নামে পরিচিত।
‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ কী?
লক্ষণগুলি ‘প্রিমেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’-এর মতো হলেও ‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ কিন্তু একেবারেই আলাদা। স্ত্রীরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, ঋতুস্রাব শুরুর আগে যেমন শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা যায়, এ ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা না-ও হতে পারে। বরং ‘পোস্ট মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’-এর ক্ষেত্রে মানসিক সমস্যাগুলি অনেক বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। উদ্বেগ, অবসাদ, মানসিক চাপ, সিদ্ধান্তহীনতার মতো সমস্যায় ভোগেন অনেকে।
‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ কেন হয়?
মূলত হরমোনের হেরফের এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই ইস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা হঠাৎ বাড়তে শুরু করে। ফলে ঋতুচক্র অনুযায়ী ডিম্বস্ফুটনের সময় না হলেও উপসর্গ দেখে অনেক সময়ে তেমনটা মনে হতেই পারে। যাঁরা ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রম’-এর সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’ হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
এ ছাড়া, ‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’-এর ক্ষেত্রে ইনসুলিন হরমোনের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। ইনসুলিন হরমোন যে শুধুমাত্র রক্তে শর্করার ওঠা-নামার সঙ্গে যুক্ত, তা নয়। ঋতুস্রাবের সঙ্গে অন্য যে হরমোনগুলি জড়িত, সেগুলির পারস্পরিক কাজকর্মও কিন্তু ইনসুলিনের উপর নির্ভর করে।
‘পোস্ট-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রম’-এর লক্ষণগুলি কী কী?
১) আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। ফলে মনমেজাজ বিগড়ে যাওয়া, অল্প কথায় রেগে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেওয়া খুব স্বাভাবিক।
২) মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অবসাদও বাড়তে পারে।
৩) শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধিতে ব্যথাবেদনা বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪) যৌনাঙ্গ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে জ্বালা, চুলকানি বা ছত্রাকঘটিত সংক্রমণের সমস্যাও দেখা যায়।
৫) ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ক্লান্তি কাটানো মুশকিল হয়ে পড়ে।