ওজন ঝরানোর নানা রকম কৌশলের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী হল ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। সারা দিনে নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে যাবতীয় খাবার খাওয়া শেষ করে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা উপোস করে থাকতে হয় এই নিয়মে। অনেকেই বিশেষ এই পন্থা প্রয়োগ করে সুফল লাভ করেছেন।
কিন্তু বর্তমান গবেষণা বলছে অন্য কথা।
বিশেষ ধরনের এই ব্যবস্থায় মহিলাদের প্রজননের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনের উপর গুরুতর ভাবে প্রভাব পড়ে।
ঋতুবন্ধ হয়েছে এবং ঋতুবন্ধ হবে এমন মহিলাদের দু’টি পৃথক দলে ভাগ করে, তাদের উপর ৮সপ্তাহ ধরে এই ‘ওয়ারিয়র ডায়েট’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখেছেন শিকাগোর ‘ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়েস’-এর একদল গবেষক।
এই ডায়েট পদ্ধতিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৪ ঘণ্টা খাবার খাওয়ার অনুমতি মেলে। এই সময়ের মধ্যে সমস্ত কিছু খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। পরিমাণের ক্ষেত্রেও কোনও বিধি নিষেধ থাকে না। চার ঘণ্টার ওই 'উইন্ডো' বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর শুধুমাত্র জল বা জলীয় খাবার খেয়েই থাকতে হয়।
এই ডায়েট চলাকালীন ওই সমস্ত মহিলাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের হরমোনের মাত্রায় তারতম্য রয়েছে। তুলনায় তাঁদের হরমোনে কোনও প্রভাবই পড়েনি যারা এই ফাস্টিং করেননি।
গবেষক ক্রিস্টা ভারাডি এবং তার দল লক্ষ করেন, ৮ সপ্তাহ পরেও ওই মহিলাদের শরীরে 'টেস্টোস্টেরন' এবং 'ইস্ট্রোজেন'-এর মতো হরমোনগুলির উপর বিশেষ কোনও পরিবর্তন আসেনি। তবে 'ডিহাইড্রোপিয়ানড্রস্টেরন’ (ডিএইচডিএ) অস্বাভাবিক হারে কমে গিয়েছে। ডিম্বাণুর গুণমানে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে।
ভারাডি বলেছেন, '’ঋতুবন্ধের পর এই ডায়েট মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক।'’
এই ডায়েট পদ্ধতি মেনে বেশির ভাগ মহিলারই ওজন কমেছে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং নিয়ে বহু কথা প্রচলিত। যেগুলির বেশির ভাগটাই ইঁদুরের উপর করা গবেষণা থেকে পাওয়া।
ভারাডি আরও বলেন, '’প্রথম পর্যায়ে কিছু মহিলার উপর পরীক্ষা মূলক ভাবে এই ডায়েট পদ্ধতি শুরু করা হলেও পরবর্তীতে তা এক হাজার জনের উপর করে দেখা হবে। মানুষের উপর ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কেমন প্রভাব ফেলছে তার জন্য আমাদের আরও গবেষণা করতে হবে।'