Health Tips

পরিমিত খেলেও যদি বিপাকহার কমে যায়, ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, কোন উপায়ে সমাধান?

বিপাকহার কমলেই শরীরে ওজন বৃদ্ধি সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে ৫টি সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করেই বাড়িয়ে তুলতে পারেন বিপাকহার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৪ ১৬:১৪
Share:

বিপাকহার বৃদ্ধির কৌশল। ছবি: সংগৃহীত।

একই খাবার হয়তো দু’জন মানুষ খাচ্ছেন। কিন্তু কারও দেখা গেল, ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারও আবার একই থাকছে। ওজন বৃদ্ধি ও কমে যাওয়ার পিছনে নানা কারণ থাকতে পারে। তবে এর মধ্যে একটি কারণ হতে পারে বিপাকহার কমে যাওয়া। খাদ্য শরীরে যাওয়ার পর শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে তা ভেঙে যায় এবং তা থেকে পুষ্টি শোষিত হয়। খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণ, শক্তি সঞ্চয় হয় বিপাকের মাধ্যমে। বিপাকের হার বৃদ্ধি পেলে দ্রুত ক্যালোরি খরচ হয়, মেদ ঝরে। উল্টোটা হলে, ওজন বৃদ্ধি পায়।

Advertisement

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানাচ্ছেন, এক এক জনের বিএমআর বা বেসাল মেটাবলিক রেট আলাদা আলাদা হয়। বিশ্রারমরত অবস্থায় একজন মানুষের যতটা ক্যালোরির প্রয়োজন, সেই পরিমাপকেই এ ক্ষেত্রে বিএমআর বলে ধরা হয়। কারও মেটাবলিজম বা বিপাকহার কত, তা জানার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। ইদানীং বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যেও তা বলে দেওয়া সম্ভব। তা দেখেই বুঝতে হবে, বিপাকহার সঠিক রয়েছে, না কি কম বা বেশি? চিকিৎসক বলছেন, "কেউ যদি ১৮০০ ক্যালোরি খাবার খান, শারীরবৃত্তীয় কাজের জন্য যদি তার খরচ ১২০০ ক্যালোরি হয়, বাকি ৬০০ ক্যালোরি জমবে। এই বাড়তি ক্যালোরি কত তাড়াতাড়ি খরচ হবে, তা নির্ভর করে সেই ব্যক্তির বিপাকহারের উপর।"

বিপাক হার কমে গেলে তা বাড়িয়ে নেওয়ার নানা কৌশল রয়েছে।

Advertisement

শরীরচর্চা

চিকিৎসক বলছেন, বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চার সঙ্গে বিপাকহারের গতি যুক্ত। কার্ডিয়ো করলে বা ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে বিপাক হার বৃদ্ধি পায়। শরীরচর্চার পাশপাশি হাঁটাহাটিতেও ভাল ফল পাওয়া যায়। চড়াইতে দ্রুত হাঁটলে বা ২ মিনিট জোরে ছুটলে কাজ হবে। তবে সকলের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। শারীরিক অসুস্থতা বা হার্টের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ‘হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিং’ করা ঠিক নয়। তবে হাঁটাহাটি, ব্যায়াম, জগিং করা যেতে পারে।

খাবার

কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন খাবার বিপাকহারের গতি কমিয়ে দেয়। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার, প্রোটিন জাতীয় খাবার খেলে বিপাকহার বৃদ্ধি পাবে। একবারে অনেকটা না খেয়ে যদি দিনভর ৩-৪ ঘণ্টা অন্তর একটু একটু করে খাবার খাওয়া যায়, তা হলে বিপাকহার বাড়বে। তেল-মশলাদার খাবার কম খেতে হবে। রোজের ডায়েটে কিছুটা প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখলে তা পেট ভর্তি রাখতে সাহায্য করবে। অনেকেই প্রাতরাশ বাদ দিয়ে দেন। অনেকের আবার কাজের চাপে দুপুরের খাবার বাদ পড়ে যায়। দীর্ঘ ক্ষণ না খেলে বিপাকহার কমতে পারে।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, অনেক সময় খাদ্যাভ্যাস ঠিক না থাকলে বা নানা কারণে ‘মেটাবলিক ডিজ়অর্ডার’ হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা হলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। শরীর ‘ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্ট’ হয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইনসুলিন কাজ করলেও রক্তে গ্লুকোজ়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। পাশাপাশি, লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে, ওবেসিটি হতে পারে। অন্য দিকে, লিভারের সমস্যা, ওবেসিটি থাকলেও তার প্রভাব বিপাকহারে পড়তে পারে।

জল পান

শুধু খাবার খেলেই হবে না, পানীয়ে চুমুকও দিতে হবে। জল খেতেই হবে। এ ছাড়াও ফলের রস, স্যুপ, টাটকা ফল রোজের খাদ্যতালিকায় রাখা প্রয়োজন। শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনের শরীরেরও জল প্রয়োজন। জল কম খেলে বিপাকহারের গতিও কমতে পারে। সে কারণেই পর্যাপ্ত জল খাওয়া খুব জরুরি।

পর্যাপ্ত ঘুম

২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম খুব জরুরি। ঘুম ঠিকমতো না হলেই বিপাকহার কমে যেতে পারে। সমস্ত শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনের ক্ষরণের সঙ্গে ঘুমের গুরুত্বপূর্ণ যোগ রয়েছে। ঘুম ঠিকমতো হলে বিপাকহারও বৃদ্ধি পায়।

উদ্বেগ

উদ্বেগও বিপাকহারের সঙ্গে সম্পর্কিত। উদ্বেগের কারণে অনেক সময় কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা বিপাকহারে প্রভাব ফেলে। তাই উদ্বেগ কমাতে ধ্যান, প্রাণায়ামের অভ্যাস করলে শরীর ও মন, দুই-ই ভাল থাকবে। পাশাপাশি, শরীরচর্চা করলেও মনে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement