মিমিও আক্রান্ত এই অসুখে!
মিমি চক্রবর্তী ‘ওসিডিতে আক্রান্ত! শুট না থাকলেই মাস্ক পরে বাড়ির উইন্ডো গ্লাস থেকে কুশন কভার ঝাড়ছেন, মুছছেন। তাই নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই সাংসদ, অভিনেত্রীর! জানিয়েছেন, যতই লোকে ‘বাতিক বলুক! বারে বারে নিজের হাতে ঝাড়াপোঁছা এনজয় করেন তিনি। এই খুঁতখুঁতানি চিরকালের।
করোনাকালে সেই অভ্যাস আরও বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার করে মিমির সংযোজন, ‘‘এনজয় করছি ওসিডি!’ মিমির এই বাতিক ছড়িয়েছে আরও সেলেবদের মধ্যে। তালিকায় নাম উঠেছে, ঋতাভরী চক্রবর্তী, নীল ভট্টাচার্যের। তথাকথিত ‘ওসিডি’তে আক্রান্ত হয়ে কী করছেন তাঁরা?
ঋতাভরীর দাবি, তিনি বরাবরই এই ডিজঅর্ডারের শিকার। বাড়ির একটা জিনিস এ দিক থেকে ও দিক হতে দেন না। করোনাকালে সেটা চরমে পৌঁছেছে। বাইরে বেরোলেই স্নান করছেন। বাইরের পোশাকে বন্ধুদের মোটেই তাঁর ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। ফলে, তাঁদের সঙ্গে করে আরেক সেট পোশাক আনতে হচ্ছে।
ঋতাভরীর দাবি, তিনি বরাবরই এই ডিজঅর্ডারের শিকার
কফিশপে যাচ্ছেন নিজের মগ নিয়ে সিটে বসার আগে ‘স্যানিটাইজড গান’ দিয়ে তা পরিষ্কার করে নিচ্ছেন। কাজে সাহায্য করার দিদির জন্যেও আলাদা পোশাক, ডিজপোজেবল মাস্ক আনিয়ে রেখেছেন। কথা শেষে অভিনেত্রীর স্বীকারোক্তি, ‘‘এই সুযোগে উদযাপন করছি ‘বাতিকের! করোনার ভয়ে সবাই চুপচাপ মেনেও নিচ্ছেন আমার অত্যাচার”।
মাস খানেক আগেই করোনা সংক্রমণ থেকে ভুগে উঠলেন ‘কৃষ্ণকলি’ধারাবাহিকের ‘নিখিল। পরিচ্ছন্নতা কি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে ঠেকেছে? নীল ভট্টাচার্যের জবাব, ‘‘করোনা পরিচ্ছন্নতার বাতিক অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে প্রচণ্ড খিদে পেলে বাইরে থেকে এসে হাত না ধুয়েই খেয়ে নিতাম। মায়ের বকুনিকেই পাত্তা দিতাম না। এখন আর তা করতে পারছি না। সুযোগ পেলেই হাত স্যানিটাইজড করছি বার বার। আর আগে বন্ধুদের সঙ্গে খাবার শেয়ার করে খেতাম। এখন সে সবের প্রশ্নই ওঠে না”।
একই ছবি ভাগ্যশ্রী শার্লি মোদকের ঘরেও। জলপাইগুড়ির মেয়ে শার্লি কলকাতায় একা থাকেন। করোনার আগে প্রতিদিন ঘর পরিষ্কারের সময় পেতেন না। ‘‘এখন কাজ ফেলে আগে ঘর পরিষ্কার করছি”, জানালেন ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’। জলপাইগুড়ির বাড়ির সংক্রমণ রুখতে পোষ্য সারমেয়কেও তিনি নাকি জুতো পরতে বাধ্য করিয়েছেন! বাইরে গেলেই তার থাবা জীবাণুমুক্ত হচ্ছে স্যানিটাইজার দিয়ে, দাবি শার্লির।
করোনা কালে বাড়ছে কেনঅবসেসিভ কম্পালশিভ ডিসঅর্ডার? মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, অনেকেই মজা করে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে ‘বাতিক’ ট্যাগ দেন। অনেক সময়েই আশঙ্কা বা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে কিছু মানুষের মনে ক্রমাগত অস্বস্তি চলতে থাকে। সেটা আটকাতে তিনি কিছু নিয়ম তৈরি করে নেন। অনেক সময় তিনি নিয়মগুলো একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় পালন করার চেষ্টা করেন। যাতে তাঁর আশঙ্কাগুলো সত্যি না হয়।
সাধারণত, প্রয়োজনীয় কাজের থেকে যাঁরা এই কাজগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেন তাঁরা এই বিশেষ পর্যায়ভুক্ত। অতিমারিকে ঠেকাতে এখন সবাই যা করছেন তাকে বোধহয় এক্ষুণি ‘ওসিডি তকমা দেওয়ার সময় আসেনি।