মেয়ে ময়ূরাক্ষী স্কুল থেকে না ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
পরিসংখ্যান বলছে, বাংলা ছবির ইতিহাসে একটা মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন তিনি। সর্বকালের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ভারতীয় বাংলা ছবির সেরা দশে নাম লিখিয়ে ফেলেছে ‘বহুরূপী’। একেবারে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ছবিটি। আর সে ছবিরই নায়ক আবীর চট্টোপাধ্যায়। টলিপাড়ার সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত নায়কের তালিকায়ও নিজের স্থান পাকা করে রেখেছেন আবীর। ১৮ নভেম্বর ৪৪ বছরে পা দিলেন অভিনেতা।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন সোমবার পড়েছে জন্মদিন, তাই সপ্তাহান্ত থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্যাপন। জন্মদিনের সবটাই আবীর উৎসর্গ করে রেখেছেন পরিবারের জন্য। সারা দিন বাড়িতে কাটাবেন, বাবা, মা, স্ত্রী আর মেয়ের সঙ্গে। আনন্দবাজার অনলাইনকে ‘বার্থডে বয়’ জানালেন, নিয়ম ভেঙে মিষ্টি খাবেন, মায়ের হাতের পায়েস। বললেন, “এটা নিয়ম, খেতেই হয়। এই নিয়ম ভাল লাগে। এমনিতে খুব একটা মিষ্টি খাই না। পায়েসও খাই না অন্য দিন। আজ খাব। বাড়িতে বিশেষ রান্নাবান্না হবে, আজকের পাতে পড়বে সে সবই। তবে পাঁঠার মাংসটা খাব না।’’ তবে অন্য দিন যে পাঁঠার মাংস মুখে তোলেন না এমনটাও নয়। কথায় কথায় সেটাও স্পষ্ট করে দিলেন অভিনেতা।
এ দিকে মেয়ের স্কুল রয়েছে। সকাল সকাল ময়ূরাক্ষীকে চলে যেতে হয়েছে। তাই অপেক্ষা করছেন বাবা, সে ফিরলে বিকেলে শুরু হবে বাড়ির উদ্যাপন।
রবিবার হাওড়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে ‘টিম বহুরূপী’ এবং ওই প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষের তরফে আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান। মূলত ‘বহুরূপী’র ব্যবসায়িক সাফল্য উদ্যাপনই ছিল লক্ষ্য। শুধুমাত্র ওই সংস্থার প্রেক্ষাগৃহগুলিতেই ২ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ‘বহুরূপী’। কিন্তু জন্মদিনের আগের সন্ধ্যায় আবীরকে পেয়ে মোটেও ছেড়ে দেননি তাঁরা। হয়েছে কেক কাটা। অভিনেতা বলেন, “আমি তো অবাক। বিশাল একটা কেক এল আমার জন্য। প্রচুর হইচই করে সেটা কাটাও হল। কেক কাটা চলছেই।” কোথায় যেন মিলে গিয়েছিল ‘বহুরূপী’র সুশান্ত ঘোষাল আর আবীর চট্টোপাধ্যায়।
রবিবার সন্ধ্যার উদ্যাপনে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও ‘বহুরূপী’র অন্য সদস্যদের সঙ্গে আবীর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
‘বহুরূপী’ প্রথম নয়। ২০২২ সালের ছবি ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’ও সর্বোচ্চ উপার্জনের নিরিখে প্রথম দিকেই স্থান পেয়েছিল সর্বকালের হিসাবে। সে ছবির নায়কও ছিলেন আবীরই। তাই তাঁর ভক্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এক সময় ভক্তেরাও উদ্যাপন করতে চাইতেন তাদের প্রিয় নায়কের জন্মদিন। এখন সেই বিষয়টি বন্ধ করে দিয়েছেন আবীর নিজেই। কিন্তু কেন এমন করলেন? আবীর বলেন, “প্রথমত একটু লজ্জা করে। আর অতিমারির সময় থেকেই বিষয়টা বন্ধ করে দিতে চেয়েছি। আমি সকলকে বলেছি, আমার পাশে থাকাটাই যথেষ্ট। আমার ছবি দেখলেই হবে। জন্মদিন পালনের জন্য কাজকর্ম ফেলে সময় নষ্ট করার কোনও মানে হয় না।”
ভক্তদের সময় নষ্ট হবে, এমন ভাবলেও নিজের জন্মদিনে কাজকর্ম একেবারেই করতে চান না অভিনেতা। সারা দিন থাকবেন ছুটির মেজাজে। শরীরচর্চার বিষয়ে আবীর যথেষ্ট খুঁতখুঁতে। কিন্তু আজকের দিনে সেই নিয়মও ভঙ্গ হবে। মোটেও জিমের দিকে পা বাড়াতে চান না আবীর। আর ঠিক সেই কারণেই জিমের সঙ্গীরা তাঁর জন্মদিন আগেভাগেই পালন করে ফেলেছেন। সেখানেও একপ্রস্ত কেক কাটা হয়েছে। শরীর সচেতন আবীর বলেন, “আমি তো ওদের বলেছি, এই যে এত ক্রিম, এত মিষ্টি খাচ্ছি। আবার তোমাদেরই পরিশ্রম করে আমার মেদ ঝরাতে হবে।”
আবীর বলেন, “এমনিতে তো পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারি না। আজ জন্মদিনটা শুধু ওদের জন্যই তুলে রেখেছি। সবটাই ঘরোয়া আয়োজন।বাড়ির খাওয়া।”