ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে জুনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সিনিয়রদের সম্মান দিয়ে চলতে হয়। মাথার উপর সিনিয়রদের হাত না থাকলে কেরিয়ারে বেগ পেতে হয় তাঁদের।
কিন্তু আমিশা পটেল তারকা হওয়ার আগেই একবার বলিউডের এক প্রথম সারির অভিনেত্রীর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ওই অভিনেত্রীর সহকর্মীর সঙ্গে আমিশার হাতাহাতির পরিস্থিতিও তৈরি বয়ে গিয়েছিল।
ওই অভিনেত্রী ছিলেন মমতা কুলকার্নি। এক দিকে মমতা তখন প্রথম সারির নায়িকা। অন্য দিকে আমিশার তখন বলিউডে হাতেখড়িই হয়নি।
এক চুলের তেলের বিজ্ঞাপনের জন্য মরিশাসে শ্যুটিং করতে গিয়েছিলেন আমিশা। ওই বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রথম সারির মডেল ছিলেন তিনি। পাশাপাশি হৃত্বিক রোশনের সঙ্গে তাঁর প্রথম ছবির কথাবার্তাও চলছিল তখন।
ঠিক ওই সময়েই আবার এক ছবির শ্যুটিংয়ে মরিশাসে গিয়েছিলেন মমতা। আমিশা এবং মমতার শ্যুটিং পাশাপাশি চলছিল।
শ্যুটিং শেষে আমিশার ওই তেল সংস্থার মালিক একটি পার্টির ব্যবস্থা করেন। মরিশাসেই তিনি পার্টি রেখেছিলেন। ভারতীয় রাঁধুনী দিয়ে সুস্বাদু ভারতীয় পদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেখানে।
ওই পার্টিতে মমতাও আমন্ত্রিত ছিলেন। বিদেশের মাটিতে ভারতীয় পদ পেয়ে যেখানে সকলেই প্রশংসা করছিলেন, সেখানে একমাত্র মমতারই খাবার পছন্দ হয়নি।
বিশেষ করে মাংসের স্বাদ তাঁর নাকি একেবারেই পছন্দ হয়নি। পচা মাংস পরিবেশনের অভিযোগ তুলে তিনি পার্টিতে অভব্য আচরণ শুরু করেন।
এক খাবার পরিবেশককে অপমানও করতে শুরু করেন। ওই পরিবেশক তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, ওটা হরিণের মাংস। মরিশাসে মুরগির মাংস রান্না করাটা সম্ভব হয়নি এবং হরিণের মাংসের স্বাদ এরকমই হয়।
পরিবেশকের কোনও কথাতেই কান দিতে চাননি মমতা। দূর থেকে এ সব দেখছিলেন আমিশা। মমতার আচরণ তাঁর একেবারেই পছন্দ হয়নি। মমতার খারাপ আচরণ নিয়ে তিনি মন্তব্যও করে বসেন।
আমিশার মন্তব্য মমতার কানে পৌঁছয়। একজন ‘সামান্য মডেল’ তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলায় মমতা ভীষণ রেগে যান।
আমিশার কাছে উঠে এসে মমতা তাঁকে ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, ‘সামান্য বিজ্ঞাপন করে তুমি কত টাকা উপার্জন করছ? ১ লাখ? এই বিজ্ঞাপন আমি করলে অন্তত ১৫ লাখ টাকা পেতাম।’
প্রকাশ্যে এই অপমান মেনে নিতে পারেননি আমিশা। পাল্টা মমতার মুখের উপর জবাব দেন, ন্যূনতম শিক্ষিত হলে এ রকম আচরণ তিনি করতেন না।
মমতার সহকারী পাশেই ছিলেন। এই জবাব শুনে তিনি আমিশাকে চড় মারতে যান। কিন্তু আমিশার মা তাঁদের মাঝে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আমিশাও শ্যুটিংয়ের কাজ মিটিয়ে মুম্বই ফিরে আসেন।
হৃত্বিকের সঙ্গে তাঁর প্রথম ছবি সুপারহিট হয়। রাতারাতি বড় তারকা হয়ে ওঠেন আমিশা। রাকেশ রোশনের মেয়ের সঙ্গে আগে থেকেই বন্ধুত্ব ছিল আমিশার। তারকা হওয়ার পর তাঁর সঙ্গেই একটি পার্টিতে গিয়ে ফের মমতার মুখোমুখি হন তিনি।
আমিশার সঙ্গে ফের পরিচয় করতে যান মমতা। কিন্তু তাঁকে পাত্তা না দিয়েই পার্টি থেকে বেরিয়ে যান আমিশা। পরে এক সাক্ষাৎকারে মরিশাসের ঘটনা এবং মমতার অহংবোধের কাহিনি বিস্তারিত জানান আমিশা।
কিন্তু আশ্চর্যের হল, তারকা হওয়ার জন্য মমতার যে অহংবোধের বিষয়টি আমিশার খারাপ লেগেছিল, তারকা হয়ে ঠিক একই কাজ তিনি নিজেও করেছিলেন। তাঁর নাম ধরে ডাকার জন্য একবার এক সাংবাদিককে ধমক দিয়েছিলেন তিনি। ‘আমিশাজি’ সম্বোধন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।