‘গন্ধটা খুব সন্দেহজনক’, টের পেয়েছেন টোটা রায়চৌধুরীও। ‘ফেলুদা’ সিরিজের প্রচার ঝলক আনুষ্ঠানিক প্রকাশের পর থেকেই বিষয়টি নজরে এসেছে তাঁর। বেশ কিছু জন অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। কিছু দর্শক গঠনমূলক সমালোচনা করেছেন। বাকিরা যেন বিষের কালিতে কলম ডুবিয়েছেন! সেই কলমে গলগলিয়ে উঠে এসেছে ঘৃণা। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘প্রদোষ মিত্র’কে সেই ঘৃণায় নস্যাৎ করে দিতে চেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কেন? সৃজিত, টোটা, অনির্বাণ চক্রবর্তী এবং কল্পন মিত্র যখন আড্ডা টাইমস ওয়েব প্ল্যাটফর্মে প্রথম ধরা দিয়েছিলেন, তখন বাঙালির আনন্দ হয়েছিল।
হঠাৎ কী কারণে রাতারাতি বদলে গেলেন সেই বাঙালি দর্শক?
বিষয়টি কোথাও ধাক্কা দিয়েছে টোটাকেও। আনন্দবাজার অনলাইন সরাসরি তাঁর মুখ থেকে কারণ জানতে চেয়েছিল। তখনই অভিনেতার অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘সমালোচনা হলে মেনে নিতাম। কোনও কথা বলতাম না। এটা সমালোচনা নয়। আমার প্রতি একরাশ ঘৃণা উগরে দিচ্ছেন কিছু মানুষ। কোনও কারণে আমি যেন তাঁদের নিশানায়। যা পারছেন তাই লিখে অনবরত বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন! কেন করছেন? আমি তো জ্ঞানত কারও ক্ষতি করেছি বলে মনে পড়ছে না। তা হলে?’’
কথা প্রসঙ্গে নিজের অভিনয় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণও করেছেন। পর্দার ‘ফেলু মিত্তির’-এর দাবি, ‘‘ফেলুদা হিসেবে প্রথম অভিনয়ের সময়ে আমার প্রচুর ত্রুটি ছিল। তখনই অনুরাগীদের কথা দিয়েছিলাম, পরের সিরিজগুলোতে নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করব। সেটা করেছি। সেই কারণে পরিচালকও আমায় জানিয়েছেন, এ বার তিনি অন্য ফেলুদাকে দেখলেন। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সমালোচনায় পড়েছি, আগের ফেলুদার থেকে এই ফেলুদা অনেক বেশি অনায়াস। তা হলে এত কটূক্তির কারণ কী?’’ এর পিছনে অন্য কোনও ভাবনা বা কারণ কাজ করছে না তো? এমনও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
অভিনয়ে তিনি যে ১০০ শতাংশ নিখুঁত এ কথা একবারও অভিনেতা বলেননি। উল্টে তাঁর যুক্তি, ‘‘তখনকার দিনে একটি ছবি ৪০ দিন ধরে শ্যুট হত। অভিনেতারা নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারতেন। সেই কাজ এখন হয় ১৩ দিনে। তার মধ্যেই চেষ্টা করেছি ত্রুটিমুক্ত হতে। দর্শকেরা গঠনমূলক সমালোচনায় যে সমস্ত দিক ধরিয়ে দিয়েছেন, আগামী বার অভিনয়ের সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই সেসব মনে রেখেই অভিনয়ের চেষ্টা করব।’’ টোটার এ-ও দাবি, আচমকা এত ঘৃণা পেয়ে তিনিও হতচকিত। তাই তিনি কথা বলেছিলেন নেটমাধ্যম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বেশ কিছু বন্ধুর সঙ্গে। তাঁরা টোটাকে জানিয়েছেন, ৮০ শতাংশ ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ১০ শতাংশ গঠনমূলক সমালোচনা করেছেন। বাকি ১০ শতাংশ সমস্ত নেটমাধ্যমে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে’ কলম খুলে নেতিবাচক মন্তব্য লিখেছেন!
আবার সৃজিতের ফেলুদা হওয়ার আগে কি এঁদের কথাই মনে রাখবেন টোটা? অভিনেতার সাফ জবাব, ‘‘এত সমালোচনার পরেও আবার সুযোগ পেলে আমি ৯০ শতাংশের জন্য অভিনয় করব। বাকি ১০ শতাংশকে হাসতে হাসতে ছেঁটে দেব মন থেকে।’’