Lookback 2023

২০২৩: সেরা ৫ অভিনয় যা আমাদের মুগ্ধ করেছে

বাকি কিছু তেমন জোরালো নয়, অভিনয় দিয়েই বাজিমাত করতে হবে— এমন দায়িত্ব বাংলা ছবিতে (বা ওটিটি-তে) অনেকের কাঁধেই এসে পড়ে। অভিনেতারা যথাসাধ্য চেষ্টাও করেন। কিন্তু সফল হন ক’জন?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:০০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

১। দামিনী বেণী বসু

Advertisement

ওয়েব সিরিজ়: ছোটলোক

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলা ছবিতে ২০২৩ সালে পুলিশের ছড়াছড়ি। তবে যাঁরা রোহিত শেট্টির পুলিশদের চেয়ে ‘দহাড়’ বা ‘কোহরা’র ঘরানার পুলিশ অফিসারদের বেশি পছন্দ করেন, তা হলে তাঁদের সাবিত্রী মণ্ডলকেই শ্রেষ্ঠ মনে হবে। যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন দামিনী। তিনি যে দক্ষ অভিনেত্রী, তা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। কিন্তু কেউ তাঁকে খুব বড় কোনও চরিত্রে কখনও ভাবেননি। পরিচালক ইন্দ্রনীল রায়চৌধুরী তাই দামিনীকে মুখ্য ভূমিকায় নিয়ে চমক দিয়েছিলেন। এক বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশ অফিসারকেও যে ‘কোটা’য় চাকরি পাওয়ার খোঁটা শুনতে হয়, মায়ের দায়িত্ব পালন না করায় মেয়ের স্কুলের প্রধানশিক্ষিকার কাছে কথা শুনতে হয়, কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বার করে ফেলার জন্য নেত্রীর হুমকি শুনতে হয়— তা তুলে ধরেছেন দামিনী। প্রাথমিক ভাবে এর প্রশংসা প্রাপ্য কাহিনিকারের। কিন্তু দামিনীর অতুলনীয় অভিনয় ছাড়া কি কাহিনিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হত? পুলিশের উর্দি পরেও কপালে টিপ, নাক কুঁচকে কথা, জেরা করতে করতে অ্যান্টাসিড চাওয়া— দামিনী বড় বেশি জীবন্ত!

Advertisement

২। মিঠুন চক্রবর্তী

সিনেমা: কাবুলিওয়ালা

ছবি: সংগৃহীত।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ প্রায় সব বাঙালি পড়েছেন। সেই গল্পই আবার পর্দায় এনেছেন পরিচালক সুমন ঘোষ। ছোট্ট মেয়ে ‘মিনি’র ‘পাঠান’ নায়কের চরিত্রে অনবদ্য মিঠুন চক্রবর্তী। সময়োপযোগী করে তোলার জন্য ছবিতে বেশ কিছু বদল করা হলেও তা ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’র মতো নয়। গোটা ছবি জুড়ে কাবুলিওয়ালারূপী মিঠুনের রাজ। ভিন্‌দেশ থেকে আসা এক পিতার সারল্য আর আফগানিস্তান থেকে সওদা করতে আসা কাবুলিওয়ালার ‘ব্যবসায়িক’ দ্বন্দ্ব আবেগ তৈরি করে। ভাঙা ভাঙা বাংলা, হিন্দি মেশানো কথায় আফগানি টান, মাথায় পাগড়ি, চোখে সুর্মা টানা মিঠুন সত্যি সত্যিই কাবুলিওয়ালা। তপন সিংহ পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ ছবিতে যে চরিত্রকে পর্দায় বাঙালির কাছে অমর করে গিয়েছিলেন ছবি বিশ্বাস, সেই চরিত্রকেও অনেক জায়গায় নতুন ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন মিঠুন। বিশেষত, শেষের দিকে যখন রহমত পরিণত মিনিকে দেখে হকচকিয়ে যাচ্ছে, সেই দৃশ্যে মিঠুনকে মনে থাকবে বহু দিন।

৩। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়

ওয়েব সিরিজ়: ইন্দুবালা ভাতের হোটেল

ছবি: সংগৃহীত।

প্রস্থেটিক মেকআপ নিয়ে বৃদ্ধার ভূমিকায় শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় এই প্রথম! পোস্টারে সেই ছবিই ব্যবহার করেছিলেন পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য। তবে কল্লোল লাহিড়ীর চর্চিত উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই সিরিজ়ে শুভশ্রীর অভিনয় সেই চমককে ছাপিয়ে গিয়েছে। তিনটি ভিন্ন সময়কালে গল্পকে ধরা হয়েছে। তাতে মধ্যবয়সি এবং বৃদ্ধা— দুই ‘ইন্দু’ই শুভশ্রী। মধ্যবয়সি ইন্দুবালাকেই বেশি স্মরণীয় করে তুলতে পেরেছেন শুভশ্রী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও গর্ভের সন্তানের তাগিদে জোর করে খাবার খাওয়ার দৃশ্যে তিনি অনবদ্য। মনে থেকে যায় তাঁর পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্যটিও।

৪। পার্থ ভৌমিক

ওয়েব সিরিজ়: আবার প্রলয়

ছবি: সংগৃহীত।

তিনি বিধায়ক। তিনি মন্ত্রীও। আবার তিনি অভিনেতাও বটে। কিছুটা জহুরির মতোই পার্থ ভৌমিককে খুঁজে দর্শকদের সামনে হাজির করেছিলেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। নাটকের মঞ্চ থেকে এলেও পার্থের সহজাত অভিনয় নজর কেড়েছে। ‘আবার প্রলয়’ মূলত শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সিরিজ় হলেও পার্থকে ভোলা কঠিন। তাঁর মুখে ‘হ্যালো স্যার’ মুদ্রাদোষটিই এই সিরিজ়ে তাঁর অন্যতম ‘গুণ’। সিরিজ়ের হাস্যরসের সুতোও তাঁরই হাতে। নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক নাকি ইতিমধ্যেই একাধিক অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে গিয়েছেন। আগামী বছরেও তাঁর উপর নজর রাখবে আনন্দবাজার অনলাইন।

৫। খরাজ মুখোপাধ্যায়

সিনেমা: বগলা মামা যুগ যুগ জিও

ছবি: সংগৃহীত।

চার দশকের কেরিয়ারে এই প্রথম শুরু থেকে শেষ পর্দা জুড়ে তাঁর উপস্থিতি। ছবি বাণিজ্যিক সাফল্যের মুখ না দেখলেও নামভূমিকায় খরাজ মুখোপাধ্যায়কে ভোলা যাবে না। পরিচালক ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় শুরুতেই বলেছিলেন, খরাজ ছাড়া ‘বগলা মামা’ বাস্তবায়িত হত না। ঠিকই বলেছিলেন পরিচালক। এই চরিত্রে পান থেকে চুন খসলেই ‘ভাঁড়ামো’র অভিযোগ উঠতে পারত। কিন্তু ‘বগলা’ চরিত্রটিকে খরাজ নিজের মতো করে গড়েপিটে নিয়েছেন। ফলে ছবি যত এগিয়েছে, খরাজের চরিত্রের সঙ্গে তত বেশি আত্মস্থ হওয়ার অবকাশ তৈরি হয়েছে। হাসি, কান্না, রাগ— খরাজ ব্যতীত বগলা মামাকে ভাবাই যায় না!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement