টেকো, বালা এবং উজড়া চমন
কয়েক মাস আগেই বিনয়-বাদল-দীনেশকে নিয়ে বাংলার তিন প্রযোজনা সংস্থার তরফে ছবি বানানোর হিড়িক উঠেছিল। ‘প্যাডম্যান’ ও ‘ফুল্লু’, ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’ ও ‘মেরে পেয়ারে প্রাইম মিনিস্টার’ ছবিগুলির আইডিয়াগত সাদৃশ্য নজর কেড়েছিল। হিন্দিতে ভগৎ সিংহকে নিয়ে এক সময়ে পরপর ছবি হয়েছে। রাজনৈতিক বা সামাজিক ছবির প্রেক্ষিত তৈরির পিছনে কিছু সমীকরণ কাজ করে। কিন্তু ‘টাক’-এর কী এমন মহিমা, যা তিন পরিচালককেই উদ্বুদ্ধ করল?
নভেম্বরে আসছে হিন্দি ছবি ‘বালা’ ও ‘উজড়া চমন’। মাসের শেষে বাংলা ছবি ‘টেকো’। তিনটির প্রধান চরিত্রের বৈশিষ্ট্য, অসময়ে টাক পড়ে যাওয়া। মাথায় চুল গজানোর জন্য চলে নানা পরীক্ষা।
আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত ‘বালা’ অমর কৌশিকের দ্বিতীয় ছবি। মূল ভাবনা পাভেলের। সব মিলিয়ে ছবিটি নিয়ে আগ্রহ একটু বেশি। এই ছবির ঘোষণা হয়েছিল গত বছরে। তবে দিনকয়েক আগে ট্রেলার বেরোনোর পরে সামনে আসে অভিষেক পাঠকের ছবি ‘উজড়া চমন’, যার মুখ্য চরিত্রে সানি সিংহ। ট্রেলার দু’টির সিকোয়েন্স ও সংলাপে সাদৃশ্য চোখে পড়ার মতো।
পুরুষের টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যা চিরন্তন। মূলধারার ছবিতে এই চরিত্রকে ঘিরে এত আগ্রহ কেন? পাভেল বললেন, ‘‘ছকভাঙা ছবির হাওয়া চলছে। তাই নতুন কনসেপ্টের খোঁজ রয়েছে।’’
পাভেলের এই যুক্তি মানলেও, ‘বালা’র বিরুদ্ধে স্বত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে ‘উজড়া..’র টিম। ‘উজড়া চমন’ ছবিটি কন্নড় ছবি ‘ওনডু মোট্টেয়া কাথে’ (২০১৭)-এর অফিশিয়াল রিমেক। এই ছবির রিলিজ়ের ডেট ঘোষণার পরে ‘বালা’র নির্মাতারা ছবির মুক্তি এগিয়ে আনেন।
এ দিকে, অভিমন্যুর ছবির অনুপ্রেরণা তাঁর বন্ধুদের অভিজ্ঞতা। ‘‘চুল পড়ার সমস্যা থাকায় বিয়ে ভেস্তে যায় এক বন্ধুর। চুল গজানোর ওষুধ ব্যবহার করে অনেক বন্ধু ঠকেওছে। সেখান থেকেই ছবির ভাবনা।’’ গত বছরে শুট হওয়া ছবির মুক্তি হিন্দি ছবি দু’টির মাসেই কেন? ‘‘মাসদুয়েক আগেই রিলিজ়ের কথা ছিল। তবে হল পাওয়া ও আনুষঙ্গিক কারণের জন্য ছবির মুক্তি পিছিয়েছিল,’’ বললেন অভিমন্যু।
প্রসঙ্গত, ‘বালা’র বিরুদ্ধে গল্প চুরির অভিযোগ আগেও উঠেছিল। পরিচালক প্রবীণ মোরছালের দাবি, গল্পটি তাঁর লেখা। যদিও পাভেলের দাবি, তাঁর গল্পের রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল প্রবীণের আগেই। পাভেল আরও বলেন, ‘‘একাধিক প্রোডাকশন হাউসে গল্প শুনিয়েছি। কাছের বন্ধুদের বলেছি। সেখান থেকেও আইডিয়া ছড়িয়ে যায়।’’
সত্যি-মিথ্যে যা-ই হোক, টাক নিয়ে টানাটানির ঘটনায় হ্যারল্ড ব্লুমের ‘অ্যাংজ়াইটি অফ ইনফ্লুয়েন্স’-এর তত্ত্বই শেষ কথা। ওই তত্ত্বে বলা হয়, ‘‘কোনও আইডিয়া অরিজিনাল নয়...’’