গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
প্রযোজনা সংস্থা যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের চুক্তিপত্রে ঠিক কী লেখা ছিল?
মুম্বই পুলিশের আদেশানুসারে ইতিমধ্যেই সুশান্তের সঙ্গে করা চুক্তিপত্র জমা করেছেন যশরাজ। থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল ওই প্রযোজনা সংস্থার কাস্টিং ডিরেক্টর শানু শর্মাকেও। মুম্বই পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যশরাজের সঙ্গে তিনটি ছবি করার কথা ছিল সুশান্তের। ঠিক ছিল, প্রথম ছবির জন্য তাঁকে দেওয়া হবে ৩০ লক্ষ টাকা। যদি সেই ছবি হিট হয় তা হলে দ্বিতীয় ছবির জন্য দেওয়া হবে ৬০ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় ছবি হিট হলে তৃতীয় ছবির জন্য দেওয়া হবে এক কোটি টাকা। ছবি হিট হয়েছে না ফ্লপ, তা ঠিক করবে যশরাজই। যশরাজের সঙ্গে সুশান্ত প্রথম যে ছবিতে অভিনয় করেন তা হল, পরিণীতি চোপড়া অভিনীত ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। চুক্তির কথা মতো যশরাজের তরফে তাঁকে ৩০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
এর পরের ছবি দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সী’। সেই ছবির জন্য সুশান্তকে দেওয়া হয় এক কোটি টাকা। চুক্তির কথামত যেখানে দ্বিতীয় ছবির জন্য ৬০ লক্ষ টাকা নির্ধারিত ছিল সেখানে কেন তাঁকে ৪০ লক্ষ টাকা বেশি দেওয়া হয়েছিল, সে ব্যাপারে সদুত্তর মেলেনি।
আরও পড়ুন- আমিরের সহ-অভিনেতা সব্জি বেচছেন মুম্বইয়ের রাস্তায়!
যশরাজের সঙ্গে সুশান্তের তৃতীয় যে ছবিটি করার কথা ছিল সেই ছবির নাম ‘পানি’। আর এই ‘পানি’ ছবিতেই যত গোলমাল। 'পানি'-র পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পরিচালক শেখর কপূরকে। ‘পানি’ বলে যে একটি ছবি আসছে, তা ঘটা করে ঘোষণাও করা হয় কান চলচ্চিত্র উৎসবে। কিন্তু বাস্তবে সেই ছবি আর কোনওদিনও হয়নি। যশরাজের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল যশরাজের কর্ণধার আদিত্য চোপড়া এবং পরিচালক শেখর কপূরের মধ্যেকার মতবিরোধ। তবে কী নিয়ে ওই দু’জনের মতের বিরোধ হয়েছিল তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। যশরাজের সঙ্গে শেষ ছবি সুশান্তের আর করা হয়নি। পাওয়া হয়নি টাকাও।
এ দিকে যশরাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকার ফলে অন্য কোনও প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজও করতে পারছিলেন না সুশান্ত। এর ফলে একের পর এক হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিল সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘রামলীলা’, ‘বেফিকরে’ সহ বেশ কয়েকটি বিগ-বাজেট ছবি।
আরও পড়ুন: বিনোদকে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি ঢুকতেই রেখাকে চপ্পল খুলে মারতে গিয়েছিলেন শাশুড়ি!
যদিও শেষমেশ নাকি যশরাজের সঙ্গে চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সুশান্ত, এমনটাই পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁর প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী। রিয়া আরও জানান, শুধু নিজেই নয়, সুশান্ত নাকি রিয়াকেও যশরাজের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেছিলেন।
সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে স্বজনপোষণ বিতর্কে বারে বারেই উঠে এসেছে যশরাজ-ধর্ম সহ বলিউডের বড় বড় প্রযোজনা সংস্থার কথা। নেটাগরিকদের এক বিশাল অংশের মতে, সুশান্তের মানসিক অবসাদের পিছনে দায়ী এই সব সংস্থাগুলি। ‘বহিরাগত’ হওয়ায় ইচ্ছে করেই সুশান্তকে ব্রাত্য করে রেখেছিলেন তাঁরা, অভিযোগ এমনটাই। সত্যিই কী তাই? অনুসন্ধান চালাচ্ছে মুম্বই পুলিশ।