Agnidev-Sudipa

বেণুদি শিখিয়েছিলেন, স্বামীর সঙ্গে লড়ে জয়ী হয়ে নয়, ধৈর্য ধরলে সংসার টিকবে: সুদীপা

অগ্নিদেব-সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের দাম্পত্যের বয়স ১৫। স্মৃতিপথে হেঁটে অনেক ভাল লাগা ও মনখারাপের কথা ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী-সঞ্চালিকা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৬:৪৪
Share:
Image Of Agnidev Chatterjee, Sudipa Chatterjee

অগ্নিদেব-সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের ১৫ বছরের দাম্পত্যে পা। ছবি: সংগৃহীত।

মঙ্গলবার অগ্নিদেব-সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের দাম্পত্য ১৫ বছরে পা দিল। সকাল থেকে শুভেচ্ছার বন্যা। আদর, উপহারে ভরিয়ে দিয়েছেন পরিবারের সকলে। তাঁর স্বামীও রয়েছেন তালিকায়। বিশেষ দিনের পরিকল্পনা কী? জানতে সুদীপার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি তখন ছেলে আদিদেবকে স্কুল থেকে নিয়ে ফিরছেন। শুভেচ্ছা জানাতেই অল্প হাসি। বললেন, “শাশুড়ি মা আজ আমাদের পরিবারের সকলকে আমার পছন্দের পাঁচতারা হোটেলে খাওয়াচ্ছেন। সব আমার পছন্দের পদ। যদিও এখনও জানি না কী কী রয়েছে।” অগ্নিদেবের দেওয়া সাদা-কালো সালোয়ার কামিজে সেজে উঠেছেন সুদীপা।

Advertisement

পরিচালক স্বামীর পোশাকেও রংমিলান্তি নিশ্চয়? প্রশ্ন শুনে এ বার দরাজ হাসি। সুদীপার কথায়, “ওর রং সব সময় হয় সাদা, নয় কালো। এই দুই রং ছাড়া অন্য রঙের পোশাক চট করে পরে না। ফলে, না চাইলেও রংমিলান্তি হয়েই যাবে।” সঞ্চালিকাও বরকে উপহার দেবেন। কারুকাজবিহীন বিয়ের আংটি! নতুন করে বাগ্‌দান সারার পথে? সুদীপার মতে, পরিচালক শুধুই তাঁর।

কথা বলতে বলতে ১৫ বছরের দাম্পত্য ফিরে দেখলেন তিনি। গলায় স্মৃতিকাতরতা। বললেন, “জানেন, বিয়ের আগে থেকেই এই সম্পর্ককে মান্যতা দিতে অনেক লড়েছি। সব কিছু এত সহজ ছিল না। সেই সময় বেণুদি মানে সুপ্রিয়া দেবী মায়ের ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি এমন অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন যা মেনে আমার সংসার টিকে গিয়েছে। বেণুদি সব সময় বোঝাতেন, স্বামীর সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হলে কেউ পদক দেবে না। ধৈর্য ধরে, সহ্য করে, বুদ্ধি দিয়ে চললে তবেই সংসার টিকবে।” যেমন? তাঁদের বিয়ের বয়স আর অগ্নিদেব-সুদীপার বয়সের ফারাক এক। পনেরো বছরের বড় স্বামীকে কী বলবেন আর কী বলবেন না বুঝতে পারতেন না সুদীপা। সুপ্রিয়া দেবী তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, “স্বামী কখনও কিছু ভুল করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে বলবে না। এতে অশান্তি বাড়বে। ধর, কোনও দিন অগ্নিদেব বাইরে থেকে খেয়ে ফিরল। তুমি হয়তো রান্না করে ওর অপেক্ষায় ছিলে। সেই রাতে কিছু বলবে না। পরের দিন সকালে অগ্নিদেবের চায়ের সঙ্গে দুটো বিস্কুট খাওয়া হলে বুঝিয়ে বলবে। তখন মাথা ঠান্ডা থাকবে। সব বুঝবে।”

Advertisement

বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপনে সুদীপা চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়, আকাশ চট্টোপাধ্যায়, আদিদেব চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

নিজের বাড়ি থেকেও সেই সময় যথেষ্ট বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন সুদীপা। এক সন্তানের বাবাকে বিয়ে করছেন অর্থের লোভে— এই ধরনের কথা শোনা যাচ্ছিল সেই সময়। কথাটা সুদীপার বাবার কানেও পৌঁছেছিল। তিনি মানসিক ভাবে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিলেন। মেয়েকে ডেকে বলেছিলেন, “তোমাকে তো এ ভাবে মানুষ করিনি। অথচ, তোমার সম্পর্কে এই ধরনের কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে।” প্রায় মাস দুয়েক তিনি সুদীপার সঙ্গে কথা বলেননি। শেষে অগ্নিদেবের বন্ধু ব্রাত্য বসু সুদীপার বাবাকে ডেকে বোঝানোর পরে বাবা-মেয়ের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়।

একে স্বামীর সঙ্গে বয়সের অনেকটা ব্যবধান। তার উপরে এক সন্তানের বাবা। নিজে কতটা দ্বিধায় ভুগেছিলেন? ফের স্মৃতিমেদুর কণ্ঠে তিনি বললেন, “বিয়ের যখন সব ঠিকঠাক হল, তখন জানতে পারি, অগ্নির আগের পক্ষের ছেলে আছে। ওর ঘরে এর আগে এক তরুণের ছবি দেখতাম। ওর এক ভাই বিদেশে থাকেন। আমি ছবির ওই তরুণকে অগ্নির ভাই ভেবেছিলাম। অগ্নিও ভাবতে পারেনি, যে খবর সকলে জানে, সেই খবর আমি জানি না!” তাই সুদীপা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করায় পরিচালকও অবাক হয়ে যান। সঞ্চালিকার মতে, অগ্নিদেবের বড় ছেলে আকাশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা আরও এক বিরাট পর্ব। তবে বর্তমানে তাঁদের সম্পর্ক খুব সহজ। সে-ও তার বাবার বিবাহবার্ষিকীতে সুদীপাকে হাসিমুখে শুভেচ্ছা জানিয়েছে, উপহার দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement