স্টার জলসার ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকে ইতিহাস মেনে তিনি এখন গ্র্যাজুয়েট।
হাতের উপর হাত রাখলেন তাঁরা। কাদম্বিনী আর তাঁর শিক্ষক দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের হল মালাবদল। কাদম্বিনীর জীবনের সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে দিলেন সেই দ্বারকানাথ যিনি একটানা লড়াই করে গিয়েছেন যাতে কাদম্বিনী উচ্চশিক্ষা পেতে পারেন।
কাদম্বিনী ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছিলেন। সেখানেও লড়লেন দ্বারকানাথ ছাত্রীর হয়ে। এন্ট্রান্স দিলেন কাদম্বিনী। পড়লেন। বেথুন কলেজ থেকে পাশ করলেন এফ এ এক্সাম। স্টার জলসার ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকেও ইতিহাস মেনে তিনি এখন গ্র্যাজুয়েট। দর্শক মুগ্ধ কাদম্বিনীর পুরনো মোটিফের শাড়ির পাড়ে, ব্লাউজের সাবেক কাট-এ। আর তাঁর ঝকঝকে তার্কিক মন দেখে।
গ্র্যাজুয়েশনের পরেও কিন্তু ক্ষান্ত নন এই বিদুষী। তিনি যে অন্য ধাতুর তৈরি।
আরও পড়ুন: বিদেশ থেকে মোবাইলে প্রিয় মানুষকে দেখলে কষ্ট হয়, সুরঙ্গনাকে তাই ছবি পাঠাচ্ছি: ঋদ্ধি
আরও উচ্চশিক্ষা চাই। আবার লড়াই। পাশে সেই দ্বারকানাথ। কাদম্বিনী যে এ বার ডাক্তারি পড়তে চান। ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকে মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার হয়ে এলেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে অরবিন্দ দাশগুপ্ত বললেন, “ভাস্বরের মতো অভিনেতা ‘প্রথমা কাদম্বিনী’-তে এল। আশা করি দর্শকের আগ্রহ বাড়বে।”
‘প্রথমা কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকে ডাক্তারের চরিত্রে অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।
তবে ধারাবাহিকে দ্বারকানাথ ও কাদম্বিনী এ বার আর মাস্টারমশাই-ছাত্রী রইলেন না! সতেরো বছরের বড়, বিপত্নীক দ্বারকানাথ বিয়ে করলেন কাদম্বিনীকে। তাঁর ডাক্তারি পড়ার জন্য স্বামী বা বাবার অনুমতি এবং সইয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়ে, নয়তো তাঁর ডাক্তারি পড়া হত না। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসেন দ্বারকানাথ। বিয়ে হয় তাঁদের।
এ যেন রাজযোটক। কেমন করে বিয়ে হবে ধারাবাহিকে? অরবিন্দ দাশগুপ্ত আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, “ব্রাহ্ম মতেই সাধাসিধে ভাবে ওঁদের বিয়ে হয়েছিল। সেটাই ধারাবাহিকে দেখানো হবে। কিন্তু সমাজ মেনে নেয়নি এই বিয়ে। তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতরাও ভাল ভাবে নেননি কাদম্বিনী আর দ্বারকানাথের বিয়েটা। ব্রাহ্ম সমাজের এক জন সদস্যও খোলা মনে আশীর্বাদ করেননি নবদম্পতিকে।’’ বিয়ের ক্ষেত্রেও সেই লড়াই। সেই মেজাজ থাকবে এই ধারাবাহিকেও। ১৮৮৩ সালের এই বিয়ে ব্রাহ্ম মতে সম্পন্ন করেন পণ্ডিত রামকুমার বিদ্যারত্ন।
আরও পড়ুন: ‘এখানে আকাশ নীল’ বন্ধের প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল, আত্মহত্যার হুমকি
এত কিছুর পরেও টিআরপি রেটিং-এ ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ পিছিয়ে কেন? প্রশ্নটা শুনেই অরবিন্দবাবু বলেন, “কিছু ধারাবাহিক টিআরপি-র জন্য তৈরি হয় না। এটা ভাল কাজ। কূটকচালির জায়গা নেই। অতিরিক্ত ড্রামা নেই। আছে ইতিহাস, ধরা আছে তখনকার সমাজ। মানুষ পছন্দ করেছেন। এটাই পাওয়া।”