Puja Release 2024

পুজোয় বাংলার কাছে বলিউড দাঁড়াতে পারল না! টলিউডের পাশে আর কী ভাবে দাঁড়ানো যায়: সৃজিত

১১ বছর ধরে প্রত্যেক পুজোয় তাঁর ছবি। বক্স অফিসের নিরিখে প্রত্যেকটি ছবি ব্লকবাস্টার। ‘টেক্কা’ কি সেই রেকর্ড ধরে রাখল? অনর্গল পরিচালক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫০
Share:

‘টেক্কা’য় বাজিমাত সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র।

নিজেই রেকর্ড গড়ছেন। নিজেই তা ভেঙে নতুন করে আবার গড়ছেন। গত ১১ বছর ধরে এ ভাবেই নিজেকে টেক্কা দেওয়ার খেলায় মেতেছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়! ভক্তেরা অন্তত তেমনই মনে করেন। রহস্য রোমাঞ্চ তাঁর তুরুপের তাস। এই বিষয়টি নিয়ে তিনি বিনোদনের ময়দানে নামলে পুজোমুক্তিই হোক বা বড়দিন, টলিউড সমীহ করে।

Advertisement

গত বছর তাঁর ‘দশম অবতার’ এই প্রজন্মকে প্রেক্ষাগৃহে ছুটে যেতে বাধ্য করেছিল। এ বছর সেই ছবিকে টেক্কা দিয়ে দেব প্রযোজিত ‘টেক্কা’ কি পুজোর ম্যাজিক ধরে রাখতে পারল?

বিজয়া দশমী মানেই এ বারের মতো দুর্গোৎসব শেষ। বাঙালি ছুটি কাটিয়ে কাজে ফিরছে। এমন আবহে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল সৃজিতের সঙ্গে। কী জবাব দিলেন সৃজিত, তা জানার আগে বরং চোখ রাখা যাক গত বছরের পুজোমুক্তির বাণিজ্যিক হিসাবে। বক্স অফিস এবং একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, মুক্তির পর প্রথম তিন দিনেই ২ কোটির উপরে ব্যবসা করেছিল ‘দশম অবতার’। প্রথম পাঁচ দিনে সেই আয় তিন কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এ বছর কেমন চলল পুজোর ছবি ‘টেক্কা’? সৃজিতের কথায়, “সাধারণত, একটি ছবি কয়েক দিন পরে ব্লকবাস্টার হয়। যে হেতু ‘টেক্কা’ সিঙ্গল লোকেশন ছবি, তাই তার বাজেট এতটাই কম যে তার স্যাটেলাইট আয় আর ডিজিটাল আয় ছবি তৈরির বাজেটের থেকে এক কোটি করে মোট দু’কোটি টাকা বেশি। কাজেই বক্স অফিসে যা পাচ্ছে, ছবির স্যাটেলাইট আয় এবং ডিজিটাল আয় মিলিয়ে ছবিটি খুব অল্প সময়েই ব্লকবাস্টার। পাশাপাশি, তিন দিনে বক্স অফিস অনুযায়ী দেড় কোটি টাকা বাণিজ্য করেছে ‘টেক্কা’।”

Advertisement

স্বাভাবিক ভাবেই খুশি সৃজিত। জানালেন, গত ১১ বছর ধরে প্রত্যেক পুজোয় তিনি তাঁর দর্শকদের ছবি উপহার দেন। এখনও পর্যন্ত কোনও বছর অনুরাগীরা তাঁকে নিরাশ করেননি। তাঁর আনন্দ আরও বেড়েছে নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পুজোর ছবি ‘বহুরূপী’ একই ভাবে ভাল ফল করায়। সৃজিতের দাবি, “ওঁরা ওঁদের প্রাপ্য পেয়েছেন।”

এই জায়গা থেকে পাঠকদের মনে কৌতূহল তৈরি হতে পারে, প্রতি দিনের হিসাবে ‘টেক্কা’র ফল কী?

সৃজিতের হিসাব বলছে, শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে ৪০টিরও বেশি শো হাউজ়ফুল! বেলা বেড়েছে। তাল মিলিয়ে হাউজ়ফুল হলের সংখ্যা বেড়ে ১০০ ছুঁয়েছে। কমবেশি একই ধারা রবিবারেও। বিকেলের মধ্যে ৭০টি শো হাউজ়ফুল। পরিচালক জানিয়েছেন, তাঁর আশা, দিনের শেষে এ দিনও হাউজ়ফুল হলের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে যাবে। তবে সিনে বিশ্লেষকদের মত, আসল পরীক্ষা সপ্তাহের প্রথম দিন, সোমবার থেকে। পুজোর আমেজ সরিয়ে বাঙালি কাজে ফিরবে। পরিচালকের যুক্তি, তাতেও ফলাফলে খুব বেশি হেরফের হবে না। কারণ, শারদীয়া মিটলেও পুজোর এখনও বাকি।

এ বারের পুজো আরও একটি কারণে সৃজিতের কাছে মনে রাখার মতো। এ বছর পুজোয় ছবিমুক্তির অনুপাত ৩:২। অর্থাৎ, তিনটি বাংলা ছবি, দু’টি হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এবং সেখানে বাংলার কাছে বলিউড গুনে গুনে গোল খেয়েছে! আলিয়া ভট্টের ‘জিগরা’ বা রাজকুমার রাও-তৃপ্তি দিমরির ‘ভিকি বিদ্যা কা উও ওয়ালা ভিডিয়ো’ দাঁড়াতেই পারেনি ‘টেক্কা’, ‘শাস্ত্রী’ আর ‘বহুরূপী’র কাছে! যার জেরে হিন্দি ছবি সরিয়ে বাংলা ছবিকে জায়গা দিতে বাধ্য হয়েছেন হলমালিকেরা। বিষয়টি সৃজিতকে বলতেই তিনি যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছেন। আবেগ লুকোতে লুকোতে বললেন, “বিশ্বাস করুন, এই একটি বিষয় বাকি সব আনন্দকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এত দিন ধরে বলিউডের হাজারো বায়নাক্কার সঠিক জবাব যেন আমরা দিতে পারলাম।”

তাঁর কথায়, “বেশি সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহ, বেশি শো, একটি মাল্টিপ্লেক্সে একাধিক শো— কতই না অন্যায় আবদার! মার খাচ্ছিলাম আমরা। এ বার উপযুক্ত জবাব পেল বলিউড।” সৃজিতের আরও যোগ, ‘পদাতিক’ মুক্তির সময় শহরের উপর দিয়ে আরজি কর-কাণ্ডের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। দর্শকদের সেই সময় হলমুখো হওয়ার মানসিকতা ছিল না। অথচ তাঁরাই ‘টেক্কা’ দেখতে দলে দলে প্রেক্ষাগৃহ ভরিয়ে দিচ্ছেন!

সৃজিতের তাই পাল্টা প্রশ্ন, “বাংলা ছবির পাশে এর থেকে ভাল আর কী ভাবে দাঁড়ানো যায়?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement