Celebrity Interview

আমি একটা মেয়ে, অন্য ভাবে ছুঁতে এলে বাধা দিতে পারব না, ‘বাউন্সার’ সুরক্ষা দেয়: সৌমিতৃষা

“আমি এই প্রজন্মের হয়েও ডেটিং অ্যাপের প্রেমকে ঠিক মানতে পারিনি। আমার মনে হয়, ডেটিং অ্যাপে কারা থাকে? প্রেম করার জন্য নাকি একটা অ্যাপ!” বললেন অভিনেত্রী।

Advertisement

সম্পিতা দাস

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৯
Share:

মুখোমুখি সৌমিতৃষা কুন্ডু। ছবি: সংগৃহীত।

ছোট পর্দা থেকে তাঁর উত্থান। সেখান থেকে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ। এ বার ওটিটির পর্দায় আসতে চলেছেন সৌমিতৃষা কুন্ডু। এই প্রজন্মের অন্যতম চর্চিত মুখ। তাঁকে নিয়ে দর্শকের উৎসাহ যেমন রয়েছে, তেমনই তাঁর নিন্দকের সংখ্যাও কম নয়। অভিনয় ছাড়াও অবসর সময়ে লেখালিখি করেন। এ ছাড়াও উৎসাহ রয়েছে জ্যোতিষবিদ্যায়। হাত দেখতে পারেন বলেই জানা যায়। তাঁর প্রথম সিরিজ় ‘কালরাত্রি’ মুক্তি পেয়েছে ৬ ডিসেম্বর। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডা দিলেন অভিনেত্রী।

Advertisement

প্রশ্ন: বড় পর্দায় প্রথম কাজ, তা-ও দেবের বিপরীতে। তার পরই ওটিটি বেছে নিলেন কেন?

সৌমিতৃষা: আমার লক্ষ্য কোনও একটি মাধ্যমে নিজেকে আটকে রাখা নয়। আমি এমন এমন চরিত্র করতে চাই, যেখানে আমার অভিনয়ের সুযোগ থাকবে। এবং আমি নিজেকে আবিষ্কার করতে পারব। কোনও মিডিয়ামকে গুরুত্ব দিতে রাজি নই, বরং কেমন চরিত্র করতে পারছি, সেটাতেই নজর।

Advertisement

প্রশ্ন: সিরিয়াল চলাকালীন আড়াই বছর তুমুল ব্যস্ততায় কেটেছে, এখন কি হাতে ফাঁকা সময় রয়েছে কিছুটা?

সৌমিতৃষা: আমি নিজেকে কখনও ছুটি দিই না। কাজ করছি অথবা নিজেকে গ্রুম করছি। আমি কাজের মধ্যে থাকলেই ভাল থাকি। নয়তো বড্ড অবসাদে ভুগতে থাকি।

প্রশ্ন: সৌমিতৃষা সারা দিন ঠিক কী করেন?

সৌমিতৃষা: খুব সাধারণ জীবনযাপন। মাঝে একটু দেরি করে উঠছিলাম। কিন্তু সেটার বদল ঘটিয়েছি। এখন সকালে উঠছি। কার্ডিয়ো করি। তার পর খাই। দুপুরে কোথাও যাওয়ার থাকলে, মিটিং থাকলে, বাইরে খেয়ে নিই। ফিরে এসে মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটাই, কিংবা তিন জনে কোথাও যাই। রাতে একটু লেখালিখি করি।

প্রশ্ন: শুধুই লেখালিখি, না কি বই পড়ার অভ্যেসও আছে?

সৌমিতৃষা: অনেকেই জানেন না, আমি আঁকতে ভালবাসি। যদিও বহু দিন সেটার চর্চা নেই। তবে বই পড়ার সে ভাবে অভ্যেস নেই। আমার পড়ার থেকে অনেক বেশি দেখতে ভাল লাগে, যেমন সিনেমা। আমার জ্যোতিষচর্চা করতে ভাল লাগে। তবে আমার মূলত সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে জানতে ভাল লাগে।

প্রশ্ন: সিরিয়ালে বিপুল সাফল্য ও জনপ্রিয়তা পেলেও বড় পর্দায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজটা কতটা শক্ত?

সৌমিতৃষা: সিরিয়ালের ব্যাপারটা হল যে, সেটা লম্বা সময় ধরে চলে। দর্শক রোজ চরিত্রটাকে দেখতে পায়। সে দিকে সিনেমা খুব জোর চার থেকে পাঁচ সপ্তাহ হলে থাকে। তার পর অন্য নতুন সিনেমা, নতুন মুখ। একটা বা দুটো সিনেমা করে জনপ্রিয়তা পাওয়া সম্ভব নয়। আজকে যাঁরা হিট, তাঁরা প্রচুর সিনেমা করে সেই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। এটা ঠিক যে, সিরিয়ালে জনপ্রিয়তা চটজলদি আসে। কিন্তু তার নেতিবাচক দিকও রয়েছে। রোজ একটাই চরিত্র করে চলেছে, সেই অনুযায়ী অনুশীলনও করছে। হয়তো পাঁচ মিনিটে পাঁচ পাতা মুখস্থ করে ফেলেছে, কিন্তু অভিনয়ে উন্নতি হচ্ছে না। যেমনটা আমার হত। আমি হয়তো সংলাপ খুব তাড়াতাড়ি মুখস্থ করে ফেলতাম। কিন্তু অভিনয়টা খুব সীমিত হয়ে যাচ্ছিল। এখন আমার খুব ভাল লাগছে একটা চরিত্রের কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে পুরোটা নতুন করে তৈরি করা। এতে একটা উদ্দীপনা কাজ করে। সিনেমা ও ওটিটি, এই দুই মাধ্যমে অনেক কাজ করলে তবেই সাফল্য আসবে।

প্রশ্ন: দেবের মতো তারকার সঙ্গে কাজ করলেন। কী শিখলেন?

সৌমিতৃষা: আমি এটাই বুঝেছি, যাঁরা খুব বড় মাপের মানুষ, তাঁরা শুধু নিজেদের উন্নতি নিয়ে চিন্তা করেন। দেবদা এতটা জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরও খুব মাটির কাছাকাছি থাকে। ঠিক সময় সেটে আসে, স্ক্রিপ্ট পড়া প্র্যাকটিস করে। তার কী প্রয়োজন? তবু সে সারা ক্ষণ কাজটা হিট করানোর কথাই ভাবছে। আসলে টিকে থাকতে গেলে, জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে গেলে নিয়মানুবর্তিতা খুব দরকার।

প্রশ্ন: সৌমিতৃষা মানেই তো লম্বা চুল, টানা চোখ। সেই ভাবমূর্তি নিয়ে সচেতন নিশ্চয়ই?

সৌমিতৃষা: সেই ভাবমূর্তি কবেই ভেঙে গিয়েছে। ‘মিঠাই’ তে আমি ‘মিঠি’র চরিত্র করেছি প্রায় সাত-আট মাস। সেখানে ছোট চুল, ইংরেজি বুলি। তাকেও দর্শক কিন্তু গ্রহণ করেছিল। তখনই বুঝেছিলাম, মানুষের নজর সৌমিতৃষার উপর রয়েছে, শুধু মিঠাইয়ের উপর নয়। ‘প্রধান’-এর চরিত্রটা যেমন এক জন শিক্ষিত, মার্জিত, শান্ত মেয়ের। সে ভাবেও কিন্তু দর্শক আমাকে ভালবেসেছেন।

প্রশ্ন: ‘কালরাত্রি’তে চরিত্রটা ঠিক কোথায় আলাদা?

সৌমিতৃষা: প্রথমত দুটো লুক আছে। বিয়ের আগে ও পরে। আলাদা কোনও মেকআপ ছিল না এখানে। সিরিয়ালে আমাদের চড়া মেকআপ থাকে। আসলে অয়নদা (পরিচালক) যখন এই সিদ্ধান্তটা নেয় যে, মেকআপ থাকবে না আমার, তখন অবশ্য একটু রাগ হয়েছিল। জিজ্ঞেস করেছিলেন মা, কেন আমার এ রকম লুক। আসলে আমি সাজতে ভালবাসি। ডাবিংয়ে গিয়ে বড় পর্দায় দেখে বুঝলাম, চরিত্রের জন্য লুক পরিবর্তন প্রয়োজন। শুধু অভিনয় দিয়ে হয় না। কাজল ছাড়া, ভুরু আঁকা ছাড়াও যে পর্দায় ভাল লাগে, এই কাজটা সেই আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। তবে এত কেঁদেছি যে, চোখ ফুলে গিয়েছিল।

প্রশ্ন: কান্না আনার জন্য কী করেন সৌমিতৃষা?

সৌমিতৃষা: গ্লিসারিন তো আছেই। কিন্তু অনেক সময় চোখ লাল হয় না। ঠাকুরের নাম নিয়ে চোখ খুব করে ডলে দিই, তা হলে লাল হয়ে যায়।

প্রশ্ন: নিন্দকেরা বলেন, আপনি অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেতেই চারপাশে নাকি ‘বাউন্সার’-এর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে! বড় তারকাদের নাকি এত নিরাপত্তারক্ষী থাকে না?

সৌমিতৃষা: বাউন্সার রাখা লোকদেখানোর জন্য নয়, কিংবা মারপিট করার জন্য নয়। এক জন অভিনেত্রী বা অভিনেতা, যার অল্পবিস্তর জনপ্রিয়তা আছে, সে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা যদি কেউ চলে আসে সেখানে বা অন্য কোনও সমস্যা হয় কিংবা কোনও মদ্যপ ব্যক্তি চলে এল কাছে... সেই সব কারণেই ‘বাউন্সার’ রাখা। আর বাইরে যখন শো করতে যাই, তখনই বাউন্সার প্রয়োজন হয়। আর যদি কতটা জনপ্রিয় সেই প্রসঙ্গ টানেন, তা হলে সেই ভিডিয়োগুলো দেখতে বলব, যেখানে লোকে এসে জড়িয়ে ধরছে আমাকে। সেটা হোক আমি চাই না, তেমন নয়। কিন্তু নিজের নিরাপত্তার দিক নিজে খেয়াল না রাখলে একটা অঘটন ঘটে গেলে লোকে কিন্তু আমাকে দোষারোপ করতে ছাড়বে না।

প্রশ্ন: কখনও কেউ ছুঁতে চেয়েছে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে?সৌমিতৃষা: ‘প্রধান’-এর মিউজ়িক লঞ্চ অনুষ্ঠান, সেখানে দেবদার প্রচুর অনুরাগী এসেছেন। আমারও কিছু অনুরাগী এসেছেন। সেখানে কিন্তু সবার সঙ্গে গিয়ে গিয়ে দেখা করেছি। কারণ আমি জানতাম, ওখানে কেউ যদি অসাধু উদ্দেশ্যে কিছু করতে আসে, বাউন্সাররা আটকে দিতে পারবেন। অনেকে ভাবেন, আমরা অভিনেত্রী, পর্দায় একে অপরকে ছুঁই, তাই যে খুশি এসে যেন ছুঁতে পারে। আমি যখনই মেয়েদের সঙ্গে ছবি তুলি তাঁদের জড়িয়ে ধরি। কিন্তু এমন হয়েছে, কিছু ছেলে বা কাকুর বয়সি লোক কোমরে হাত দিয়ে দিয়েছে। যদিও সেই অভিজ্ঞতা হয়তো ৫ শতাংশ। আমি তো একটা মেয়ে, আমাকে যদি অন্য রকম ভাবে কেউ ছুঁতে চায় আমি বাধা দিতে পারব না। আমার সঙ্গে যে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন তাঁরাই সেটা করেন। সেই কারণে গার্ড প্রয়োজন।

প্রশ্ন: সিরিয়াল আজকাল এক বছর চললে সেটা অনেক বড় ব্যাপার। এ দিকে এত নতুন মুখ, প্রতিযোগিতা বাড়ছে। পেশা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন?

সৌমিতৃষা: হ্যাঁ, হয়। নিরাপত্তাহীনতা হয়। আমি না হয় যে উপার্জন করছি সেটা খরচ করছি কিংবা অন্য কিছু করছি। কারণ, সংসারের চাপ নেই। একটা সিরিয়াল যদি তিন মাসেই বন্ধ হয়ে যায়, টেকনিশিয়ানেরা যদি কাজ না পান, তাঁদের চলবে কী করে? আমার মনে হয় চ্যানেল কর্তৃপক্ষের একটু রিসার্চ করে দর্শকদের চাহিদাটা বোঝা উচিত। আর প্রতিযোগিতা আগেও ছিল। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে, কী কারণে দর্শক মুখ ফেরাচ্ছেন। জানি, আমাদের টলিউডে হাতগোনা ক’টা চ্যানেল ও প্রযোজনা সংস্থা আছে। সেখানেই কাজ হয়। আমি চাই, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সবাই কাজ পাক। কাউকে যাতে পাঁচ-ছয় মাসের বেশি বসে থাকতে না হয়।

প্রশ্ন: যখন আপনি সিরিয়াল করেছেন, সেই সময় পারিশ্রমিক কেমন ছিল?সৌমিতৃষা: তখন খুবই ভাল ছিল পারিশ্রমিক। আমি তো সবই প্রায় খরচ করে ফেলি। কারণ, আমার শপিং করতে ভাল লাগে।

প্রশ্ন: সিরিয়াল করে ক’টা গাড়ি-বাড়ি করা সম্ভব?

সৌমিতৃষা: ভাল মতোই সব করা সম্ভব। কিন্তু আমার তো দুটো বাড়ি ছিলই, তাই খুব একটা চাপ নিইনি। আর আমি তেমন মানুষ নই যে, যা কিনব সব সমাজমাধ্যমে ছবি দেব। আসলে আমি কী কী করছি, সেটা ব্যক্তিগতই রাখতে চাই।

প্রশ্ন: এই সিরিজ়ের নাম ‘কালরাত্রি’। আপনার জীবনে এমন কোনও রাত কি রয়েছে, যা কাটতেই চায়নি?

সৌমিতৃষা: হ্যাঁ ‘প্রধান’ মুক্তি পাওয়ার আগের রাতটা। স্বপ্নের নায়ক, যাঁকে নিয়ে কত কল্পনা করেছি এক সময়, তাঁর সঙ্গে বড় পর্দা ভাগ করে নেওয়া। এবং নিজেকে প্রথম বার বড় পর্দায় দেখা। সেই রাতে ঘুম হয়নি উত্তেজনায়।

প্রশ্ন: আপনি কখনও সিরিয়ালে ফেরার কথা ভাবেন না?

সৌমিতৃষা: হ্যাঁ, ভাবি তো। কিন্তু সিরিয়ালে অনেকটা সময় দিতে হয়। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা অবধি একটা স্টুডিয়োয় থাকতে হয় এবং সেই কাজটাই করতে হয়। সিরিয়ালের নায়িকার উপর এতটাই চাপ থাকে যে, ওটা করার পাশে দুটো ওটিটি কিংবা একটা সিনেমা করা সম্ভব নয়। আর আমি কোনও কাজকে হালকা ভাবে নিই না। আমি এখন হিরোইন, তাই আমি যা ইচ্ছে করতে পারি, যখন ইচ্ছে তখন বেরিয়ে যাব, এটা করতে পারব না। আমি যখন দেড়-দু’বছর হাতে ফাঁকা সময় পাব, তখন নিশ্চয়ই ভাল গল্প দেখে সিরিয়াল করব।

প্রশ্ন: প্রস্তাব কি আসছে এখনও সিরিয়ালের?

সৌমিতৃষা: হ্যাঁ হ্যাঁ, আসছে। কিন্তু এখনই করছি না। কারণ, এখন সিরিয়াল করলে আমার একটা দায়বদ্ধতা থাকবে। আমার উপর দায়িত্বটা এতটাই বেশি। যাঁরা আমাকে ডাকবেন তাঁরা এই আশা রাখবেন যে, সেটাও ‘মিঠাই’-এর মতো সফল করতে পারব। সেটা আমি হালকা ভাবে নেব না কখনও।

প্রশ্ন: সমাজমাধ্যমে সক্রিয় থাকা ছাড়াও নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখতে কী কী করতে হয়?

সৌমিতৃষা: সমাজমাধ্যমের সাহায্যেই যে নিজেকে প্রাসঙ্গিক রাখা যায়, সেটা মানি না। কারণ, ঐশ্বর্যা রাই কিন্তু অনেক পরে ইনস্টাগ্রামে প্রোফাইল করেছেন। আসলে নিজের প্রকৃত কাজটা করে যেতে হয়। সেটার দ্বারাই আলোচিত হওয়া যায়। আমি সমাজমাধ্যমে আছি। তবে আমার মনে হয়, কিছু জিনিস ব্যক্তিগত থাকাই ভাল। প্রাসঙ্গিক থাকতে সমাজমাধ্যমে সব কিছু উগরে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি আলোচনায় আছি, ভাল ভাল কাজ পাচ্ছি বলে দুটো রিল বানিয়ে আলাদা কোনও ছাপ রাখা যায় না।

প্রশ্ন: এখন তো অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একটা বড় অংশ ব্লগিং করেন...

সৌমিতৃষা: আমি আসলে রোজকার জীবনটা দেখিয়ে দেওয়ায় বিশ্বাসী নই। পর্দায় তো নিজেকে কিছু অংশে দেখাতেই হচ্ছে। পর্দার আড়ালে একটা জীবন থাকা উচিত। আমার মনে হয়, দর্শককে ভাবতে দেওয়া উচিত তারকাদের নিয়ে।

প্রশ্ন: সিরিজ় তো সৌমিতৃষার সংসার বেশ ঝামেলায় থাকছে, কিন্তু আপনার সংসার করার ইচ্ছে রয়েছে?

সৌমিতৃষা: আমি বিয়ে, সংসার, সন্তান... ওই টাইপটা নই হয়তো। ভাল ভাল ব্র্যান্ডের ব্যাগ কিনব, হট চকোলেট খাব, ভাল কাজ করব, এ সবই মাথায় ঘোরে। এখন একটু উড়ু-উড়ুই ভাল আছি।

প্রশ্ন: বাবা-মাকে নিয়ে ঘুরতে যান, সময় কাটান বুঝলাম কিন্তু মনের কথা বলার বিশেষ মানুষ নেই?

সৌমিতৃষা: হয়তো কথাবার্তা বললাম বেশ কিছু দিন। ভাইবও ম্যাচ হল। কিন্তু, ধরো যদি কথা বলতে বলতে মনে হয় যে, ব্যাপারটা এগোবে না, আমি খামোকা সময় নষ্ট করি না।

প্রশ্ন: এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ডেটিং অ্যাপে প্রেম খোঁজে। আপনার তেমন অভিজ্ঞতা আছে?

সৌমিতৃষা: আমি এই প্রজন্মের হয়েও ডেটিং অ্যাপের প্রেমকে ঠিক মানতে পারিনি। ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট থেকে তা-ও কিছু হয়তো হতে পারে। আমার মনে হয়, ডেটিং অ্যাপে কারা থাকে? প্রেম করার জন্য নাকি একটা অ্যাপ! এই ধরনের অ্যাপ মানে তো অপশন। সেখানে বেশি ভাল খুঁজতে গেলেই মুশকিল। তবে সমাজমাধ্যমের খারাপ দিক অনেক। আমার তো মনে হয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটা ভয়ঙ্কর জিনিস। দু’-এক বার কোনও বিষয়ে নিয়ে কথা বললেই, ফোন কিন্তু সেই সম্পর্কিত পোস্ট দেখায়। আমার তো মনে হয়, এআই দেখতে ও শুনতে পায়। মেয়েদের পোশাক বদলানোর সময়ে ফোন উল্টো করে রাখা উচিত।

প্রশ্ন: জীবনসঙ্গী হিসেবে কোনও নায়ককে পছন্দ হয়েছে কখনও?

সৌমিতৃষা: এমন মানুষ চাই না, যে সাফল্য নিতে পারবে না। তাই আমার নায়ক নিয়ে কোনও কল্পনা নেই। কিংবা কোন নির্দিষ্ট পেশার হতে হবে তেমনও নয়। আগে ডাক্তারদের খুব ভাল লাগত। এক বার একটা শোয়ে গিয়ে সেই ভাল লাগার কথা জানাতেই অন্য বিপদ। যত রাজ্যের বিবাহিত ডাক্তার আমায় মেসেজ করতে শুরু করেন। সেটা জানামাত্রই সেই পছন্দ সঙ্গে সঙ্গে ত্যাগ করেছি। এখন মানুষের মতো মানুষ চাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement