ঐশ্বর্যার ‘লুক অ্য়ালাইক’। কেরিয়ারের সূত্রপাতে এটাই ছিল পরিচয়। সঙ্গে গুঞ্জন, এই কারণেই তাঁকে বলিউডে জায়গা পেতে সাহায্য করেছিলেন সলমন খান।
কিন্তু সেই সাফল্য দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারেননি। যেমন দ্রুত পরিচিতি পেয়েছিলেন, তার থেকেও কম সময়ে হারিয়ে যান স্নেহা উল্লাল।
শুধু চেহারা-ই নয়। ঐশ্বর্যার সঙ্গে স্নেহার অন্য় সূত্রেও সম্পর্ক আছে। কর্নাটকের যে জনগোষ্ঠীতে ঐশ্বর্যার জন্ম, সেই তুলু গোষ্ঠীর সঙ্গে পিতৃসূত্রে সম্পর্ক আছে স্নেহারও। তাঁর মা সিন্ধি ।
প্রবাসী ভারতীয় দম্পতির সন্তান স্নেহার জন্ম ওমানের মাসকটে, ১৯৮৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর। ওমানে প্রাথমিক পড়াশোনার পরে স্নেহা মায়ের সঙ্গে চলে আসেন মুম্বই। সেখানেই উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করেন তিনি।
যে সব নবাগতকে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা পেতে সলমন সাহায্য করেছিলেন,তাঁদের মধ্যে স্নেহা একজন। ২০০৫ সালে মুক্তি পায় স্নেহার প্রথম ছবি ‘লাকি: নো টাইম ফর লভ’। প্রথম ছবিতেই সলমনের মতো সুপারস্টারের বিপরীতে অভিনয় করেন স্নেহা।
স্নেহার কাছে যখন প্রথম ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ আসে, তখন তাঁর মায়ের ক্য়ানসারের চিকিৎসা চলছে। কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হয়েই অভিনয় করতে রাজি হন স্নেহা।
ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, চেহারাগত দিক দিয়ে অ্য়াশের সঙ্গে সাদৃশ্য থাকার জন্যই সমলন তাঁকে সুযোগ দিয়েছিলেন। স্নেহার মধ্যে সদ্য ভাঙা প্রেমের ক্ষত প্রশমিত করতে চেয়েছিলেন সল্লু মিয়াঁ।
প্রথম থেকেই স্নেহার পরিচয় হয়ে দাঁড়ায় ঐশ্বর্যার লুক অ্যালাইক হিসেবে। পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এই তুলনা তাঁকে অভিনেত্রী হিসেবে পরিণত হতে সাহায্য করেনি। কিন্তু পরিচিতি এনে দিয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিতে।
স্নেহার দ্বিতীয় ছবি ‘আরিয়ান’ ছিল সলমনের ভাই সোহেল খানের বিপরীতে। কিন্তু বক্স অফিসে সেই ছবি সফল হয়নি। এরপর স্নেহা চলে যান দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে। পর পর বেশ কিছু তেলুগু, তামিল ও কন্নড় ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
২০০৭-এ প্রখ্যাত পরিচালক স্টেগ ডোরের ছবি ‘পাইরেটস ব্লাড’-এ অভিনয়ের কথা ছিল স্নেহার। কিন্তু শেষ অবধি সুযোগ চলে যায় ওমানের অভিনেত্রী মৈনুম আল বালুশির কাছে।
এরপর দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয় করলেও বলিউডে আর ফিরে আসতে পারেননি স্নেহা। ফিল্ম দুনিয়া থেকে কার্যত হারিয়েই যান তিনি। ২০১৫ সালে মুক্তি পায় তাঁর শেষ হিন্দি ছবি ‘বেজুবান ইশক’। তার পর আর কোনও ছবিতেই দেখা যায়নি স্নেহাকে।
এক বার ইন্টারনেটে তাঁর বিয়ের খবর ছড়িয়েছিল। বলা হয়েছিল, যোগেশ পাতিলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছে। কিন্তু পরে এক বিবৃতিতে স্নেহা জানান, কোনওদিন তাঁর বিয়ে হয়নি।
সলমন তাঁকে ব্রেক দিলেও স্নেহার পছন্দের নায়ক অক্ষয় কুমার। প্রিয় নায়িকা করিনা কপূর এবং তৃষা কৃষ্ণণ।
স্নেহা প্রথমে আমিষাশী ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি সম্পূর্ণ নিরামিষাশী হয়ে যান। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি একবার চোখের সামনে ছাগল কাটতে দেখেছিলেন, তারপর থেকে পুরোপুরি ভেজেটারিয়ান হয়ে যান।
বড় পর্দা থেকে হারিয়ে গেলেও কোনও কোনও অনুষ্ঠানে এখনও দেখা যায় স্নেহাকে। সম্প্রতি অভিনয় করছেন ওয়েবসিরিজ ‘এক্সপায়ারি ডেট’-এ। যদিও সেটি এখনও মুক্তি পায়নি।