‘‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে, কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে!’’ রুপোলি দুনিয়ার যত্রতত্র পাতা সেই গোলাপি ফাঁদ। তাই কখনও প্রেম ভাঙে, আবার অতীত সম্পর্কের স্মৃতি মুছে নতুন প্রেম খুঁজে পান তাঁরা। ঠিক যেমনটা হয়েছে অভিনেত্রী সোহিনী সরকার ও গায়ক শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে। দু'জনেই প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন একাধিক বার। দু’জনেরই মন ভেঙেছে। অবশেষে যেন জোড়া লাগল দু'টি হৃদয়। আগামী ১৫ জুলাই শুভ পরিণয় শোভন-সোহিনীর। দেখে নেওয়া যাক তাঁদের প্রেমের যাত্রাপথটিকে।
সোহিনী স্পষ্টবাদী। সম্পর্ক নিয়ে তেমন রাখঢাক নেই তাঁর। তিনি আবেগপ্রবণ। মানুষকে ভালবাসেন। বিশ্বাস করেন। একাধিক বার প্রেম ভেঙেছে তাঁর। তবে শেষমেশ শোভনেই থিতু হচ্ছেন বাংলা সিনেমার চর্চিত এই নায়িকা।
তাঁদের প্রেমের শুরুটা গত বছর যিশু সেনগুপ্তের উদ্যোগে নজরুল মঞ্চে বাইশে শ্রাবণের অনুষ্ঠানে। সেই সময় কাছাকাছি আসেন তাঁরা। শোভনের প্রাক্তন ইমন চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ওই অনুষ্ঠানে আমার চোখের সামনেই ওদের প্রেমটা শুরু।’’ সেই প্রেমই এ বার যেন পরিণতির দিকে।
যদিও সে সময় অভিনেতা রণজয় বিষ্ণুর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন সোহিনী। অন্য দিকে, শোভন ছিলেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্তের সঙ্গে। তার আগে এক সময় গায়িকা ইমন চক্রবর্তী আর শোভন একটা লম্বা সময় সম্পর্কে ছিলেন। সোহিনী গত বছর পুজোর আগেই রণজয়ের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেন। প্রেম ভাঙে স্বস্তিকা-শোভেনেরও।
তার পর থেকেই এই দুই ‘সিঙ্গল’কে নিয়ে টলিপাড়ায় শুরু হয় গুঞ্জন। যদিও তাঁদের মুখে কুলুপ। অবশেষে সোহিনীর জন্মদিন ১ অক্টোবর তাঁদের একান্ত যাপনের ছবি প্রকাশ্যে এনে ফেলেন শোভন। যদিও কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সেই ছবি মুছে দেন। কিন্তু, তত ক্ষণে অবশ্য তাঁদের প্রেমের খবর ছড়িয়ে পড়েছে টলিপাড়ায়।
দু’জনের কেউই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেননি। তবে খুব যে লুকিয়ে রেখেছেন, তেমনও নয়। তার পর সোহিনীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কিংবা একান্ত যাপনের ছবি পোস্ট করেও বার বার মুছে দিয়েছেন শোভন। তবে তাঁদের পোস্ট করা ‘ছায়া ছবি’-তে স্পষ্ট সবটা।
তার পর নতুন বছরের শুরুতেই সুইডেন ঘুরতে যান সোহিনী-শোভন। সেই সময় সাদা বরফের মাঝে দু’জনে আলাদা ভাবে ঘুরতে যাওয়া ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করলেও তত দিনে ব্যপারটা স্পষ্ট। একসঙ্গে শীত উপভোগ করছেন সোহিনী-শোভন।
সুইডেন থেকে ফিরে আসার পরই শোনা যায়, বাগ্দান সেরেছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে সোহিনী বলেছিলেন ‘‘আমার অনামিকায় কোনও আংটি দেখা যাচ্ছে না তো! আসলে হঠাৎ এটা রটে যাওয়ার পর আমার মা ফোন করে জানতে চায়, সত্যিটা কী।’’ কিন্তু শোভনের সঙ্গে কি বিয়ে করার পরিকল্পনা রয়েছে? সোহিনী বলেন, ‘‘চারপাশে অনেক বিয়ে হচ্ছে, ঠিকই। তবে আমার মনে হয়, বিয়ে দেখে বিয়ে করে নেওয়া সাংঘাতিক বিষয়। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাসী। নিশ্চয়ই ভাল কিছু হবে। আসলে আমরা ভাবি যে, আমরা একা একাই সব করছি। কিন্তু, ঈশ্বরের পরিকল্পনা করাই থাকে আমাদের জন্য। আমরা শুধু বাস্তবায়ন করি।’’
একটা সময় একসঙ্গে ছবি দিতে দ্বিধা থাকলেও এখন আর কোনও অসুবিধে নেই। আগামী ১৫ জুলাই ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে শহর থেকে দূরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একটি খামারবাড়িতে আইনি বিয়ে সারবেন তাঁরা।
কখনওই খুব বেশি আড়ম্বর করে বিয়ে করতে চাননি সোহিনী। সেই মতোই কাছের মানুষদের সঙ্গে নিয়ে বিশেষ এই দিনটা উদ্যাপন করবেন। বিয়ের পরের দিনই হবে ঘরোয়া বৌভাত। তবে শীতকালে ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুবান্ধবদের জন্য রিসেপশনের পার্টি দেবেন বলেই শোনা যাচ্ছে।
সোহিনী- শোভন দু’জনেই বাঙালি খাবার ভালবাসেন। সেই কারণেই বিয়েতে চিংড়ি, মটন থেকে মিষ্টি দই, সবই থাকছে। বিয়ের দিন বেনারসিতেই সাজবেন সোহিনী। ধুতি-পাঞ্জাবি পরবেন শোভন।
বিয়েতে শোভন কি তাঁর ‘প্রিয়তমা’র জন্য কোনও গান বাঁধবেন? সেটা এখনও সিক্রেট। তবে শোনা যাচ্ছ, বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমায় নাকি গোয়ায় যাবেন তাঁরা।
রাত পোহালেই নিজেদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করবেন গায়ক-নায়িকা। এ ভাবেই প্রেমে থাকুন যুগল, শুভেচ্ছা আনন্দবাজার অনলাইনের।