সলমনের মেজাজ সম্পর্কে সিনেমা জগতের প্রায় সকলেই ওয়াকিবহাল। আবার এটাও কারও অজানা নয়, যে কোনও মুহূর্তে যে কাউকে আপন করে নিতে পারেন ভাইজান।
সলমনের এই দুটো বৈশিষ্ট্যই কপালে ভাঁজ ফেলেছিল রণধীর কপূরের বড় ভাই রাজীব কপূরের। তাঁর ছবির নায়িকা বাঁচাতে এতটাই মরিয়া হয়ে পড়েছিলেন যে প্রকাশ্যে কাশ্মীরের এক রেস্তরাঁয় বড়সড় লড়াইও হয়ে ছিল তাঁদের।
বলিউডের বড় লড়াইগুলোর মধ্যে এটা অন্যতম। লড়াইয়ে রাজীবের উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল। কিন্তু এই লড়াই নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে।
সলমন খান বলিউডে তখন নতুন পা রেখেছেন। ‘সনম বেওয়াফা’ নামে একটি ছবির শ্যুটিংয়ের জন্য কাশ্মীরে গিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে ছবিটি মুক্তি পায়। ছবির নায়িকা ছিলেন চাঁদনী।
সে সময় কাশ্মীরে আরও একটি ছবির শ্যুটিং চলছিল। ঋষি কপূর ওই ছবির মুখ্য চরিত্র ছিলেন। তাঁর বিপরীতে ছিলেন জেবা বখতিয়ার।
এই ছবির নাম ছিল ‘হিনা’। সলমনের ছবির শ্যুটিং যেখানে চলছিল তার একেবারে কাছেই ‘হিনা’র শ্যুটিং চলছিল।
কপূর পরিবারের সঙ্গে সলমনের বাবা সেলিম খানের সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। সেই কারণে শ্যুটিংয়ের ফাঁকে ঋষি কপূরের সঙ্গে দেখা করতে যান সলমন।
‘হিনা’র শ্যুটিং সেটে ঋষির পাশাপাশি রাজীব এবং রণধীর কপূরের সঙ্গেও পরিচয় হয় সলমনের। তাঁরাও সেখানে ছিলেন। কারণ ‘হিনা’র পরিচালক ছিলেন রণধীর এবং প্রযোজক ছিলেন রাজীব।
ছবির নায়িকা জেবার সঙ্গেও সলমনের পরিচয় করিয়ে দেন ঋষি। প্রথম দেখাতেই জেবাকে পছন্দ হয়ে যায় সলমনের।
যত দিন সলমন কাশ্মীরে ছিলেন জেবার সঙ্গে প্রায় রোজই দেখা করতেন। বিষয়টি একেবারেই ভাল ভাবে নেননি রাজীব। তাঁদের রসায়ন ছবিতে প্রভাব ফেলুক এটা একেবারেই চাইছিলেন না তিনি।
জেবাকে এক বার নৈশভোজের নিমন্ত্রণ জানিয়ে ফেলেন সলমন। জেবাও খুশি মনে আমন্ত্রণে সায় দেন। দু’জনে কাশ্মীরের এক রেস্তরাঁয় খেতে যান। জেবার সঙ্গে তাঁর মা-ও ছিলেন।
এটা জানতে পেয়ে রাজীবও ওই রেস্তরাঁয় গিয়ে হাজির হন। সলমন এবং জেবার ঠিক পাশের টেবিলেই বসেন এবং সারা ক্ষণ সলমনের দিকেই তাঁর নজর আটকে ছিল।
অত্যন্ত বিরক্ত এবং রাগে উঠে গিয়ে রাজীবের সঙ্গে কথা কাটাকাটি জুড়ে দেন সলমন। রাজীবও পাল্টা কথা শোনাতে থাকেন সলমনকে।
ক্রমে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে যায় যে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে যায়। দুই তারকাকে রেস্তরাঁর মধ্যে লড়তে দেখে ভিড় জমে গিয়েছিল সেখানে।
কোনওক্রমে জেবা এবং তাঁর মা মিলে দু’জনকে হাতাহাতি আটকান। সলমন রাগে নিজের হোটেলে ফিরে যান।
জেবা, তাঁর মা এবং রাজীবও নিজের হোটেলের ঘরে ফিরে যান। এর পর সলমন আর জেবার সঙ্গে ওই কয়েক দিন যোগাযোগ রাখেননি। জেবাও নিজের কাজে মন দেন।
রাজীবের উদ্দেশ্য সফল হয়। শ্যুটিং ভাল ভাবে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এই ঘটনা চেপে রাখা যায়নি। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসে সলমন-রাজীবের লড়াইয়ের খবর। সেখানেও একে অপরকে একহাত নেন দু’জনে।