(বাঁ দিকে) সইফ আলি খান এবং শরিফুল ইসলাম (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
তদন্তের স্বার্থে ধৃত শরিফুল ইসলাম শেহাজাদকে বলিউড তারকা সইফ আলি খানের বাড়ি নিয়ে যেতে পারে মুম্বই পুলিশ। সাইফের উপর হামলার অভিযোগে গত রবিবার বান্দ্রা আদালতে পেশ করানো হয় ধৃত শরিফুলকে। কিন্তু সে দিনই তাঁর আইনজীবী সন্দীপ শেরানি দাবি করেছিলেন, পুলিশের হাতে এমন কোনও নথি নেই, যাতে প্রমাণ হয় ধৃত আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। তবে সোমবার মুম্বই পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, ধৃত শরিফুল যে আদতে বাংলাদেশি নাগরিক, তার প্রমাণ তারা পেয়েছে। ইতিমধ্যেই সে দেশে ধৃতের এক আত্মীয়ের সঙ্গেও কথা বলা গিয়েছে।
এর আগেই মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার ডিসিপি (জো়ন ৯) দীক্ষিত গেদাম জানিয়েছিলেন, শরিফুল গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে মুম্বইয়ে বসবাস করছিলেন। তাঁর কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের কোনও নথি পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রায় সাত মাস আগে মেঘালয়ের কাছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ডাউকি নদী পার হয়ে এ দেশে ঢুকেছিলেন শরিফুল। তারপর তিনি চলে আসেন পশ্চিমবঙ্গে। এ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা ঘুরে কাজের সন্ধানে চলে যান মুম্বই। পুলিশ সূত্রে দাবি, কয়েক সপ্তাহ পশ্চিমবঙ্গে থেকে আধার কার্ড তৈরির চেষ্টা করেছিলেন শরিফুল ওরফে বিজয় দাস। তবে সে চেষ্টা তাঁর সফল হয়নি। কিন্তু, একটি ভারতীয় সিম কার্ড কেনেন। পুলিশের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এক মহিলার নামে ওই সিমকার্ড হাতে পান শরিফুল।
মুম্বইয়ে গিয়ে একের পর এক কাজের সন্ধান করতে থাকেন সইফ কাণ্ডে দ্রুত শরিফুল। তিনি সেই সমস্ত জায়গাতেই কাজের সন্ধান করতেন, যেখানে নাগরিকত্ব প্রমাণের কোনও নথি প্রয়োজন হতো না। এ বিষয়ে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন অমিত পান্ডে নামে এক ঠিকাদার।
পুলিশের দাবি, গত কয়েক মাসে একাধিকবার ওই সিম থেকে বাংলাদেশের একাধিক নম্বরে ফোন করা হয়েছে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শরিফুল একাধিক অ্যাপও ব্যবহার করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা তাঁকে পরিবারের সঙ্গে ফের যোগাযোগ করতে বলে। তখনই বাংলাদেশের নাগরিক, শরিফুলের এক ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয় পুলিশের। দাবি, শরিফুলের বাংলাদেশের নাগরিকত্বের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, শরিফুল সে দেশে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর দুই ভাই রয়েছেন। কাজের সন্ধানেই এ দেশে চলে এসেছিলেন তিনি।
পুলিশের দাবি, সইফের বাড়ি ঢোকার আগে বান্দ্রা এলাকায় আরও এক তারকার বাংলোর সামনে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। চুরির উদ্দেশ্যেই শরিফুল সেখানে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও সফল হননি। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।