আট বছরের অভিনেত্রী কেরিয়ারে এটাই ছিল ‘ড্রিম প্রজেক্ট’। শুটিংও সম্পূর্ণ। কিন্তু স্বপ্নের সেই কাজ থেকেই কি বাদ পড়তে চেলেছেন রিয়া? সুশান্তকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে সে রকমই দাবি উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সম্প্রতি রিয়া কাজ করেছেন রুমি জাফরির পরিচালনায় ‘চেহরে’ ছবিতে। তাঁর বিপরীতে এ ছবিতে আছেন অমিতাভ বচ্চন, ইমরান হশমী এবং ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি উঠেছে, এই ছবি থেকে বাদ দেওয়া হোক অভিনেত্রীকে।
অনেকে তো এও পোস্ট করেছেন যে ‘চেহরে’ থেকে রিয়াকে বাদ না দিলে তাঁরা এই ছবি বয়কট করবেন। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, রিয়াকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবছেন না পরিচালক জাফরি।
রুমির বক্তব্য, ছবিতে রিয়ার ভূমিকা খুবই ছোট। তিনি বিতর্কের অংশ হওয়ার আগেই এই ছবিতে অভিনয় শেষ করেছিলেন। ফলে রিয়ার পরিবর্তে অন্য অভিনেত্রীকে দিয়ে নতুন করে শুটিং করানো বা রিয়ার চরিত্রটি বাদ দেওয়া, কোনও কিছুই করা হবে না।
সুশান্তকাণ্ডে রিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন রুমি। বলেছেন, তিনি এমন কিছু করবেন না, যাতে ইন্ডাস্ট্রির কাছে রিয়াকে খারিজ করে দেওয়ার সঙ্কেত পৌঁছয়। রুমি মনে করেন, লড়াকু রিয়া সহজে হার মানবেন না। যত ক্ষণ না ন্যায়বিচার পাওয়া যায়, তত ক্ষণ তিনি লড়বেন।
রুমি জাফরি ছিলেন সুশান্তের বন্ধু। নিজের ছবিতে সুশান্তের কথাতেই রিয়াকে সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি।
ছোট ভূমিকায় অভিনয় হলেও এই ছবিটি ঘিরে অনেক প্রত্যাশা ছিল রিয়ার। কারণ এই প্রথম তিনি অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকার সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। এর আগে তাঁর কেরিয়ারে সে ভাবে কোনও ছবি সুপারহিট হয়নি।
২০১২ সালে অভিনয় জীবন শুরু রিয়ার। তেলুগু ছবি ‘তুনেগা তুনেগা’-য় তাঁকে দেখা গিয়েছিল নিধির চরিত্রে। পরের বছর রিয়ার আত্মপ্রকাশ বলিউডে। ‘মেরে ড্যাড কি মারুতি’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
রিয়ার পরের ছবি ‘সোনালি কেবল’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৪-এ। এই ছবিতে মূল ভূমিকায় ছিলেন তিনি। অনুপম খের, সানন্দ কিরকিরের মতো অভিনেতার সঙ্গে এ ছবিতে তিনি স্ক্রিন শেয়ার করেন।
তার পরের দু’বছর কোনও ছবিতে সুযোগ পাননি রিয়া। অভিনয় করেছিলেন টেলিভিশন সিরিজে। ২০১৭-এ ‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’ ছবিতে তাঁকে দেখা যায় অংশিকা চরিত্রে।
এর পর ‘ব্যাঙ্ক চোর’, ‘জলেবি’, ‘দোবারা: সি ইউ ইভিল’-এর মতো কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু কোনওটাই তাঁকে অভিনেত্রী হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি।
এই পরিস্থিতিতে রিয়ার অনেক আশা ‘চেহরে’ ছবি নিয়ে। কিন্তু সুশান্ত সিংহ রাজপুতের রহস্যমৃত্যুতে তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় আপাতত রিয়ার কেরিয়ারের উত্তরণ বিশ বাঁও জলে।
সুশান্ত মামলা বিহার থেকে মুম্বইয়ে সরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন রিয়া চক্রবর্তী। বুধবার ছিল সেই মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিন। বিহার পুলিশ, মুম্বই পুলিশ এবং মহারাষ্ট্র সরকার— এই তিন পক্ষের কৌঁসুলির উপস্থিতিতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে শুনানি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব পক্ষের বক্তব্য লিখিত ভাবে জানাতে হবে। পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার, ১৩ অগস্ট।
ইতিমধ্যেই অভিনেত্রীর দু’টি ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। শুধু রিয়াই নন, তাঁর ভাই শৌভিক এবং বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীর মোবাইল ফোনও নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তারা। ইডি-র তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের কললিস্ট খতিয়ে দেখা হবে। ফোন ছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে চক্রবর্তী পরিবারের দু’টি ল্যাপটপ এবং দু’টি আইপ্যাডও। সব ক’টি গ্যাজেটই ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে খবর।
সুশান্তের মৃত্যুর আগে পরে মহেশ ভট্টকে ফোনের তথ্য পাওয়ার পরে এ বার আরও বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে। সুশান্তের মৃত্যুর আগে এবং পরে রিয়া ‘এইউ (AU)’ নামক এক ব্যক্তিকে ফোন করেছিলেন। ট্রু-কলারে তাঁর নাম দেখা যাচ্ছে ‘এইউ (AU)’ । যাঁকে মোট ৪৪ বার ফোন করেছেন রিয়া। আর ইনকামিং কল হয়েছে ১৭ বার। কে এই ‘এইউ ’? সিবিআই রিয়ার ‘এইউ’ কে খুঁজছে।