আগে কোথা থেকে কী ধরনের টাকা আসছে বোঝাই যেত না। কর্পোরেট জমানায় টাকার বৈধ উৎস দেখা গেল বলে জানান অভিষেক। ফাইল চিত্র
মুম্বইয়ের চলচ্চিত্র শিল্পের নিজস্বতা তো শুরু থেকেই নেই! ‘বলিউড’ একটি ধার করা শব্দ, দাবি অভিষেক শর্মার। ‘হলিউড’ থেকে এই শব্দের আগমন, অতএব নামেই গড়বড় বলে মনে করছেন ‘রাম সেতু’-র পরিচালক।
‘ছবির দুনিয়ায় কর্পোরেট কালচার’— এই বিষয় নিয়ে সম্প্রতি একটি আলোচনার অনুষ্ঠান চলছিল গোয়াতে। সেখানেই বক্তব্য রাখলেন অভিষেক। কর্পোরেট দুনিয়া কি ছবির জগতে কোনও বদল আনতে পেরেছে? জানতে চাওয়া হয়েছিল পরিচালকের কাছে। অভিষেক বললেন, “ইন্ডাস্ট্রিতে কর্পোরেটদের হস্তক্ষেপ সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ বলে মনে করি। অন্তত চেকগুলো ভাঙিয়ে নগদ টাকা পাওয়া যায়।”
অভিষেক আরও একটু বুঝিয়ে বললেন, “আসলে আগে কোথা থেকে কী ধরনের টাকা আসছে বোঝাই যেত না। কর্পোরেট জমানায় টাকার বৈধ উৎস দেখা গেল। ছবির পিছনে যত টাকা বিনিয়োগ হয়, তার হিসাব থাকে এখন।”
অভিষেক আরও জানান, অনিল অম্বানীর রিলায়্যান্স আসার পর বিজ্ঞাপনের ল্যাবগুলিও প্রাণ পেয়েছে। ২০০৬ সালে প্রথম বার দুই অঙ্কের কোটি টাকা প্রস্তাব করা গিয়েছিল তারকাদের। আর এখন তাঁরা ভাবেন আরও কত বাড়ানো যায়!
এর পরই প্রশ্ন তোলেন ইন্ডাস্ট্রির মৌলিক অস্তিত্ব নিয়ে। আদৌ কি গর্বের জায়গায় আছে এই ছবির দুনিয়া? আর ছবির দুনিয়াই যখন ভাবা হচ্ছে, তখন দেশের হয় বড় করে নয় কেন? মুম্বই চলচ্চিত্র শিল্পকে পশ্চিমি চলচ্চিত্র শিল্প হলিউডের অনুকরণে একটি নাম দিয়ে ফেলা কি খুব প্রয়োজনীয় ছিল? ভাবাতে চাইলেন অভিষেক।
তাঁর কথায়, “বিদেশি সাংবাদিকের সেই জোক সত্যি হয়ে গিয়েছিল। কী শুনতে কী শুনেছিলেন, ‘হলিউড’ থেকে হয়েছিল ‘বলিউড’। সেটিই চলছে। এখানে মৌলিক কিছু আশা করা কি ঠিক হবে? দেশের মাটিতে নিজেদের ধারণায়, নিজেদের তৈরি করা ইন্ডাস্ট্রি এটা নয়। আমাদের ভাবার সময় হয়েছে। ব্যক্তিগত লাভ-লোকসান ছেড়ে আমাদের ভাবা উচিত এই ইন্ডাস্ট্রির ভাল কী ভাবে হয়। তাই না?”
২০১০ সালে ‘তেরে বিন লাদেন’ ছবি দিয়ে পরিচালনায় আসেন অভিষেক। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তাঁর ‘রাম সেতু’। দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের যোগস্থাপনে তৎপর সেই ছবিতে প্রত্নতাত্ত্বিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার।