‘একা বাবা’কে বেশি লড়তে হয়
বাবা-ই তার চুল আঁচড়ে বিনুনি বেঁধে দেন। মন খারাপ করলে দোলা দেন দোলনায় বসিয়ে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এ ভাবেই বাবা ‘নির্মল মণ্ডল’কে পেয়ে আসছে তাঁর আদরের ‘বুড়ি’! শৌভিক কুণ্ডুর দ্বিতীয় ছবি ‘আয় খুকু আয়’-এ এক সঙ্গে প্রথম দিনের শ্যুট থেকে কী ভাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে পেয়ে এসেছেন দিতিপ্রিয়া রায়? এই কৌতূহল সবার। ছবির শীর্ষ সঙ্গীত আয় খুকু আয় গানে কিছুটা তার আভাস মিলেছে। সেখানে পর্দার বাইরেও তাঁর ‘পর্দার মেয়ে’কে সোহাগে-শাসনে সামলাতে দেখা গিয়েছে ‘বুম্বাদা’কে। গানে তো অবশ্যই।
আনন্দবাজার অনলাইন সে কথা জানতে চাইতেই অবশেষে অকপট ছোট পর্দার ‘রানিমা’। বললেন, ‘‘শ্যুটের আগে অনেক কথা আমিও শুনেছিলাম বুম্বা মামুকে নিয়ে। তাই নিয়ে চাপও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কাজ করতে গিয়ে দেখলাম, ওই মানুষটিই সবচেয়ে সহজ। সব পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেন। সহ-অভিনেতাদের এক বারের জন্যও বুঝতে দেন না, তিনি অত বড় মাপের তারকা।’’ পর্দার রসায়ন তাই পর্দার বাইরেও ছাপ ফেলেছে। ছবির প্রচারে প্রসেনজিৎ সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘সপরিবারে চলে এসেছি আপনাদের কাছে। এই যে, আমার সঙ্গে আমার মেয়ে।’’
দিতিপ্রিয়ার দাবি, কাজ করতে করতে একটা সময় এমনও বোঝাপড়া তৈরি হয়ে গিয়েছিল যে তাঁর খিদে পেলে বা মেজাজ বিগড়ে গেলে সবার আগে টের পেতেন তাঁর ‘পর্দার বাবা’। শ্যুট থামিয়ে জানতে চাইতেন, ‘‘খিদে পেয়েছে? কী খাবি?’’ দিতিপ্রিয়া বুঝতে না পারলে আফশোস করে বলতেন, ‘‘সেটাও আমায় বুঝতে হবে!’’ তার পরেই হয়তো পিৎজার অর্ডার দিতেন। এ ভাবে প্রতি মুহূর্তে তাঁর ‘ছোট্ট খুকু’কে কখনও বুঝতে দেননি, সে ‘টলিউডের স্তম্ভ’-র সঙ্গে কাজ করছে। দরকারে সেলফি তুলে দিয়েও মন ভাল করে দিয়েছেন সহ-অভিনেত্রীর।
৮ মে আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস। পর্দায় মেয়েকে ছোট থেকে বড় করে বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন নির্মল। দিতিপ্রিয়ার কী মনে হল, একা মায়ের মতোই একা বাবার লড়াইটাও কঠিন? স্বতঃস্ফূর্ত জবাব এ বার, ‘‘আমার মনে হয়েছে একা মায়ের থেকেও এক বাবার লড়াই বেশি কঠিন। মায়ের সঙ্গে বিশেষ করে মেয়েরা অনেক কথা, অনেক অনুভূতি ভাগ করে নিতে পারে। বাবাকে সে সব বলা মুশকিল। কিন্তু এই ছবিতে সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখাবেন এক একা বাবা। মাতৃ দিবসে মায়েদের পাশাপাশি তাই নির্মল মণ্ডলকেও আমার কুর্নিশ।’’