Mosharraf Karim

Mosharraf Karim: বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে উৎসুক, তবু ইদে বিষণ্ণ মোশারফ করিম

বর্তমানে ঢাকার বাসিন্দা হলেও মোশারফ করিমের গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পিঙ্গলকাঠিতে। ইদের সময়টা বরাবর সেখানেই কাটাতেন তিনি। শ্যুটিং সেরে বিখ্যাত অভিনেতা মোশারফ করিম গ্রামে পা দিলেই গাঁয়ের ছেলে 'শামীম'। ওটাই যে তাঁর ডাকনাম!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২২ ১২:৩৪
Share:

আজও ইদে মোশারফকে টানে ছেলেবেলার গ্রাম।

মায়ের শরীর খারাপ বলে এ বার‌ও ইদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হল না মোশারফ করিমের। করোনা এবং নানা কারণে চার বছর গ্রামে যেতে পারেননি তিনি। উৎসব-মুখর বাংলাদেশে ইদের সময়ে তাই তাঁর মন খারাপ।

বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা মোশারফ করিম এখন পশ্চিমবঙ্গেও খ্যাতিমান। বর্তমানে ঢাকার বাসিন্দা হলেও মোশারফ করিমের গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পিঙ্গলকাঠিতে। ইদের সময়টা বরাবর সেখানেই কাটাতেন তিনি। শ্যুটিং সেরে বিখ্যাত অভিনেতা মোশারফ করিম গ্রামে পা দিলেই হয়ে যেতেন গাঁয়ের ছেলে 'শামীম'। ওটাই যে তাঁর ডাকনাম!

বাংলাদেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে মোশারফ বলেছেন, "আমার কাছে ইদের আনন্দ মানেই গ্রাম। ২০০৮ সাল থেকে অভিনয় জীবনে ব্যস্ততা এসেছে। ইদের ছুটির আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানা শ্যুটিং করতে হত। তার পর ছুটতাম গ্রামে। ইদের দিন পৌঁছেছি, এমন‌ও হয়েছে। তবু পিঙ্গলকাঠিতে আমার যাওয়া লাগবেই। আমি জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়ে আনন্দ পাই। ইদ এলেই যেন ভিতর থেকে কেউ আমার অবচেতন মনকে মনে করিয়ে দেয়, গ্রামে যেতেই হবে। চেষ্টা করি অন্তত একটি ইদে যাব। সেটাও আর হয়ে উঠছে না।"

Advertisement

অভিনয়ের কাজে টানা ব্যস্ততা মোশারফের।

ই‌দের সময়ে মোশারফ করিমের মনে পড়ে বাবা মোশারফ হোসেনের কথা। ছোটবেলায় ইদের সময়ে বাবার সঙ্গে ঘুরে বেড়াতেন। কিছুতেই পিছু ছাড়তেন না। ইদের নতুন পাঞ্জাবি ছিল বিরাট আকর্ষণ। কখন মাপ নেওয়া হবে, কখন বানানো হবে- এই নিয়ে থাকত এক দারুণ উত্তেজনা! সে সময়ে বাড়ির পাশে বয়ে যাওয়া আড়িয়াল খাঁ নদীতে খুব সকালে স্নান করে নিতেন ইদের দিন। এই চার বছর ঢাকায় ইদের সকালে স্নান করার সময় সেই নদী মনে হানা দেয়। মন আকুল হয়ে ওঠে তাঁর।

মোশারফ করিমকে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের প্রবল উন্মাদনা চলে সর্বত্র। নিজের গ্রামে তেমন কিছু হয়? বিনয়ী মোশারফ জানিয়েছেন, "ইদের আগে শ্যুটিংয়ের এমন চাপ থাকত যে, ছুটির অবকাশে বাড়িতে গেলে এমনিতেই ক্লান্তি লাগত। কিন্তু তেমন অবসর পেতাম না। গ্রামের মানুষের পাশাপাশি দূরদূরান্তের জেলা থেকে দল বেঁধে মানুষ আসতেন দেখা করার জন্য। কেউ ছবি তুলতে চান। কেউ কথা বলতে চান। অনেকেই পছন্দের খাবার রান্না করে নিয়ে আসতেন। মজার ব্যাপার হল, এই যে আমি চার বছর ইদে বাড়ি যেতে পারছি না, তবু আমার গ্রামের বাড়িতে মানুষ ভিড় করেন। কিন্তু যখন তাঁরা শোনেন যে তাঁদের ছেলে এবার গ্রামে আসেনি, হতাশ হয়ে ফিরে যান। কষ্ট পাই। ভালবাসার মানুষদের হতাশ করতে ইচ্ছা করে না।"

মন খারাপের গলায় মোশারফ করিম বলেছেন, "নাগরিক ব্যস্ততায় গ্রামে এখন সে ভাবে ফিরতে পারি না। তবু উৎসবের দিনগুলো পিঙ্গলকাঠিতেই কাটাতে ইচ্ছা করে আমার। কারণ এখানেই আমি পুরোপুরি নিজেকে খুঁজে পাই। এখানেই আমি ফিরে পাই কিশোর শামীমকে।"

পিঙ্গলকাঠিতে মোশারফ করিমের বাড়ি এখন খালিই পড়ে থাকে। কিন্তু শিল্পীর মন জুড়ে সারাক্ষণ থাকে ছেলেবেলার বন্ধুদল, প্রিয় সব গাছেরা। আর আড়িয়াল খাঁ নদী। যেখানে পড়ে আছে তাঁর ভালবাসা ও সাঁতারের চিহ্ন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement