‘মেরি কম’-এর চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা।
শুরু থেকেই বিতর্কে ছিল ‘মেরি কম’। অলিম্পিক মেডেলজয়ী মহিলা বক্সার মেরি কমের জীবনীচিত্র। ২০১৪ সালের ওই ছবিতে মণিপুরের ভূমিকন্যার চরিত্রে কেন পর্দায় আসবেন উত্তর ভারতীয় প্রিয়ঙ্কা চোপড়া? কেনই বা নেওয়া হল না উত্তর পূর্ব ভারতের কোনও অভিনেত্রীকে? চর্চা থেকে সমালোচনা কম হয়নি। উঠেছিল শ্রেণিবৈষম্যের অভিযোগও। এত কাল বাদে তা নিয়ে মুখ খুললেন প্রিয়ঙ্কা নিজেই।
‘মেরি কম’-এর চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে ছেড়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। ছবির ঝুলিতে জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি প্রিয়ঙ্কা নিজেও জিতে নিয়েছিলেন অজস্র শিরোপা। জল ঢেলে দিয়েছিলেন সব বিতর্কে। ছবি মুক্তির আট বছর পরে সদ্য এক সাক্ষাৎকারে ‘মেরি কম’ নিয়ে সরব হলেন ‘পি সি’।
প্রিয়ঙ্কা অকপটে বলেছেন, “মেরি কমের চরিত্রে বাছাই করা উচিত ছিল উত্তর পূর্ব ভারতেরই কোনও অভিনেত্রীকে। কিন্তু প্রস্তাব এল আমার কাছে। গোটা দেশের কাছে উদাহরণ হয়ে ওঠা এমন এক জন লড়াকু খেলোয়াড়ের চরিত্র। কতটা পারব, তা নিয়ে আমারই সংশয় ছিল অনেকটা। কিন্তু এমন চরিত্রে অভিনয় করার লোভও সামলাতে পারিনি!”
মণিপুরের হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসে বক্সিংয়ে নিজের রাজ্য তথা দেশকে এনে দেওয়া অজস্র সম্মান— ঘোর বাস্তবে রূপকথার মতোই বক্সার মেরি কমের জীবন। পরিচালক উমং কুমার সেই স্বপ্নের সফরকেই তুলে এনেছিলেন পর্দায়। সমাজের সঙ্গে, অভাবের সঙ্গে, বঞ্চনার সঙ্গে, খেলার দুনিয়ার নানা ওঠাপড়ার সঙ্গে বুক চিতিয়ে লড়াই করা মেরিকে পর্দায় ঠিক মতো ফুটিয়ে তোলাই ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। প্রিয়ঙ্কার জন্য তো আরওই। দু’জনের চেহারা থেকে সামাজিক অবস্থান, জীবনযাপন, পেশা— সবেতেই যে বিস্তর ফারাক!
বক্সিং শেখা থেকে মেরির লড়াইয়ের হাল হকিকত বুঝে নেওয়া— পাঁচ মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। নিজের শরীর, চেহারাকে বক্সার হওয়ার উপযোগী করে তুলতেও হয়েছে। মেরির বাড়িতে তাঁর সঙ্গে, তাঁর পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। যাতে বক্সারের পাশাপাশি মানুষ মেরিকেও চিনতে পারেন, বুঝতে পারেন তাঁর সব কিছু। মেরির দেখানো পথেই নিজেকে ঘষেমেজে পর্দায় হাজির হয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। বাকিটা বুঝে নিয়েছেন দর্শক। বলিউড নায়িকা থেকে পর্দায় রক্তমাংসের ‘মেরি কম’ হয়ে ওঠা ‘পিগি চপস’কে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন অনুরাগীরা।
কিন্তু ‘মেরি কম’-এর মুক্তির এত বছর বাদে কেন নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিলেন প্রিয়ঙ্কা। সে উত্তর মেলেনি।