প্রসেনজিৎ, গার্গী ও বিক্রম ফাইল চিত্র।
ঋণ— দু’ অক্ষরের একটি শব্দ, কিন্তু তার বোঝা কম নয়। জীবনপথে চলতে-চলতে আর্থিক ঋণের বাইরেও কত রকম ঋণ থেকে যায় মানুষের। এই ঋণকে কেন্দ্র করেই মনস্তত্ত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবেন অতনু ঘোষ, তাঁর পরবর্তী ছবি ‘শেষ পাতা’য়। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করবেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, গার্গী রায়চৌধুরী, বিক্রম চট্টোপাধ্যায় ও রায়তী ভট্টাচার্য। ‘ময়ূরাক্ষী’ ও ‘রবিবার’-এর পরে ফের অতনুর সঙ্গে কাজ করবেন প্রসেনজিৎ। অভিনেতা বললেন, ‘‘অতনুর সঙ্গে এই নিয়ে তিনটি ছবিতে কাজ করছি। ওঁর স্টোরি টেলিং অন্য রকমের। গল্পে আমি বাল্মীকি নামে এক লেখকের চরিত্রে, যার এক সময়ে বেশ নামডাক ছিল। কিন্তু তার জীবনেও অনেক ঘটনা ঘটে যায়... চরিত্র নিয়ে খুব বেশি এখনই বলতে পারব না। তবে এটুকু বলতে পারি, এমন চরিত্রে আমি আগে অভিনয় করিনি। ভারতীয় সিনেমাতেও এমন চরিত্র খুব কম তৈরি হয়েছে।’’ এখন মুম্বইয়ে আছেন অভিনেতা। সেখানে কাজের ফাঁকেই চলছে ছবির প্রস্তুতি। সময় পেলেই পরিচালকের সঙ্গে জ়ুম কলে নতুন ছবি নিয়ে সেশনও চলছে।
আগে একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায় পরিচালকও বেশ নিশ্চিন্ত। অতনুর কথায়, ‘‘উনি (প্রসেনজিৎ) সব সময়ে কমফর্ট জ়োন ভেঙে নতুন ধারার কাজ করতে উৎসাহী। চরিত্র নিয়ে, ছবি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষায় আগ্রহী। সেটাই আমায় বরাবর টানে ওঁর দিকে। এই ছবির গল্পে ওঁর চরিত্রটাও একদম অন্য রকম। ছবির গল্প আবর্তিত হবে ঋণকে কেন্দ্র করে। আমরা কারও কাছে যেমন ঋণী, তেমনই অনেকে আমাদের কাছেও ঋণী। আর এই দুই প্রেক্ষিতেই মানুষের ভিন্ন সত্তা প্রকাশ পায়। সেটাই ছবির গল্পে চারটি চরিত্রের মনন ও তাদের যাপনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।’’
ছবিতে মেধার চরিত্রে দেখা যাবে গার্গীকে। চিত্রনাট্য পড়ে নতুন চরিত্রের জন্য নিজেকে তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছেন। গার্গীর কথায়, ‘‘এমন অনেক মানুষ আছে, যাকে হয়তো আমরা খিটখিটে, কিপটে... এ ভাবে চিনি, কিন্তু সেই মানুষটির অন্তরের আলো দেখাবে এ ছবি। এমনই একজন মানুষের বাড়িতে লেখালিখির কাজ নিয়ে আসে মেধা। সেই চরিত্রে রয়েছি আমি। ছবিতে আমার লুকটা একদম নতুন।’’ আর একটা চমকও আছে। ছবিতে নিজের কণ্ঠে গান গাইবেন গার্গী।
এ রকম একটা ছবিতে সুযোগ পেয়ে বিক্রমও উত্তেজিত। প্রায় সাড়ে তিন বছর পরে ছবির শুটিং করবেন তিনি। অভিনেতার কথায়, ‘‘একে এত বছর পরে ছবির কাজ, তার উপরে অতনুদার মতো পরিচালক, এত ভাল কাস্টিং... সব মিলিয়ে খুব ভাল লাগছে। এখন শুধু শুটিং শুরুর অপেক্ষায়। আমার চরিত্রটাও ইন্টারেস্টিং।’’ ছবিতে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে শৌনকের চরিত্রে দেখা যাবে বিক্রমকে। তার বাবা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করত, কিন্তু প্রায় ছ’সাত বছর তার কাজ নেই। তার ছোট ভাই রয়েছে। ফলে সংসারের দায়িত্ব শৌনকের কাঁধে। দীপার সঙ্গে শৌনকের প্রেম। তাদের জার্নিটাও তুলে ধরা হবে গল্পে। ছবিতে দীপার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে নাট্যমঞ্চের পরিচিত মুখ রায়তী ভট্টাচার্যকে।
সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হবে ছবির শুটিং। কলকাতা, শ্রীরামপুর, শান্তিপুরে শুটিং হওয়ার কথা রয়েছে। তবে শুটিংস্পটের রেকি এখনও চলছে। যেহেতু অতিমারির মধ্যে শুটিং, তাই প্রযোজনা সংস্থাকেও পরিকল্পনা করে এগোতে হচ্ছে। ছবির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসানের কথায়, ‘‘অতিমারির মধ্যে এমন বিষয় তুলে ধরতে চাই, যা সিনেমাপ্রেমীদের মনের খোরাক জোগাবে। অতনুর সঙ্গে এটা আমাদের চতুর্থ কাজ। আশা করি, এই ছবিটিও ‘ময়ূরাক্ষী’-র মতোই দর্শকের মন ছুঁয়ে যাবে।’’