রুক্মিণী ,উষশী ও শুভশ্রী
পয়লা, কিন্তু একলা নয়! জানেন বাংলা বিনোদন দুনিয়ার তারকারাও। তাই পয়লা বৈশাখে তাঁরা যা করছেন, সবান্ধবে। যেমন, শ্যুট থাকলে সেটেই বাকি সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে হইহই। সেখানেই পাত পেড়ে খাওয়া। খুনসুটি, হুল্লোড়ে মাতা। একই সঙ্গে বছরের প্রথম দিন কাজও হল। কারও উদযাপন ইংরেজি নববর্ষের মতোই আগাম শুরু হয়ে গিয়েছে। শ্যুট না থাকলে কেউ বেরিয়ে পড়ছেন সবান্ধবে। কেউ বা ব্যস্ত তাঁর নতুন ছবির প্রচারে।
রুক্মিণী মৈত্রের কথাই ধরুন। ২৯ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে নায়িকার নতুন ছবি ‘কিশমিশ’। ছবিতে তিনি দর্শকদের কাছে ধরা দেবেন চার রকম সাজে। নতুন বছরে সামনে আসছে ছবির তৃতীয় গান ‘কান্না’। এ দিন কলকাতার একটি প্রথম সারির মলে ফের একজোট টিম ‘কিশমিশ’। থাকবেন রুক্মিণীও। দিনের প্রথম ভাগ দর্শক-অনুরাগী, টিমের সঙ্গে প্রচারে। দ্বিতীয় ভাগে কী করবেন অভিনেত্রী? তাঁর কথায়, ‘‘সবাই দুপুরে মহাভোজ সেরেছেন। সব ঠিক থাকলে সেটা রাতে সারব আমি। সেখানেও কিশমিশ থাকবে!’’
রুক্মিণী কিশমিশ দিয়ে বাসন্তী পোলাও খেতে বড্ড ভালবাসেন। নববর্ষে তাঁর পছন্দের সব পদ নায়িকার মা নিজে হাতে রাঁধবেন। নৈশভোজে থাকবে সর্ষে ইলিশ, চিংড়ির মালাইকারি, পাঁঠার মাংস, চাটনি, পায়েস। তখন কি বাঙালিনী বেশে রুক্মিণী? ‘ককপিট’-এর অভিনেত্রীর দাবি, ‘‘প্রত্যেক পদে বাঙালিয়ানা। তার পরেও আমায় সেজে বাঙালি হতে হবে!’’ সপরিবারে দেবী থাকবেন, দেবও থাকবেন নিশ্চয়ই? এ বারেও হাসিতেই ঢাকা উত্তর। রুক্মিণী থাকবেন, দেব থাকবেন না, হয় নাকি?
ইংরেজি নববর্ষের মতোই আগের রাত থেকে উদযাপন শুরু ঋষভ বসুর। নতুন বছরে নতুন ধুতি-পাঞ্জাবির পাশাপাশি উপহারও পেয়েছেন। পয়লা বৈশাখের আগের সন্ধেয় হইচই প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে তাঁর সিরিজ ‘শ্রীকান্ত’। প্রকাশ্যে এসেছে পরিচালক সৌমিক হালদারের প্রথম সিরিজ ‘মহাভারত মার্ডারস’-এর প্রথম লুক। সামনে এসেছে ‘ভটভটি’ ছবির পোস্টার। তিন বছর অপেক্ষার পর অবশেষে ছবির পোস্টার প্রকাশ্যে এল, দাবি ঋষভের। খুশি খুশি মন তাঁর।
সুদীপ-অনিন্দিতা ও ঋষভ
‘শ্রীকান্ত’ মুক্তি পেয়েই সাড়া ফেলেছে এই প্রজন্মের মধ্যে। সিরিজের ‘শ্রীকান্ত’ বলেছেন, ‘‘বাঙালির আবেগ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের এই চরিত্র। তাই ভয়ে ভয়ে ছিলাম। সিরিজ দেখে এই প্রজন্মের বহু জন জানিয়েছেন, তাঁরা এ বার দু’মলাটে শ্রীকান্তকে জানবেন।’’ সেই উপলক্ষেই রাতভর পার্টি। ঋষভ পাক্কা ‘বাঙালিবাবু’ ধুতি-পাঞ্জাবিতে। পয়লা বৈশাখের দিন তিনি কাজে নেই। আড্ডায় আছেন। বাড়িতে বন্ধুরা আসবেন। ভাল-মন্দ বাঙালি পদ থাকবে। পরনে পাঞ্জাবিও থাকবে। অভিনেতার কথায়, উৎসব জমাতে আর কী চাই?
ঊষসী কিন্তু সক্কাল থেকেই ছুটির মেজাজে। ‘কোনও কাজ নয় আজ সারা দিন শুধু হাসি গান’ মনে মনে ভাঁজতে ভাঁজতে উপস্থিত পাড়ার পয়লা বৈশাখের বিশেষ অনুষ্ঠানে। পরনে লালপাড় সাদা জমিনের শাড়ি। সালঙ্কারা ঊষসী পাত পেড়ে খেয়েছেন পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ ভাজা, ভর্তা। সঙ্গে লঙ্কা, পেঁয়াজ। এর পরেই যাবেন কলেজ স্ট্রিট, বই পাড়ায়। সেখানের এক প্রকাশনা সংস্থা থেকে এ বছরের বইমেলায় বই বেরিয়েছে তাঁর। কলেজ স্ট্রিট মানেই প্যারামাউন্টের সরবত। সন্ধের মধ্যেই বাড়িতে চলে আসবেন। সঙ্গ দিতে আসবেন কাছের বন্ধুরা। গান, আবৃত্তি, আড্ডা ছাড়া বৈঠকী মজলিশ জমে? সে সবও থাকবে। থাকবে জম্পেশ নৈশভোজ।
শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ঘোর সংসারী। তাই বছরের প্রথম দিন বাড়িতে। পরিবারের সঙ্গে। সম্ভবত নতুন ছবির শ্যুট শুরুও করে দিয়েছেন। তবে এ দিন কোনও কাজ রাখেননি। স্বামী রাজ চক্রবর্তী আগেই জানিয়েছিলেন, শাড়িতে সেজে উঠবেন তাঁর ‘পরিণীতা’। সঙ্গে মানানসই গয়না। রাজ বরাবর পাঞ্জাবিতে স্বচ্ছন্দ। এ দিনও সেই পোশাকেই তিনি। গত বছরের মতো এ বছরও রাজের দিদি, বোন তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাড়িতে। শুভশ্রীর আমন্ত্রণে। দুপুরে সুক্তো, ডাল, ভাজা, তরকারি, মাছ, মাংস, চাটনি, মিষ্টির এলাহি আয়োজন। সন্ধেয় গান-বাজনার বৈঠকী আসর।
নতুন বিয়ে সুদীপ সরকার-অনিন্দিতা রায়চৌধুরীর। একসঙ্গে প্রথম নববর্ষ। দিন জমে ক্ষীর? সুদীপের কথায়, ‘‘বউ রাতে শ্যুট করছে, আমি দিনে। তাই একসঙ্গে কাটানো হচ্ছে কই! তবে দুপুরের বাঙালি ভোজে মিলেছি আমরা।’’ সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন অনিন্দিতার মা-বাবা। সর্ষে ইলিশ, চিংড়ি, মাংস- কব্জি ডুবিয়ে খেয়েছেন। অনিন্দিতা তার পরেই রওনা দিয়েছেন ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কর্ণ সুবর্ণের গুপ্তধন’-এর সেটে। নববর্ষেও রাতে শ্যুট তার। সুদীপ তাঁর নিজের সেটে।