পেত্রাতোস (বাঁ দিকে) গোল করলেও লাভ হল না মোহনবাগানের। ছবি: সমাজমাধ্যম।
গোয়া ২ (ব্রাইসন-২)
মোহনবাগান ১ (পেত্রাতোস-পেনাল্টি)
২৮ সেপ্টেম্বর শেষ বার বেঙ্গালুরুর কাছে মোহনবাগান হেরেছিল ০-৩ গোলে। তার পর আবার আইএসএলে হারতে হল মোহনবাগানকে। শুক্রবার গোয়ার কাছে তাদেরই মাঠে ১-২ গোলে হেরে গেল মোহনবাগান। আরও একটা অ্যাওয়ে ম্যাচে হারতে হল সবুজ-মেরুনকে। গোয়ার হয়ে জোড়া গোল করলেন ব্রাইসন ফের্নান্দেস। মোহনবাগানের একমাত্র গোল দিমিত্রি পেত্রাতোসের।
অসি স্ট্রাইকারের চোট পেয়ে উঠে যাওয়াই কাল হল মোহনবাগানের। গোল করার পরেই মাঠ থেকে উঠে যান তিনি। প্রথমে মনে হয়েছিল এটি কোচের কৌশল। পরে রিজ়ার্ভ বেঞ্চে পেত্রাতোসের শুশ্রূষা দেখে চোট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পেত্রাতোস না থাকায় বল বাড়ানোর কেউ ছিল না। হেরে গিয়ে ১২ ম্যাচে ২৬ পয়েন্টেই থাকল মোহনবাগান। সমসংখ্যক ম্য়াচে দু’পয়েন্ট পিছনে বেঙ্গালুরু। আরও দু’পয়েন্ট পিছনে তৃতীয় স্থানে গোয়া।
পেত্রাতোসের উঠে যাওয়া
যত ক্ষণ মাঠে ছিলেন খুব একটা খারাপ খেলেননি। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি আদায় করলেন। গোলও করলেন। তিন মিনিট পরেই সেই পেত্রাতোসকে তুলে নিলেন কোচ হোসে মোলিনা। মাথা নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন পেত্রাতোস। সাইডলাইন পেরনোর পর কোচের উদ্দেশে কিছু বললেনও। তখন মনে করা হয়েছিল গোল পাওয়ার পরেই তুলে নেওয়ায় খুশি হতে পারেননি অসি স্ট্রাইকার। তবে কয়েক মিনিট পরেই বোঝা গেল অন্য ব্যাপার। রিজ়ার্ভ বেঞ্চে বসে থাকার সময় পেত্রাতোসের পায়ে বরফের প্যাকেট বাঁধতে দেখা গেল। প্রশ্ন উঠেছে, পেত্রাতোস কি চোট পেয়েছেন? গ্রেগ স্টুয়ার্ট এমনিতেই ফিট নন। পেত্রাতোসও চোট পেলে মোলিনার কপালে চিন্তার ভাঁজ নিঃসন্দেহে বাড়বে।
দু’টি গোলেই বোরহার ভূমিকা
কলকাতায় এসে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে প্রাক্তন দলকে জবাব দিয়েছিলেন স্পেনীয় বোরহা। দেখা গেল, মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও কম যান না। শুক্রবার গোয়ার দু’টি গোলই এল তাঁর জন্য। ব্রাইসন ফের্নান্দেসের দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই পাস বাড়ালেন তিনি। গোল হয়তো খুব বেশি করেন না। কিন্তু মাঝমাঠে বোরহার প্রভাব অনস্বীকার্য। তিনি যেমন খেলা তৈরি করেন তেমনই নীচে নেমে দলকে রক্ষণেও সাহায্য করেন। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত কেন যে বোরহাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন সেটা তিনিই বলতে পারবেন। ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান অবস্থায় যেন আরও বেশি করে বোরহার মতো খেলোয়াড়ের অভাব অনুভূত হচ্ছে। শুক্রবারের খেলা দেখে লাল-হলুদ সমর্থকেরা হাত কামড়াতে পারেন।
হতাশ করলেন আশিস
রাইট ব্যাকে মোহনবাগানের বিকল্প এমনিতেই কম। সে রকমই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় খেলতে নেমে হতাশ করলেন আশিস। তাঁকে ৮০ মিনিট পর্যন্ত মাঠে রাখা হলেও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন। অনেকগুলি মুভ নষ্ট হয়েছে তাঁর জন্য। গোয়ার দ্বিতীয় গোলের ক্ষেত্রেও দায়ী তিনি। ব্রাইসন যে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেটা খেয়ালই করেননি তিনি। ফাঁকায় হেড করে যান গোয়ার ফুটবলার। আশিসের সেই সময় আরও ভেতরে ঢোকা উচিত ছিল। এ ছাড়া গোয়ার ফুটবলারদের আটকাতে হিমশিম খেতে হয় আশিসকে। বাঁ দিক থেকে বরিস সিংহ ব্যস্ত রেখেছিলেন তাঁকে।
মোলিনার কৌশলে প্রশ্ন
পেত্রাতোস চোট পেয়ে উঠে যাওয়ার পর জেসন কামিংসকে তাঁর জায়গায় নামালেন মোলিনা। কিন্তু কামিংস মোটেই খেলা তৈরি করার ফুটবলার নন। তিনি গোল করতে পারদর্শী। ফল যা হওয়ার তাই হল। মাঠে আধ ঘণ্টা খুঁজেই পাওয়া গেল না কামিংসকে। বল না পেয়ে একা হয়ে গেলে জেমি ম্যাকলারেনও। দু’-একটি সুযোগ তৈরি করলেও বাকি সময়টা নিষ্প্রভই ছিলেন। রাইট উইংয়ে মনবীর সিংহও কিছু করতে পারেননি। বরং নজর কাড়লেন সাহাল সামাদ। মোহনবাগানের গোলের একটু আগেই তাঁর শট থেকে প্রায় গোল হয়েই গিয়েছিল। গোয়া ম্যাচ থেকে এটুকু বোঝা গিয়েছে, বল বিতরণ করার কেউ না থাকলে মোহনবাগান চাপে পড়বে।