শাহরুখ খানের নতুন ছবি নিয়ে কাশ্মীরেও উন্মাদনা। — ফাইল ছবি।
ভূস্বর্গ কাশ্মীরে অকালবসন্ত! প্রায় সাড়ে তিন দশক পর আবার দর্শকবোঝাই প্রেক্ষাগৃহে চলছে শাহরুখ খানের পাঠান। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, তিন দশক বন্ধ থাকার পর গত বছর কাশ্মীরে সিনেমা হল খুলেছে। পাঠানের সৌজন্যে সিনেমা হলের সামনে লাগানো বোর্ড, হাউসফুল! কিন্তু এই দৃশ্য শেষ কবে দেখা গিয়েছে, মনে করতে পারছেন না উপত্যকার সিনেমাপ্রেমীরাও।
১৯৮০ নাগাদ কাশ্মীরে প্রায় এক ডজন সিনেমা হল (সিঙ্গল স্ক্রিন) ছিল। কিন্তু জঙ্গি হুমকির মুখে সব ক’টি সিনেমা হলই বন্ধ করে দিতে হয়। ১৯৯০-এর শেষ দিকে কাশ্মীরে আবার সিনেমা হল খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয় ঠিকই কিন্তু ১৯৯৯-এ শ্রীনগরের লালচকে ‘রিগাল সিনেমা’য় জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলা তাতে বাদ সাধে। যদিও হুমকি উপেক্ষা করেই ‘নীলম’ এবং ‘ব্রডওয়ে’ নামে দু’টি সিনেমা হল চলছিল। কিন্তু তাতে দর্শক আসতেন না। ফলে একটা সময় ওই দুটি প্রেক্ষাগৃহও বন্ধ করে দিতে হয়। কাশ্মীর উপত্যকায় কার্যত ব্রাত্য হয়ে যান বলিউড, হলিউডের তারকারা। ২০২২-এ আবার প্রেক্ষাগৃহ খোলে। চলছিল কোনও রকমে। কিন্তু পাঠান সমস্ত বাঁধ যেন এক ধাক্কায় ভেঙে দিল। জনাকীর্ণ প্রেক্ষাগৃহে আবার জনপ্লাবন। এসআরকে ভক্তদের স্লোগানে আবার চেনা বাতাস বইছে কাশ্মীরের অলিতে গলিতে।
সিনেমা ভক্ত মহম্মদ ইকবাল শেষ কবে যে সিনেমা হলের সামনে ‘হাউসফুল’ বোর্ড দেখেছিলেন অনেক ভেবে মনে করতে পারলেন। তিনি বলছেন, ‘‘৩৪ বছর আগে শেষ বার সিনেমা হলের সামনে হাউসফুল বোর্ড দেখেছিলাম। মনে পড়ছে, শেষ বার ১৯৮৯-য়ে ‘খৈয়াম সিনেমা’য় সানি দেওলের ‘ত্রিদেব’ ছবি চলাকালীন হাউসফুল হয়েছিল।’’
কিন্তু পাঠানের সৌজন্যে আবার বসন্ত ফিরেছে কাশ্মীরের সিনেমা হলগুলিতে। কাশ্মীরের একমাত্র মাল্টিপ্লেক্সের মালিক বিকাশ ধর কাশ্মীরে শাহরুখের ছবি নিয়ে উন্মাদনা দেখে অভিভূত। তিনি বলেন, ‘‘আমার ধারণা ছিল না, কাশ্মীরে শাহরুখ খানের এত ভক্ত আছে! প্রথম দিনের সব শো হাউসফুল হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন সাতটি শোয়ের মধ্যে পাঁচটিই হাউসফুল।’’ সূত্রের খবর, প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে বিকাশের মাল্টিপ্লেক্সের দু’টি শোয়ে কম দর্শক ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল। বাদামিবাগ এলাকায় তাঁর মাল্টিপ্লেক্সে মোট তিনটি স্ক্রিন বা পর্দা। মোট বসতে পারেন ৫২০ জন দর্শক।
শাহরুখের পাঠানের চাহিদা এমনই যে প্রথমে জানা গিয়েছিল, একসঙ্গে পাঁচ হাজারটি পর্দায় মুক্তি পাবে। কিন্তু পরবর্তী কালে তা বেড়ে হয় সাড়ে ৮ হাজার। তার মধ্যেই একটি কাশ্মীরের একমাত্র মাল্টিপ্লেক্সে।