Paoli Dam

Paoli Dam: আমার স্বামী বউকে নিয়ে গুঞ্জন উপভোগ করে, সাদা শার্টের চর্চিত ছবি ওরই বাছাই: পাওলি

ভরা শীতে ছবি দিয়ে উষ্ণতা ছড়ালেন পাওলি! সামনেই হিন্দি সিরিজ-মুক্তি, অর্জুন কী বলছেন?

Advertisement

উপালি মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:৫৬
Share:

অর্জুনের সঙ্গে পাওলি।

জাতীয় স্তরের ওয়েব প্ল্যাটফর্মের কড়া নির্দেশ, বিতর্কিত কোনও সাক্ষাৎকার নয়। কিন্তু পাওলি দাম মুখ খুললে ‘এক্সক্লুসিভ’ শব্দটা বসেই যায়! ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মার্ডার’-এর মতো সাহসী সিরিজ। শবনম সাক্সেনার মতো চরিত্র। তার ঠিক আগেই ইনস্টাগ্রামে স্বচ্ছ সাদা শার্টে, বক্ষভাঁজে বহুমূল্য নেকলেসের আড়াল টেনে নায়িকার সাহসী ছবি! আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে কি ধরা দিলেন কৃষ্ণকলি সুন্দরী?

Advertisement

প্রশ্ন: আগে সাহসী ছবি তার পরেই সাহসী সিরিজের ঘোষণা, দর্শক-অনুরাগীরা পাওলিময়!

পাওলি: (হা হা হাসি) কোনওটাই পরিকল্পিত নয়। ডিসেম্বরে ফটোশ্যুট করেছিলাম। নতুন বছরে ভাবলাম, অনুরাগীদের কী উপহার দিই? তখনই ঠিক হল কয়েকটি ছবি পোস্ট করব। এক রাশ ছবি দিয়ে অর্জুনকে বসিয়ে দিয়েছিলাম। ওর মারাত্মক চোখ। কয়েকটি বেছে দিল। সেগুলোই পোস্ট করলাম। শুনলাম, ছবিগুলো নাকি চর্চায়? অর্জুন বরাবর আমায় এ ভাবেই এগিয়ে দেয়। জানে, স্ত্রী অভিনেত্রী। বোঝে, কী ভাবে তাকে অনুরাগীদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তবে সেটা যে নতুন সিরিজের পটভূমিকা তৈরি করে দেবে এটা সত্যিই ভাবিনি।

Advertisement


প্রশ্ন: স্বামী নয় সাহায্য করেছেন, ভিকি রাই কী করেছেন? কেন ওর মৃত্যুদণ্ড চাইছেন?

পাওলি: (উত্তেজিত স্বরে) কী করেনি? খুব খারাপ ভিকি। বাবা ছত্তিশগড়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জগন্নাথ রাই। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছেলে। ওর চোখে অভিনেত্রীরা পণ্য। সুযোগ পেলেই তাঁদের যথেষ্ট ‘ব্যবহার’ করে সে। সেই অন্যায়ের শিকার বলিউড অভিনেত্রী শবনম সাক্সেনা। একা শবনম নন, এর আগে ভিকি অনাথ আশ্রমের দুই মেয়েকেও ধর্ষণ করেছে! এর ফাঁসি চাইব না?


প্রশ্ন: আপনি শবনমকে চেনেন?

পাওলি: খুব ভাল মতো চিনি। তিগমাংশু ধুলিয়ার আগামী সিরিজ ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মার্ডার’-এ ভিকি, শবনম সবাই আছেন। আমিও আছি। শবনম চরিত্রে (হাসি)।

তিগমাংশু ধুলিয়ার সঙ্গে কাজ করলেন পাওলি।

প্রশ্ন: এই প্রথম হিন্দি সিরিজে?

পাওলি: না না! এর আগে ‘কালী’ করেছি, দ্বি ভাষিক সেটি। এটি দ্বিতীয় সিরিজ। ৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেতে চলেছে ডিজনি-হটস্টারে। প্রযোজনায় অজয় দেবগণ। আমার সঙ্গে এক ঝাঁক তারকা আছেন। আশুতোষ রানা, রঘুবীর যাদব, রিচা চাড্ডা, প্রতীক গান্ধী। বিকাশ স্বরূপের বেস্টসেলার ‘সিক্স সাসপেক্টস’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে।


প্রশ্ন: কী ভাবে ডাক এল?

পাওলি: পরিচালক তিগমাংশু সরাসরি আমায় ফোন করেছিলেন। জানালেন, সিরিজ বানাতে চলেছেন। আমায় শবনম চরিত্রের জন্য ভেবেছেন। আমি কি তিগমাংশুর সঙ্গে কাজ করতে রাজি? এই ডাক কেউ ফেরায়! এক কথায় ‘হ্যাঁ’ বলে দিই। এর পরে প্রযোজনা সংস্থার পক্ষ থেকে আমার তারিখ নেওয়া হয়। চরিত্র, কাজের নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে শুনলাম, কাস্টিং ডিরেক্টর মুকেশ ছাবড়াও নাকি আমার নাম বলেছিলেন।


প্রশ্ন: ‘হেট স্টোরি’, ‘অঙ্কুর অরোরা মার্ডার কেস’, ‘বুলবুল’-এ অভিনয় তা হলে কাজে এল?

পাওলি: তিগমাংশু কিন্তু শুধুই বলিউডে আমার কাজ দেখেননি। মুখোমুখি বসতেই একের পর এক বাংলা ছবির নামও বলে গেলেন! আমি অবাক। পরিচালক জানিয়েছেন, উনি হিন্দির পাশাপাশি বাংলা ছবিও দেখেন। এখন বলিউড ছবি এবং সিরিজে আঞ্চলিক অভিনেতাদের ভাল কদর। তাই তিনিও সব ভাষার ছবি দেখেন। আমি বাড়তি নম্বর পেয়েছি অবশ্যই বলিউডে কাজ করার দৌলতে।

কাজ নিয়ে অকপট পাওলি।

প্রশ্ন: সিরিজের ট্রেলার বলছে ‘শবনম’ আবারও সাহসী চরিত্র?

পাওলি: কিচ্ছু বলব না। বলা বারণ। তা ছাড়া, বলে দিলে কৌতূহলটাই চলে যাবে। হাতেগোনা আর কয়েকটি দিন। তার পরেই তো সবাই দেখতে পাবেন। একটু না হয় আগ্রহ থাক আমায় নিয়ে। এটুকু বলতে পারি, ভিকি-হত্যা মামলায় আমিও এক সন্দেহভাজন অপরাধী। আমিই কি খুন করেছি? চরিত্রের খাতিরে কতটা সাহসী চরিত্র বা দৃশ্যে অভিনয় করেছি? সেটা পর্দায় দেখতে হবে।


প্রশ্ন: ‘শবনম’ হওয়ার কারণ শুধুই তিগমাংশু ?

পাওলি: অনেক কারণ আছে। প্রথম এবং প্রধান কারণ অবশ্যই তিগমাংশু। তখন আমি মুম্বইয়ে। যে দিন ‘সাহেব বিবি ঔর গ্যাংস্টার’ মুক্তি পেয়েছে সে দিনই প্রেক্ষাগৃহে বসে দেখেছি! প্রতিটা দৃশ্য টানটান। আমি নিজেও রহস্যধর্মী গল্প দেখতে ভালবাসি। সিরিজে আপাতত এই বিষয়টিই জনপ্রিয়। ফলে, তিগমাংশুর পরিচালনায় রহস্যধর্মী সিরিজে ডাক পেতেই আমি রাজি। তার পর জানলাম প্রথম সারির এত জন তারকা অভিনেতা রয়েছেন। সেই তালিকায় আমার নামও উঠতে চলেছে।


প্রশ্ন: এত জন তারকার ভিড়ে হারিয়ে যাবেন না তো?

পাওলি: সেটা সিরিজ বলবে। আমার অভিনয় বলবে। হ্যাঁ, শুরুতে নাম শোনার পরে একটু দুশ্চিন্তা হয়েছিল। মনে হচ্ছিল পারব তো? কাজ করতে করতে দেখলাম, বিষয়টি সহজ হয়ে গেল। ওঁরাও আমার সঙ্গে মিশে গেলেন। আশা করি সেই ছাপ পর্দায়, অভিনয়ে দর্শক বুঝতে পারবেন।

প্রশ্ন: তিগমাংশুর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা?

পাওলি: খুব ভাল। বলিউড একটু বেশি দিন সময় নিয়ে কাজ করে। তবে ভীষণ সুশৃঙ্খল, পেশাদার। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে শ্যুট হয়েছে সিরিজের। দেশে তখন অতিমারি প্রবল। তার মধ্যেই একাধিক জায়গায় আমরা শ্যুট করেছি। আমিই করেছি দিল্লি, মুম্বই, লখনৌতে। আমাদের শরীরের কথা ভেবে হোটেল থেকে বাবলস তৈরি করে শ্যুটিং স্থানে নিয়ে যাওয়া হত। আবার নিয়ে আসা হত।


প্রশ্ন: অজয় সেটে আসতেন? প্রযোজক না অভিনেতা, কোন অজয়কে এগিয়ে রাখবেন?

পাওলি: অজয় সেটে আসতেন না। কিন্তু সব কিছুতে ওঁর কড়া নজর থাকত। কাজ করে বুঝলাম, অভিনেতা আর প্রযোজনা দুটোতেই নিখুঁত তিনি। সামনে না এসেও সব সামলাচ্ছেন অবলীলায়। নিজে অভিনেতা তো, তাই অভিনেতাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য খুব ভাল বোঝেন। কাজ শেষ হলেই নির্দিষ্ট সময়ে পারিশ্রমিক মিটিয়ে দেন। নিষ্ঠা, নিয়মানুবর্তিতার জন্যই অজয় অনেক উঁচু স্তরে উঠতে পেরেছেন।


প্রশ্ন: এখনও বলি অভিনেতা টলিউডে মানেই বাড়তি মনোযোগ, বলিউডে টলি তারকারা সেই সম্মান পান?

পাওলি: আমার প্রথম ছবি ‘হেট স্টোরি’। তখন থেকেই আমি যেন বলিউডের রাজকুমারী! এতটাই আরাম, সুযোগ-সুবিধে বলিউড থেকে পেয়ে আসছি। যোগ্যতা অনুযায়ী পারিশ্রমিক। জাতীয় স্তরে কাজের মূল্যায়ন। অভিনয় চোখে পড়ে গেলে একের পর এক সুযোগ। আলাদা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রূপসজ্জার গাড়ি। আরামে থাকার ব্যবস্থা। যাতায়াতের দায়িত্ব পর্যন্ত বলিউড নেয়। আর কী করবে?

প্রশ্ন: নতুন সিরিজের মতো বাস্তবেও কি নায়িকারা এ ভাবেই জেনেশুনে বা না জেনেই ‘ব্যবহৃত’ হন?

পাওলি: কল্পনা আর বাস্তবকে গুলিয়ে ফেললে চলবে! ওটা একটি সিরিজ। সেখানে গল্প বুনতে গিয়ে এ রকম দেখানো হয়েছে। বাস্তবে এ রকম হলে মেয়েরা কেউ অভিনয়ে আসতেন? পুরোটাই গল্পকথা।


প্রশ্ন: কল্পনাতেও নাকি বাস্তবের ছায়া পড়ে! আপনি টলি বা বলিউডে এমন ঘটনা ঘটতে দেখেননি?

পাওলি: সত্যিই আমি এমন কিছু দেখিনি। আমার সঙ্গেও ঘটেনি এমন কিছু। নিজের পরিশ্রমে আমি জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম। আমার অভিনয় পরিচালক, দর্শকদের ভাল লেগেছে বলেই নায়িকা। এর বেশি কিচ্ছু নয়। অযথা বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করবেন না।


প্রশ্ন: বাংলায় আর কাজ করবেন না? কলকাতার বেশির ভাগ অভিনেতা বলিউডে, বাংলা ছবির কী হবে?

পাওলি: কে বলেছে করব না! আমার শেষ কাজ প্রতীম ডি গুপ্তার ‘লাভ আজ কাল পরশু’। ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পেয়েছিল। তার পরেই অতিমারি দেখা দেয়। দেশে লকডাউন। বন্ধ শ্যুটিং। এখন যে সব ছবি মুক্তি পাচ্ছে সেগুলো কিন্তু পুরনো। আমার কোনও ছবি আটকে নেই। এটা আমার চোখে ইতিবাচক। ব্যতিক্রম পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভিযান’। ছবিতে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। সেটা পরম যখন মনে করবেন তখন মুক্তি পাবে। নতুন বছর সবে পড়ল। এ বার ধীরে ধীরে সবার সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হবে। যে ইন্ডাস্ট্রি আমায় তুলে ধরল তাকে ভুলে যাব! হয় নাকি? তবে অতিমারি কাটলে বাংলারও উচিত জাতীয় বা আন্তর্জাতিক মানের ছবি তৈরি করা।


প্রশ্ন: ভরা শীতে ছবি দিয়ে উষ্ণতা ছড়ালেন, সামনেই হিন্দি সিরিজ-মুক্তি, অর্জুন কী বলছেন?

পাওলি: খুব খুশি। ও আমার জীবন উপভোগ করে। আমায় নিয়ে চর্চায় একটু রাগ করে না। উল্টে মজা পায়। আসলে, অর্জুন কখনওই ভোলে না, ওর স্ত্রী অভিনেত্রী। এই চর্চা, গুঞ্জন আমার পেশার অঙ্গ।


প্রশ্ন: কবে ‘মা’ হবেন পাওলি?

পাওলি: (একটু থমকে) এখনও ভাবিনি। আপাতত শুধুই কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকব। আমার প্রচণ্ড খিদে। আরও জাতীয়, আন্তর্জাতিক স্তরে কাজ করতে চাই। তার পরে সময় এলেই মাতৃত্বও আসবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement