জনতার কাঠগড়ায় জি বাংলার রিয়্যালিটি শো ‘দিদি নং ১’। রবিবারে সম্প্রচারিত একটি বিশেষ পর্ব নিয়ে তুমুল চর্চা চলছে ফেসবুকে। অনুষ্ঠানে সুন্দরবনের এক পরিবারকে দেখানো হয়েছে। সেখানে অংশগ্রহণকারী জ্যোৎস্না শী জানিয়েছেন, তিনি স্বামীকে বাঁচাতে নিজে বাঘের সঙ্গে লড়েছিলেন। এবং বাঘের আক্রমণে তাঁর স্বামীর একটি হাত অকেজো হয়ে গিয়েছে। জামার ভিতর দিয়ে আক্রান্তের সেই হাত ঝুলতেও দেখা গিয়েছে।
এই নিয়ে মতবিরোধ শুরু। ফেসবুকে একাধিক মিম তৈরি করে দাবি করা হয়েছে, পুরোটাই নাকি ভুয়ো। পাশাপাশি, আক্রান্তের হাতের ছবি লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে সেই নিয়েও কুমন্তব্য করা হচ্ছে। ‘দিদি নম্বর ১’ নিষিদ্ধ করে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন দর্শকেরা।
টানা দু’দিন কটাক্ষের শিকার ওই হতদরিদ্র পরিবারের পাশে বুধবার অবশেষে দাঁড়িয়েছেন তাঁদেরই পূর্ব পরিচিত পদ্মাবতী মণ্ডল। ফেসবুকে তাঁর দাবি, ‘দিদি নং ১’-এ আসার পর ওঁদের নিয়ে কি জঘন্য ছবি বানানো হচ্ছে! দাগিয়ে দেখানো হচ্ছে জামার ভিতর ঝুলে থাকা হাত! ভীষণ খারাপ লাগছে এটা জেনে, মানুষ না জেনেই বিচার করছে সব কিছুর’।
তিনি জানেন প্রকৃত সত্য। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পরিবার সুন্দরবনের বাসিন্দা। প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, তিনি ওই অঞ্চলের রুবি শেখকে প্রতি মাসে এই পরিবারকে রেশন দিয়ে আসতে দেখেছেন। বাঘের আক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তি পঙ্গু হয়ে পড়ায় পরিবারটি আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। দম্পতির একটি মেয়ে আছে। একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ভাল ছবি আঁকে। একটি ছোট নাতনিও আছে। রুবি শেখ ওই ছোট মেয়েটিকে নাচ শেখানোরও দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি নিজের চোখে সবটা দেখেছেন। তাই জানেন, ঘটনা ভুয়ো নয়।
এর পরেই যাঁরা অকারণে কুমন্তব্য করছেন তাঁদের কাছে প্রতিবাদীর অনুরোধ, ‘যাঁরা দাদাটকে নিয়ে কটাক্ষ করছেন, দয়া করে তাঁরা দাদাভাইয়ের সারা বছরের দায়িত্ব নিন। কাউকে নিয়ে কটাক্ষ করা সহজ, কিন্তু তাঁর পরিস্থিতি অনুযায়ী মোকাবিলা করা ততটাও সহজ নয়!’