অঙ্কিতা লোখান্ডে, সুশান্ত সিংহ রাজপুত এবং রিয়া চক্রবর্তী।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর দু’বছর পার। ২০২০-র ১৪ জুন আচমকাই তিনি না ফেরার দেশে। নিজের ঘরেই ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁর দেহ। হত্যা না আত্মহত্যা, কোন কারণ কেড়ে নিল বলিউডের এই প্রতিভাকে? সবটাই এখনও ধোঁয়াশা। অনুরাগীরা আজও নায়কের মৃত্যুর বিচার চেয়ে নেটমাধ্যমে দরবার করেন। সুশান্তের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর ঘনিষ্ঠদের অবস্থান কী? এখনও কি তাঁরা প্রয়াত তারকার স্মৃতি নিয়েই বাঁচছেন? নাকি তাঁরা তাঁদের মতো করে শোক সামলিয়ে ফিরতে পেরেছেন নিজেদের জীবনের ছন্দে?
অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে তদন্তের সময় চর্চায় ছিল কয়েকটি নাম। তাঁরা ‘প্রাক্তন’ অঙ্কিতা লোখান্ডে, প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী, রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী, বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানি, বন্ধু আইনজীবী স্যামুয়েল হাওকিপ এবং তিন বোন শ্বেতা, প্রিয়ঙ্কা, মিতু।
অঙ্কিতা লোখান্ডে
সুশান্তের ‘প্রাক্তন’ এখন ঘোরতর সংসারী। বিয়ে করেছেন প্রেমিক ভিকি জৈনকে। অভিনয়ের পাশাপাশি চুটিয়ে সংসারও করছেন। সম্প্রতি নতুন বাড়ি কিনেছেন দম্পতি। সেখানে নিজের হাতে হালুয়া রেঁধেছেন অঙ্কিতা। হাসিখুশি অঙ্কিতাকে দেখে অনেকেরই সুশান্তকে মনে পড়ে। কিন্তু প্রয়াত প্রাক্তনকে কি তাঁর আদৌ মনে পড়ে? সম্প্রতি তারও জবাব দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, সুশান্তের প্রয়াণে তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সেই বিপর্যয় থেকে তাঁকে আগলে বার করে এনেছেন ভিকি।
রিয়া চক্রবর্তী
সুশান্তের প্রেমিকা হিসেবে পরিচিত রিয়া প্রায় এক মাস জেলে কাটিয়েছেন। তার পর জামিন পান। একেবারে প্রথমে নিজেকে পারিবারিক ঘোরাটোপে বন্দি করে নিয়েছিলেন। কারণ, সুশান্তের মৃত্যু তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। অনেক লড়াইয়ের পরে সেই খারাপ সময় পেরিয়ে এসেছেন রিয়া। ক্রমশ আবার নিজেকে মেলে ধরছেন। একাধিক পুরস্কার অনুষ্ঠানেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। রিয়া ফারহান আখতার-শিবানী দণ্ডেকরের বিয়ের অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন। মাঝে ‘চেহরা’ ছবি-মুক্তির সময় তাঁকে ঘিরে ফের বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এই ছবিতে অমিতাভ বচ্চন, ইমরান হাসমির সঙ্গে তিনিও অভিনয় করেছিলেন। অতি সম্প্রতি, আদালতে তিনি এক পুরস্কার অনুষ্ঠানের জন্য আবু ধাবিতে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। ‘লুকআউট’ নোটিসের কারণে সেই অনুমতি তিনি পাননি।
শৌভিক চক্রবর্তী
রিয়ার ভাইকেও সিবিআই গ্রেফতার করেছিল। জোরালো তথ্য-প্রমাণের অভাবে দিদির সঙ্গে জামিন পান তিনিও। এখনও তাঁর ইনস্টাগ্রাম ডিপিতে সুশান্তের ছবি জ্বলজ্বল করছে। শৌভিক অভিনেতার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীকে তাঁকে স্মরণ করে পোস্টটি দিয়েছিলেন।
সিদ্ধার্থ পিঠানি
সুশান্তের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনিই প্রথমে অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তদন্ত চলাকালীন মাদক-মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল এনসিবি। চলতি বছরের মে পর্যন্ত তাঁর জামিন হয়নি। তার মধ্যেই গত বছর তিনিও সাত পাকে বাঁধা পড়েন।
স্যামুয়েল হাওকিপ
পেশায় আইনজীবী স্যামুয়েল মৃত্যুর আগে পর্যন্ত অভিনেতার সঙ্গেই এক বাড়িতে থাকতেন। সিদ্ধার্থ পিঠানির মতো তিনিও একাধিক সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন। রিয়া এবং তাঁর ভাইকে নিয়ে নানা ঘটনার কথা উল্লেখও করেছিলেন। সিদ্ধার্থের মতোই তিনিও গত বছর বিয়ে সেরেছেন।
শ্বেতা, প্রিয়ঙ্কা, মিতু
সুশান্তের তিন দিদি। ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে নেটমাধ্যমে সবচেয়ে সরব শ্বেতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা শ্বেতাই প্রথম ‘জাস্টিস ফর সুশান্ত’ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। জাল প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে সুশান্তের জন্য ওষুধ আনতেন তাঁর দুই দিদি— এই অভিযোগ জানিয়ে প্রিয়ঙ্কা এবং মিতুর বিরুদ্ধে রিয়া প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যদিও পরে পৃথক মামলায় মিতুর উপর থেকে সমস্ত অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। তিন দিদিরই দাবি, তাঁরা শেষ দিন পর্যন্ত ভাইয়ের জন্য লড়বেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।